আগুন নিভানোর পদ্ধতি: How to put out any kind of fire: কোন আগুন কিভাবে নিভাবেন এই নিয়ে আজকের ইনফো। আগুন কত ধরণের হতে পারে জানেন কি? আগুনতো আগুনই এর আবার ধরণ থাকে নাকি? না আগুন বিভিন্নভাবে সংঘটিত হতে পারে। যেমন- গ্যাসের আগুন, বিদ্যুতের আগুন, তেলের আগুন বা কাঠ কয়লার আগুন ইত্যাদি।
অগ্নিকান্ড কিভাবে ঘটে তার প্রভাব বা ধরণ অনুযায়ী দমকল বাহিনী আগুনের বিভিন্ন ধরণকে পাঁচটি ভাগে ভাগ করছে। তার মানে যে কোন অগ্নিকান্ড এই পাঁচটি ভাগের মধ্যেই ঘটে থাকে। এই ভাগ অনুযায়ী দমকল বাহীনি আগুন নেভানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে।
আপনাকে আগুনের ধরণ অনুযায়ী নেভানোর পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। যেমন- ইলেকট্রিক শর্টসার্কিটের আগুন নিভানোর জন্য যে পদ্ধতি আবার কাঠ-কয়লার আগুন নেভাতে অন্য পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।
কাঠ-কয়লার আগুন পানি দিয়ে সহজেই নিভানো যায় আবার ইলেকট্রিক আগুনে পানি দিলে তা আরো ভয়ংকর হতে পারে। তাই আগুন নিভাতে সঠিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। আজকের এই ইনফোটিতে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করবো।
আগুনের ধরণ কি কি?
ফায়ার সার্ভিস বা দমকল বাহিনী আগুনের বিভিন্ন ধরণকে ৫ ভাগে ভাগ করেছে। A,B,C,D,E ক্যাটাগরিতে আগুনের বিভিন্ন ধরণকে ভাগ করে রেখেছে। আগুনের ধরণ অনুযায়ী আগুন নেভানোর পদ্ধতি ব্যবহার করলে সহজেই আগুন নেভানো যায়।
বিভিন্ন কারণে আগ্নিকান্ড ঘটতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের মতে ৫ ধরণের অগ্নিকান্ড ঘটতে পারে। যেমন-
A - পুড়ে ছাই বা কয়লা হয়ে যায় এমন আগুন
B - তেলের আগুন
C - গ্যাসের আগুন
D - ধাতব পদার্থের আগুন
E - ইলেকট্রিক আগুন
কিভাবে নিভাবেন অগ্নিকান্ডের আগুন
আপনার আশে পাশ অগ্নিকান্ড ঘটলে প্রথমেই বুঝে নিন অগ্নিকান্ডের ধরণ এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্তা গ্রহন করুন।
আপনি যদি খুবই সাধারণ লোক হয়ে থাকেন তাহলে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিন। ফায়ার সার্ভিস জরুরী সেবা ৯৯৯ কিংবা ৩৩৩ নাম্বারে কল করে অগ্নিকান্ডের কথা জানাতে পারেন।
আগুন জ্বলতে সাধারণত তিনটি বস্তু লাগে। বস্তু তিনটি হচ্ছে - দাহ্য-বস্তু বা জ্বালানী, অক্সিজেন ও তাপ।
অগ্নিকান্ড থেকে এই তিনটি বস্তুর যে কোন একটি সরিয়ে ফেলতে পারলে আগুন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে।
আগুনের ধরণ অনুযায়ী আগুন নেভানোর কৌশল নিতে হবে।
পুড়ে ছাই হয় বা কয়লা হয় এমন আগুন নেভানোর পদ্ধতি
এই ধরণের আগুনের সুত্রাপাত ঘটে সাধারণ চুলা থেকে কিংবা কয়েলের আগুন অথবা অন্য কোন খরকুটার আগুন থেকে।
সাধারণত বাংলাদেশে কাঠ, কয়লা বা খরকুটা দিয়ে যে সমস্ত চুলা জ্বালানো হয় সেখান থেকে এই ধরণের আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে। অর্থাৎ এমন অগ্নিকান্ড ঘটে কাঠ-কয়লার আগুন থেকে।
এ ধরণের অগ্নিকান্ড নেভানোর জন্য পানি, শুকনো বালি, ভেজা বস্তা ব্যবহার করতে হবে।
পানি প্রচুর পরিমানে দিলে সহজেই এই অগ্নিকান্ড নিয়ন্ত্রণ করা যায়। শুকনো বালি ও ভেজা বস্তাও দ্রুত কাজ করে।
তেলের আগুন নেভানোর পদ্ধতি
তেলের মধ্যে যদি অগ্নিকান্ড ঘটে তাহলে ফোম ব্যবহার করে এ আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
আপনাকে মনে রাখতে হবে সব আগুন পানি দিয়ে নেভানো যায় না।
ছবি: বিবিসির
দমকল বাহিনীর মতে ক্যামিক্যাল মিশ্রিত ফোম অনেক বেশি কার্যকর। তবে এটাতে বেশ সময়ের প্রয়োজন পড়ে। অগ্নিকান্ড নেভাতে দ্রুত নেভাতে না পারলে ক্ষয়-ক্ষতির পনিমান অনেক বেশি হয়ে থাকে।
ক্যামিক্যাল মিশ্রিত ফোম ম্যানেজ করতে বেশি সময় লাগলে বিকল্প পদ্ধতি করা যেতে পারে। ভেজা বস্তা কিংবা কাদা দিয়ে এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যায়।
গ্যাস থেকে অগ্নিকান্ড ঘটলে তা নেভানোর পদ্ধতি
বাসা বাড়িতে গ্যাস লাইন থেকে অগ্নিকান্ড ঘটলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে প্রথমেই গ্যাস লাইন বন্ধ করার চেষ্ঠা করতে হবে।
গ্যাসের লাইন বন্ধ করতে না পারলে আগুন ভংকর আকার ধারণ করতে পারে। এছাড়া আগুনের সূচনা লগ্নে হলে বস্তা বা পানি দিয়ে বারি দিতে হবে।
বাতাস বন্ধ করতে পারলে আগুন নিয়ন্ত্রণ হয়ে যাবে।
ধাতব পদার্থের আগুন নেভানোর পদ্ধতি
পানি দিয়ে আগুন নেভানো যায় । তবে ধাতব পদার্থের আগুন নেভাতে পানি দিতে নিষেধ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ধাতব পদার্থের আগুন নেভাতে পানি ব্যবহার করা যাবে না।
শুকনা বালি দিয়ে ধাতব পদার্থের আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। শুকনা বালি দিয়ে ধাতব পদার্থ থেকে সহজেই তাপ সরানো যায়।
আরো জানুন
বৈদ্যুতিক অগ্নিকান্ড নেভানোর পদ্ধতি
বিশেষজ্ঞরা এই অগ্নিকান্ডে পানি দিতে নিষেধ করেছেন। কেননা যিনি পানি দিবেন তিনিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হবেন।
বৈদ্যুতিক অগ্নিকান্ড ঘটলে প্রথমেই লাইন বন্ধ করতে হবে। বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করতে না পারলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে।
এ অগ্নিকান্ড নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এবিসিই ড্রাই পাউটার ব্যবহার করা হয়। কেননা এ আগুন নেভানোর জন্য কার্বন-ডাই অক্সাইড প্রয়োজন হয়।
কারোমতে পানি দেওয়া যাবে যদি সঠিকভাবে প্রয়োগ করা যায়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার সুয়োগ না থাকলে পানি দেয়া যাবে। তবে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা না গেলে পানি দেওয়া যাবে না।
রাসায়নিক থেকে অগ্নিকান্ড নেভানোর পদ্ধতি
বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাসায়নিক অগ্নিকান্ড খুব সতর্কতার সাথে নেভাতে হবে।
দমকাল বাহিনী বলেছে, রাসায়নিক পদার্থের মধ্যে অনেক উপাদান থাকে। এ ক্ষেত্রে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রাথমিকভাবে এ অগ্নিকান্ড কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্যাস এবং কুয়াশা আকারে পানি ছিটিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
রাসায়নিক আগুন নেভানোর জন্য প্রশিক্ষনপ্রাপ্তদের সাহায্য নিতে হবে।
যে কোন অগ্নিকান্ডের ঘটনায় সবার আগে ফায়ার সার্ভিস বাহিনীকে খবর দেয়া পরামর্শ সংশ্লিষ্টদের।
সুত্রঃ বিবিসি
Home BD info এর অন্যান্য ইনফো দেখুন