উন্নত জাতের গাভী পালন কিংবা দুদ্ধজাত খামার দিবেন কিভাবে? প্রশিক্ষণ পিডিএফ বই

0

পরিকল্পিত গাভী পালনে রয়েছে অধিক লাভবান হওয়ার সুযোগ। অল্প মাঝারি কিংবা বেশি যে কোন ধরণের পুঁজি দিয়ে সুষ্ঠভাবে গাভী পালন করলে লাভবান হতে বেশি সময় লাগে না। গরুর বাসস্থান যথাযথভাবে এবং মোটামুটি খোলামেলো জায়গায় দিতে হবে। এছাড়াও গবাদি পশুর রোগ দেখা দিলে প্রাণিচিকিৎসক বা নিকটস্থ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে। আজকের ইনফোতে “উন্নত জাতের গাভী পালন কিংবা দুদ্ধজাত খামার দিবেন কিভাবে? এবং এই বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল একটি পিডিএফ বই শেয়ার করা হলো।

     

উন্নত জাতের গাভী পালন কিংবা দুদ্ধজাত খামার দিবেন কিভাবে? প্রশিক্ষণ পিডিএফ বই

                                                     

গরুর বসত ঘরে মেঝে ঢালু ও ড্রেনের ব্যবস্থা থাকতে হবে যাতে করে চোনা ও পানি গড়িয়ে যেতে পারে। গরুর খাবার ও পানির পাত্রগুলো প্রতিদিন পরিস্কার করা এবং গরুকে নিয়মিত গোসল করাতে হবে। গোবর ও চোনা নির্দিষ্ট স্থানে জমা করতে হবে যা মূল্যবান সার হিসাবে জমিতে প্রয়োগ করা যাবে।

 

উন্নত জাতের গাভী কোথায় পাবেন?

উন্নত জাতের গাভী বর্তমানে প্রায় সারা দেশেই পাওয়া যায়। বাড়িতে গৃহিতপালিত পশু হিসাবে দেশি উন্নত জাত কিংবা সংকর জাতের গাভী নির্বাচন করা প্রয়োজন। উন্নত জাতের গাভী প্রাপ্তি স্থানগুলো হচ্ছে- টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, যশোর, মানিকগঞ্জ, খুলনা, কুষ্টিয়া, সৈয়দপুর, চিরিরবন্দর, ঠাকুরগাঁও ইত্যাদি।

এছাড়াও রংপুর সদর, বগুড়া সদর, রাজশাহী সদর, ঢাকা সদর, কুমিল্লা সদর, নারায়ণগঞ্জ সদর, চট্রগ্রাম সদর, সিলেট সদর, বাঘাবাড়ীঘাট মিল্কভিটা এলাকা, সাভার এলাকার মশুরী খোলা, ভার্কুতা, কেরারীগঞ্জ উপজেলার আটি এলাকা উল্লেখযোগ্য।

 

 গাভীকে দৈনিক সুষম খাদ্য খাওয়ার নিয়ম কি?

 প্রতিটি গভীকে নিম্নহারে খাদ্য খাওয়াতে হবে। চালের গুঁড়া- ২৫০ গ্রাম, গমের ভুসি- ৩৫০ গ্রাম, ডালের ভুসি-২৫০ গ্রাম, চিটাগুড়া-২০০ গ্রাম, লবণ/খনিজ মিশ্রণ ভিটামিন সহ- ৫০ গ্রাম।

এছাড়াও প্রতিটি গাভীকে দৈনিক তিন কেজি খর কিংবা ৯-১২ কেজি কাঁচা ঘাস ও প্রচুর পরিমানে ঠান্ডা বিশুদ্ধ পানি খাওয়াতে হবে।

 

বাছুরের খাবারের তালিকা ও পরিচর্যা

চালের গুড়া- ৩০০ গ্রাম, গমের ভুসি-৩০০ গ্রাম, খৈল- ২৫০ গ্রাম, চিটাগুড়া-১৫০ গ্রাম এবং ভিটামিন ও লবণ-৫০ গ্রাম। পর্যাপ্ত পরিমানে কাঁচা ঘাস, খড়, ও পরিস্কার ঠান্ডা পানি খাওয়াতে হবে।

বাছুরের বয়স ছয় মাস হলে সংক্রামক টিকা দিতে হবে। এছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কৃর্মির ওষুধ খাওয়াতে হবে।

 

গাভী পালনে প্রাথমিকভাবে কি প্রয়োজন?

 যে কোন কাজে সবার আগে থাকা লগে প্রস্ততি ও পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনার উপর নির্ভর করে যে কোন কাজের সফলতা ও ব্যর্থতা।

আপনি যদি ডেইরি ফার্ম গড়ে তুলতে চান তাহলে প্রয়োজন হবে আর্থিক সঙ্গতি, অভিজ্ঞতা ও গরুর নিরাপদ আশ্রয়। প্রথম অবস্থায় বিশাল ফার্ম তৈরিতে হাত না দিয়ে ছোট পরিসরে শুরু করা ভাল। প্রথমে ৫ থেকে ৬ টি গরু দিয়ে শুরু করে আস্তে আস্তে ফার্মকে সম্প্রসারণ করাই উত্তম।

গরুর পরিচর্যার জন্য দক্ষ লোক নিয়োগ দিতে হবে। লোক নিয়োগ দেওয়ার আগে জেনে নিতে হবে তার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে কিনা। দক্ষতা না থাকলে প্রশিক্ষণ নিতে হবে।

 

বাচাই প্রক্রিয়া কি?

কোথায় ফার্ম গড়ে তুলবেন কিংবা ‍গাভী প্রতিপালনে খরচের সাশ্রয় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে ভাল হয় সেদিকে লক্ষ রেখেই ফার্ম গড়ে তুলতে হবে। সাধারণত মফস্বল এলাকায় গরুর ফার্ম দেওয়া অনেকটা শ্রেয়। এজন্য প্রয়োজন উন্নত জাত বাচাই। উন্নত জাতের গরু না হলে সারা বছরই রোগবালাই লেগে থাকে।

ভাল জাতের গরুর বাচাই করার সাথে সাথে ফার্মে পর্যাপ্ত ঘাস, খৈল বিচালির ব্যবস্থা রাখতে হবে। এবং ফার্ম গড়ে তোলার পরপরই দুধ বিক্রির জন্য প্রচারণা চালাতে হবে।

 

 ফার্মের স্থান নির্বাচন:

ফার্ম এমন জায়গায় গড়ে তুলতে হবে যেখানে যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল। দুধ বিক্রি করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে এমন এলাকার আশেপাশেই ডেইরি ফার্ম গড়ে তোলা প্রয়োজন।

চারপাশে উঁচু দেওয়াল, স্বাস্থ্যকর আবাসন, পর্যাপ্ত আলো-বাতাস যেন পায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। গরুর বিশ্রাম এবং হাটা চলার জয়গা থাকতে হবে।

ফার্মে আশে পাশে গরুর ওষুধের দোকান, কাঁচা ঘাস এবং অন্যান্য খাবার থাকা ভাল।

 

গরুর ‍খাবার সরবরাহ:

ডেইরি ফার্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গরুত্ব দিতে হবে গরুর খাবারের প্রতি। কেননা পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন খাবার না পেলে সঠিক পরিমানে দুধ পাওয়া যাবে না। তাই খাবারের প্রতি বিষেশ যত্ন নিতে হবে। ধানে কুঁড়া, গমের ভূসি, ছোলা, খেসারির খোসা, লবণ, খৈল, নারিকেল ছোবলা, ঘাস- বিচালির পর্যাপ্ত সংগ্রহে রাখতে হবে।

অনেক সময় দেখা যায় গরুকে পচা ও বাসি খাবার সরবরাহ করা হয়। যা কখনই ঠিক নয়। এতে গরু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

গরুর খাদ্য সরবরাহ করার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, খাবার যেন পরিস্কার ও পুষ্টিমান সম্পন্ন হয়। এজন্য পচা বা অনেক দিন আগে থেকে রেখে দেওয়া খাবার সরবরাহ করা ঠিক হবে না।

গাভীর গর্ভধারণ ও গর্ভকালীন সময়ে আলাদাভাবে যত্ন নিতে হবে। এ সময় স্থানীয় প্রাণিচিকিৎসকের সাথে সর্বদা যোগযোগ রাখতে হবে। অর্থাৎ চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা আগে থেকেই ঠিক করতে হবে।

 

ফার্মে আয়-ব্যয় হিসাব

ডেইরি ফার্ম সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে লভের হিসাব গুণতে হয়। সাথে সাথে কিংবা দ্রুত লাভের আশা করা ভুল। ধীরে সুস্থে এখান থেকে ভাল লাভের আশা করা যায়।

গরুর সংখ্যা কম হলে সাধারণত ব্যয়ের খরচ বেরে যায় আবার গরুর সংখ্যা বেশি হলে ব্যয় অনেক কমে যাবে। গড়ে প্রতিটি গরু ক্রয় বাবদ ৪০-৬০ হাজার খচর হতে পারে।

শহুরের বিভিন্ন মিষ্টির দোকান ও কনফেকশনারির লোকজন সরাসরি ফার্ম থেকে দুধ সংগ্রহ করে থাকে। প্রতিটি গাভী থেকে প্রতি মাসে গড়ে ৪-৫ হাজার টাকার দুধ বিক্রি করা সম্ভব। পারিবারিকভাবে গাভী পালন করলে খরচ বাদে এ আয় পরিবারের জন্য অনেক।

 

পরিচর্যা কিভাবে করবেন?

আপনি কি ধরনের ফার্ম দিতে চান তা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কাছে পরামর্শ নিলে ভাল হয়। উন্নত জাতের গাভী ডেইরি ফার্মের জন্য সহায়ক। এর জন্য নিউজিল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়ান জাতের গাভী বেছে নেওয়া যেতে পারে।

গরুর বাসস্থান অবশ্যেই প্রতিদিন পরিস্কার করতে হবে। প্রতিটি গরুর জন্য আলাদা মশারি, ফ্যান এবং ময়লা পরিস্কার করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এছাড়াও আলোর জন্য লাইটিং ব্যবস্থা এবং পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারেও নজর দিতে হবে।

 

গাভীর স্বাস্থ্য পরিচর্যা কিভাবে নিবেন?

যেহেতু আপনি গাভী থেকে দুধ দহন করে আয় করবেন। তাই গাভীর স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। রোগ বালাই সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। রোগ নির্ণয় সম্পর্কে যদি আপনার ধারণা না থাকে তাহলে সরকারি ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় সেটি গ্রহণ করতে পারেন।

 

আরো জানুন>> নিজে নিজে গরুর রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা করবেন কিভাবে?

 

বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে সাহায্য ছাড়াও ব্যাংক থেকে ঋণ সুবিধা পেতে পারেন। যুব উন্নয়ন, কৃষি ব্যাংক, গ্রামীণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকেও প্রশিক্ষণ প্রাপ্তরা বিনা জামানতে মোটা অংকের ঋণ গ্রহণ করতে পারে।

বেকার শিক্ষিত তরুণদের জন্য এটি একটি চমৎকার পেশা হতে পারে। নিজে নিজে যদি নিজের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সচেষ্ট হই এবং এরক ডেইরি ফার্মও হতে পারে কর্মসংস্থানের উত্তম পন্থা।

 

দুধের উৎপাদন কিভাবে বাড়াবেন?

গাভীর দুধ উৎপাদনের পরিমান ও গুণগতমান গাভীর জাতের উপর নির্ভর করে। গাভীর দুধ উৎপাদনের পরিমাণ সাধারণত দুধের উপাদান যেমন- মাখন, আমিষ, খনিজ পদার্থ ইত্যাদি সবই গাভী জাতের ভিন্নতার কারণে কম-বেশি হয়ে থাকে।

বংশগত ক্ষমতার কারণে দেশী গাভীর দুধে মাখনের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে কিন্তু এর দুধ উৎপাদন সাধারণত কম হয়। উন্নত জাত বা বিদেশি বিভিন্ন জাতের গাভীর দুধে মাখনের তারতম্য দেখা যায়। সিন্ধি, শাহিওয়াল, হরিয়ানা জাতের গাভীর দুধে মাখন বা ননীর পরিমাণ অন্যান্য বিদেশি জাতের গাভী যেমন- হলস্টেন, জার্সি, ফ্রিজিয়ান ইত্যাতি জাতের গাভী সিন্ধি, শাহিওয়াল, হরিয়ানা গাভী থেকে বেশি হয়ে থাকে।

 

গাভীর খাদ্য দুধ উৎপাদনে প্রভাব বিস্তার করে

দুধ উৎপাদন ও দুধের গুণগতমান গাভীর খাদ্য প্রভাব বিস্তার করে। অধিক পরিমাণ খাদ্য খাওয়ালে বেশি দুধ পাওয়া যায়। তবে খাদ্য অবশ্যই সুষম হতে হবে।

আপনি যদি গাভীকে সুষম খাদ্য না খাওয়ান তাহলে দুধের উৎপাদন আশঙ্কাজনকভাবে কমে যেতে পারে এবং দুধের গুণগতমানও অনেক কমে যাবে। কেননা খাদ্যে বিদ্যমান উপাদানগুলো ভিন্ন অবস্থায় দুধের মাধ্যমে নিঃসৃত হয়।

খাদ্য দুধের মাখনের পরিমানের উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। অর্থাৎ খাদ্যে দুধের মাখনের উপস্থিতি পরিমাণ কম-বেশি হতে পারে। যে খাদ্যগুলোর কারণে সাধারণ দুধে মাখনের হার কম হয়, তা হচ্ছে-

** মাত্রাতিরিক্ত দানাদার খাদ্য খাওয়ালে

** পিলেট জাতীয় খাদ্য খাওয়ালে

** মিহিভাবে গুড়া করা খাদ্য খাওয়ালে এবং

** অতিরিক্ত রসালো খাদ্য খাওয়ালে

 

দুধের গুণগতমান তথা মাখনের পরিমান কমে গেলে খাদ্য পরিবর্তন করে সুষম খাদ্য খাওয়াতে হবে। দুধের মধ্যে খনিজ পদার্থ ও খাদ্য প্রাণের পরিমাণ গাভীর খাদ্যের মাধ্যমে বাড়ানো যায়।

যদি গাভীকে সুষম খাদ্য না খাওয়ান তাহলে দুধে সামান্য মাত্রায় আমিষ ও শর্করা জাতীয় উপাদান পাওয়া যায় এবং দুধ উৎপাদনও অনেক কমে যায়। এছাড়াও দুধ দোহন, বিশেষকরে দোহন কাল, দোহনের সময়, দুধ দোহন প্রক্রিয়া, বিভিন্ন বাটের প্রভাব ইত্যাদি গাভীর দুধের উৎপাদন পরিমান ও মানকে প্রভাবিত করে।

 

গাভীর দুধ দোহন করার নিয়ম:

সাধারণভাবে গাভীর দুধ উৎপদন পরিমান আস্তে আস্তে বেরে ৫০ দিনের মাথায় সর্বোচ্চ হয়। ওলানে দুধের চাপের উপর দুধের পরিমান ও উৎপাদন নির্ভর করে এবং দুদ্ধদান সময়ের ৯০ দিন পর দুধে মাখন ও আমিষের হার আংশিক বৃদ্ধি পায়।

অল্পসময়ের ব্যবধানে গাভী দোহন করলে দুধে মাখনের পরিমান বেশি পাওয়া যায়। এই কারণে সকালের দোহনকৃত দুধের চেয়ে বিকেলের দুধে মাখন বেশি থাকে। তাই ২৪ ঘন্টায় দুই থেকে তিন বার দুধ দোহন করা প্রয়োজন । এতে দুধ উৎপাদনও বৃদ্ধি পেতে পারে।

 

বাচ্চা প্রসবের দুই মাস আগে গাভীর দুধ দোহন অবশ্যই বন্ধ করে দিতে হবে। ওলানের সামনের বাটে মোট দুধের চল্লিশ শতাংশ এবং পিছনের অংশের বাট থেকে ত্রিশ শতাংশ দুধ পাওয়া যায়। তাই ওলানের বাট অবশ্যই সুস্থ থাকতে হবে। দোহনের সময় বিষেশ সতর্কতার সাথে দোহন করতে হবে। কেননা অবহেলার কারণে কিংবা দুধ দোহন ত্রুটিপূর্ণ হলে দুধ উৎপাদন পরিমান ও গুণগতমান কমে যেতে পারে।

 

গাভীকে পাল দেওয়া বা প্রজনন করার নিয়ম:

গাভীর যদি দীর্ঘ বিরতিতে বাচ্চা প্রসব করে তাহলে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পায়। আর অল্প বিরতিতে বাচ্চা প্রসব করালে দুধ উৎপাদন পরিমাণ কিছুটা হ্রাস পেয়ে থাকে। তাই গাভীকে বাচ্চা প্রসবের ৬০-৯০ দিনের মধ্যে পাল দিতে হবে। কোন ভাবেই ৬০ দিনের আগে প্রজনন করা উচিৎ হবে না। গাভীর শরীরে প্রায় ৫০ ভাগ এবং দুধে প্রায় ৮৭ ভাগ পানি থাকে। তাই প্রচুর পরিমানে গাভীকে পানি পান করালে দুধ উৎপাদন ও দুধে মাখনের পরিমান বৃদ্ধি পায়।

 

গাভীর ওলান পরিচর্যা করবেন কিভাবে?

অধিক দুধ উৎপাদনকারী গাভী সাধারণত অনেক বড় সাইজের হয়ে থাকে এবং এদের দুধের ওলানও বেশ বড় হয়। তাই এসব গাভীকে যত্নসহকারে পরিচর্যা করতে হয়।উঠা বসার সময় শেডের কনক্রিট মেঝেতে ঘষা লেগে ওলানে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে।

এই ক্ষতে গোবর কিংবা চোনা লেগে রোগ জীবাণুর আক্রমণে গাভী অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। ওলানে কোন সমস্যা দেখা দিলে দুধ উৎপাদন কমে যায়। এছাড়া ওলানে যদি ম্যাসটাইসিস রোগ মারাত্বক আকার ধারণ করে তাহলে ওলানের এক বা এবাধিক বাট কেটে ফেলতে হয়। ফলে দুধ উৎপাদন অর্ধেকের নিচে নেমে আসে।

ওলানে আঘাতজনিত সমস্যা এড়াতে মেঝে কনক্রিটের পরিবর্তন বালি দিতে পারেন। এটা অনেক স্বাস্থ্যসম্মত হিসাবে ডেইরি বিজ্ঞানীরা অভিমত দিয়েছেন। বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বালু দিয়ে মেঝে তৈরি করতে হবে।

প্রথমে শেডের মেঝে থেকে প্রায় দেড় মিটার সমপরিমাণ গভীর করে মাটি সরিয়ে ফেলতে হবে। এরপর কমপক্ষে দুইস্তরে বড় বড় টায়ার বসিয়ে টায়ারের উপর পরিস্কার বালু বিছিয়ে দিতে হবে। বালু অবশ্যই কাঁকরমুক্ত, ইটিরে টুকরা, লোহার টুকরা কিংবা অন্য কোন ধারালো বস্তুমুক্ত হতে হবে। এই বালু রোগের সংক্রমণমুক্ত এলাকা থেকে সংগ্রহ করতে হবে।

 

বালুর মেঝে দিলে গাভী উঠে দাড়ানো কিংবা বসার সময় কোনো ধরণের আঘাত পাবে না।ফলে আঘাতজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পাবে। বালুর মেঝের সুবিধাজনক দিক হচ্ছে গাভীর চোনা বালিতে পড়ে ঝুরঝুরে শুকিয়ে যায়।

এই জন্য শুকনা বালি দিতে হবে এবং দিনে কমপক্ষে দুই বার গোবর পরিস্কার করতে হবে। এবং সব বালি সপ্তাহে কমপক্ষে তিনদিন উলটপালট করে দিতে হবে।

উপরের বালু নিচে এবং নিচের বালু উপরে দিলে রোগ জীবাণু বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। ফলে রোগ জীবাণু বাসা বাঁধার সুযোগ থাকবে না। বছরের দুইবার অর্থাৎ প্রতি ছয় মাস পরপর শেডের পুরানো বালি ফেলে দিয়ে নতুন বালু দিতে হবে।

 

গাভী পালন প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল পিডিএফ বই

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রশিক্ষণের একটি পিডিএফ বই এখানে শেয়ার করা হলো। প্রশিক্ষণটির শিরোনাম হলো: গাভী পালন কমন ইন্টারেস্ট গ্রুপ (সিআইজি) খামারী/কৃষক সদস্যদের উন্নত/ আধুনিক প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা ও ব্যবহার (CID Farmers Training on Improved/ Modern Livestock Technology Management and Practice).

Download PDF

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !