ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এটা সবাই জানে তারপর মানুষ এটার প্রতি এত আসক্ত কেন? প্রবাদে আছে মানুষ হচ্ছে অভ্যাসের দাস। আপনি যদি এমন একটি কাজ করেন যা লোক সমাজে বলা লজ্জাকর কিংবা আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর তারপরও নিয়মিত করতেই চলেছেন। অর্থাৎ এই কাজকে আপনি অভ্যাসে পরিণত করে ফেলছেন।
এভাবে যদি আপনি ধূমপান অভ্যসে পরিণত করেন তাহলে তা থেকে মুক্তি পাওয়া আপনার জন্য অনেক কঠিন হয়ে যাবে।কেননা তামাক জাতীয় কিছু পদার্থ আপনার অভ্যাসকে নেশায় পরিণত করবে। আর আপনি যদি নেশাগ্রস্থ হয়ে থাকেন তাহলে তা আপনার শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা নতুন করে বোঝাবার কিছু নেই। তারপরও কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা না বললেই নয়। যা নিচে উল্লেখ করা হলো।
ধূমপানে স্বাস্থ্যঝুঁকিগুলো কি কি?
ধুমপানকারীর
স্বাস্থ্যের ঝুঁকি যতটা না হয়, তারচেয়ে বেশি ক্ষতির আশঙ্কা হয় তার পরিবারের সদস্যদের।
বিশেষ করে শিশু ও মহিলাদের স্বাস্থ্যঝুকি অনেক বেড়ে যায়।
ধূমপান যেসব
স্বাস্থ্যঝুঁকির জন্য দায়ী তা হচ্ছে-
** ফুসফসের
ক্যান্সার
** খাদ্যনালীর
ক্যান্সার
** ওরোফারিঞ্জিলাল
ক্যান্সার
** ক্রনিক
ব্রংকাইটিস
** হার্টের
সমস্যা
** হঠাৎ স্ট্রোক
** চোখের
ছানি পড়া
** অর্টিক
অ্যানিউরিজম ইত্যাদি।
এছাড়াও কিছু
খাবার রয়েছে যা পরুষের যৌন জীবন ধ্বংশ করে ফেলে, তারমেধ্য ধূমপান অন্যতম। যারা ধূমপান
করেন তারা মানসিক প্রশান্তি কখনই উপভোগ করতে পারেন না।
ধূমপানে সামাজিক অবক্ষয়
সামাজিকভাবে যখন কোন ধুমপান কারী চরেফেরা করেন তখন সমাজের ভদ্রলোগগুলো তাদের আড়চোখে দেখে । বিশেষ করে কথা বলার সময় ধুমপান কারীদের মুখ থেকে দুর্গন্ধ তৈরি হয় যা রীতিমত অন্যকে কষ্ট দেয়।
এই কারণে একজন ধুমপানকারী সমাজে অনেক সময় বিব্রতকর পরিবেশে পড়তে পারে কিংবা অপমানিতও হতে পারে। মুখের দুর্গন্ধ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে “মুখের দুর্গন্ধ কিভাবে দূর করেবেন?” ইনফোটি দেখুন।
এক সময় সামাজিক পরিবেশ এমন ছিল যে, যারা ধূমপান করেছে তারা এটাকে মারাত্বক খারাপ কাজ মনে করতো এবং লোক সমাজে খাওয়াতে তাদের লজ্জা হতো কিংবা লজ্জার কারণে লোক সমাজে ধূমপান করতো না। কিন্তু বর্তমান সমাজে ধূমপানকারীর সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় তারা আর এটিকে লজ্জাবোধ করে না।
আপনি যদি
একজন ধূমপানকারীকে জিজ্ঞাসা করেন যে, আপনি কি চান আপনার ছেলে আপনার মত ধূমপান করুক?
তিনি আবলিলায় উত্তর দিবে অবশ্যই না। তাহলে আপনি ধূমপান ছেড়ে দেন না কেন?
প্রায় সবাই
উত্তর দেন আসলে তিনি ধূমপান ছাড়তে আগ্রহী এবং ধূমপান ত্যাগের কৌশল ও অন্যান্য বিষয়গুলো
মেনে চলার চেষ্টা করছেন। কয়েকদিন ধূমপান থেকে দূরে থাকলেও একটা সময় আবার ধূমপানের মায়াজালে
আটকা পড়ে যান।
যখন ধূমপান
করেন তখন পরিবারের অন্য সদস্যদের কিংবা সমাজের অন্যদের ক্ষতি হওয়ার বিষয়টি একেবারেই
ভুলেই যায়, মনে করে থাকে যে ধূমপান সমাজের কোন ক্ষতিকর বিষয়ই না। এবং নিজের জন্য কত বড় বিপদ তা মানতে রাজী হয় না কেহই, যতক্ষণ না বড় কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে যান।
আপনি যদি
সামাজিক অবক্ষয়ের কিংবা নিজের স্বাস্থ্য ঝুকি বিষয়ে সচেতন হতে না পারেন এবং ধূমপান ছাড়তে নারাজ থাকেন কিংবা ভালভাবেই ধূমপানকে মেনে নেন তাহলে একটি কাজ করতে পারেন।
যখনই আপনাকে
ধূমপানের নিশা ধরবে তখনই স্ত্রী, সন্তান সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে নিয়ে ধূমপান
করুন। দেখবেন আপনার মনে কি রকম লজ্জাবোধ তৈরি হয় কিংবা আদৌ লজ্জা লাগে কিনা। যদি না
লাগে তাহলে আপনি খাঁটি মুসলিম হতে পারবেন না ধরে নিতে পারেন। যদি মুসলিম হয়ে থাকেন।
ইসলামে ধূমপানকে
হারাম বা অবৈধ করা হয়েছে। আর যে কোন হারাম কাজ মুসলিম সমাজে অতি ঘৃণিত এবং মুসলমানদের
মনে ঘৃণার উদদ্রেক সৃষ্টি করে। এছাড়াও ভদ্র মানুষগুলো এদেরকে অভিশাপ দিয়ে থাকে ।
ধূমপানের ক্ষতি জেনেও মানুষ আসক্ত হয় কেন?
যে কোন কাজ
মানুষ যখন মনোযোগ সহকারে নিয়মিত করতে যায, তখন সেটি অভ্যাসে পরিণত হয়। আর মানুষের মধ্যে
যে কোন অভ্যাস তৈরি হয়ে গেলে তা সহজেই দূর করা যায় না। এটা হতে পারে খারাপ অভ্যাস কিংবা
ভাল অভ্যাস।
এছাড়া তামাক
জাতীয় খাবারে নেশা উদ্রেক উপাদান রয়েছে। কয়েক দিন খেলেই তাকে ধূমপানের নেশায় আক্রান্ত
করে ফেলে।
শুরুরদিকে
নতুন অভিজ্ঞতা নেওয়ার জন্য অনেকে ধূমপান করে নেশায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। আবার কেউ কেউ
সঙ্গদোষে ধূমপায়ী হয়ে যান।
আমার একজন
রুমমেড অনেক চেষ্টা করেও ধূমপান ছাড়তে পারছেন না আবার রুমের ভিতর ধূমপানও করতে পারেন
না। কারণ তিন জনের মধ্যে শুধু একজন ধূমপান করে। ফলে সে টয়লেটে গিয়ে ধূমপান করে বেশিরভাগ সময়।
বিশাল একটা
লজ্জার বিষয় যেখানে টয়লেট করবে যেখানেও তাকে খেতে হচ্ছে। তার ধূমপান করার অভিজ্ঞতার
কথা শুনলে আপনিও হতবাক হয়ে যাবেন।
ক্লাস ফাইভে
পড়ার সময় অনেক সাধনা করে এক প্যাকেট সিগারেট ক্রয় করেছিল। পরিবারের কেউ যাতে না দেখতে
পারে এমন জায়গায় গিয়ে সিগারেটের স্বাদ গ্রহণ করা তার মনের বাসনা ছিল। এ থেকেই সে ধূমপায়ী
হয়ে যায়।
পরিবার, আত্নীয়-স্বজন
সবারই কঠিন বাধার মুখেও তাকে ধূমপান ছাড়াতে পারছে না। এমনকি সে ধূমপান ছাড়ার জন্য বিভিন্ন
সময় ঐষধও সেবন করেছে তারপরও মুক্তি পাচ্ছে না।
অর্থনৈতিক ক্ষতি
নিম্ন আয়ের
মানুষের মধ্যে এমনও দেখা যায় যে, তারা আয়ের বেশিভাগ টাকাই ধূমপানে ব্যায় করে থাকেন।
অনেকের মাঝে সবচেয়ে দামি সিগারেট খাওয়ার প্রবণতাও রয়েছে।
ফলে এই নিশায়
আক্রান্ত হয়ে অনেকেই অহেতুক অবৈধ কাজে অর্থের ক্ষতি স্বাধন করে থাকেন। এর থেকে পরিত্রান
পাওয়ার অনেক চেষ্ঠা করেও রেহাই পান না।
ধনী শ্রেণী
মানুষের মাঝেও সিগারেট খাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। তবে তারাও এর থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা
করতে দেখা যায়। সমাজ, পরিবার ও সন্তানের কথা চিন্তা করে অনেকেই এই বদঅভ্যাসটি ত্যাগ
করতে চান কিন্তু পারেন না।
আরো জানুন:
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করবেন কিভাবে?
ধূমপান ত্যাগ করার উপায়
অনেক দিনের
অভ্যাস্থ এবং ধূমপানে নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন তা সহজেই ছাড়তে পারবেন এমনটা ভাবা গেলেও
বাস্তবে ধূমপান ছাড়া সহজ নয়। তার উদাহরণ আমার রুমমেড যা উপরে উল্লেখ করেছি।
আমরা জানি
তামাক এক ধরণের নেশাকারী দ্রব্য। তাই এটা ছাড়তে কিছু সয়ম প্রয়োজন হবে অর্থাৎ হঠাৎ করে
আপনি ছেড়ে দিতে পারবেন না। এটা ছাড়তে চিকিৎসা বা সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করুন। কিছু
ঔষুধ অনুমোদিত রয়েছে যা আপনার ধূমপারে তীব্র আকাঙ্খা দূর করতে সাহায্য করবে।
শুধু ঔষুধ
আপনার নেশাকে দূর করতে পারবে না। এর জন্য প্রয়োজন স্বদিচ্ছা, মানসিক শক্তি ও দৃঢ় সংকল্প।
আপনার স্বদিচ্ছা না থাকলে কোন ভাবেই ধূমপান মুক্ত জীবন উপভোগ করতে পারবেন না।
প্রাকৃতিক
ভাবে ধূমপান কিভাবে ছাড়বেন তার কিছু নিয়ম নিচে তুলে ধরা হলো। এই ট্রিকগুলো কাজে লাগিয়ে
ধুমপান ছাড়ায় সহযোগিতা পাবেন।
ধূমপান ত্যাগের জন্য আপনি তৈরি কিনা যাচাই করুন
যদি আপনি
ধূমপান ত্যাগ করার পরিকল্পনা করেন তাহলে সবার আগে নিজেকে প্রস্তুত করুন যে আপনি ধূমপান
ছেড়ে নতুন জীবন উপভোগ করতে যাচ্ছেন। কাগজ কলম নিয়ে নিজেকে যাচাই করুন ধূমপান ত্যাগ
করার জন্য প্রস্তুত কিনা।
সাদা কাগজে
ঠিক মাঝখানে একটি রেখা টেনে দিয়ে একপাশে পজেটিভ দিক এবং অন্য পাশে নেগেটিভ দিক দেখুন।
যেমন- একপাশে ধূমপানের ব্যপারে কোন বিষয়গুলো আপনাকে বেশি আগ্রহী করে তোলে সেগুলো লিখে
ফেলুন। অর্থাৎ কোন কোন সময় কেমন পরিস্থিতিতে আপনি ধূমপান করতে বেশি পছন্দ করেন, ধূমপানের
সময় কেমন অনুভব করেন এবং কেন আপনি ধূমপান করেন তা লিখুন।
অন্যপাশে
লিখুন ধুমপানের বিষয়ে কি কি অপছন্দ করেন, ধুমপানের ফলে আপনার উপর কি কি ক্ষতিকর প্রভাব
পড়ছে বলে আপনি মনে করেন এবং কেন আপনি ধুমপান ছেড়ে দিতে চান? সেগুলো ধারাবাহিক লিখুন।
আপনার সাহসী
মনোভাব থাকলে আপনার পরিবার ও কাছের মানুষের কাছে এ ব্যপারে মতামত গ্রহণ করুন। তারা
আপনার ধুমপন করাকে কিভাবে দেখে কিংবা কি মনোভাব পোষণ করে এবং তার কারণ কি জানুন।
এবার আপনার
দু পাশের লেখাগুলো পর্যাবেক্ষণ করুন। যদি দেখেন যে, ধুমপান করার চেয়ে সেটি ছেড়ে দেওয়ার
কারণ বেশি তাহলে বুঝে নিন আপনি ধুমপান ত্যাগের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
অবচেতন মনকে তৈরি করুন যে আপনি ধুমপান ছাড়ার দৃঢ় সিদ্ধান নিয়েছেন
অনেকেই ধুমপান
ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই দিদ্ধান্তের উপর অটল থাকতে পারে না। কারণ, তার অবচেতন
মন থেকে সিদ্ধান্তটি গৃহিত হয়নি। এজন্য নিষ্ঠার সাথে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইসলামিক পরিভাষায়
এটাকে বলা হয় তাওবা করা। এই সিদ্ধান্তে সাক্ষী থাকবেন সৃষ্টিকর্তা।
মনুষের তিন
ধরণের অবস্থা তৈরি হয়ে থাকে। যেমন-
** এক. চেতন
- যখন আমরা জাগ্রত থাকি, কাজ করি কিংবা আড্ডা
দেই। অর্থাৎ আমরা যখন কর্ম ব্যস্ততায় থাকি।
** দুই. অবচেতন
– যেমন ঘুমাতে যাওয়ার আগ সময়। অর্থাৎ চোখ বন্ধ করে যখন ঘুমোতে যাই, ঘুম যাওয়ার আগে
আমরা অবচেতন অবস্থায় থাকি। এই সময় দুনিয়ার কোন বিষয় আমাদের মনে স্থান পায় না। একদম
ফ্রি মন আরকি।
** তিন. অচেতন
– যখন আমরা পুরোপুরি ঘুমিয়ে যাই।
এই তিন অবস্থার
মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থায় আপনি মনকে তৈরি করে নিন যে আপনি ধুমপান ছেড়ে দিতে চলেছেন এবং
এটি বাস্তবায়ন করতেই হবে। এসময় যদি আপনার মন একনিষ্ঠভাবে মেনে নেয় তাহলে খুব সহজেই
ধুমপান ছেড়ে দিতে পারবেন।
বৈজ্ঞানিকভাবে
প্রমাণিত যে, মানুষ যখন অবচেতন মনকে কোন দৃঢ় সংকল্পের কথা বোঝাতে পারে তখন তা কাজে
পরিণত হতে সহজ হয়ে যায়। ইসলামিক পরিভাষায় একে একিন বলা হয়। কিভাবে আপনার অবচেতন মনকে
তৈরি করবেন?
ঘুমাতে যাওয়ার
আগে মনকে বার বার বলুন আমি ধুম পান ছেড়ে দিয়েছি। বিশেষ করে যখন আপনার ঘুম ধরছে ধরছে
ভাব তখনই এই বাক্য বার বার বলুন। প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার সময় বলবেন। ধুমপান আমার জন্য
ক্ষতিকর, ধুমপান আমার জন্য ক্ষতিকর এবং ধুমপান ছেড়ে দেব না বলে ছেড়ে দিয়েছি বলবেন।
এতে আপনার মন এবং শরীর ধুমপান ছাড়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যাবে।
অবচেতন মনকে
আরো ভালভাবে ধুমপান ছাড়ার জন্য প্রস্তুত করার জন্য আর একটি কাজ করতে পারেন। মনে মনে
ভাবুন একটি সিগারেট টানছেন। মনে মনে দেখার চেষ্টা করুন, সিগারেটের ধোয়াগুলো কিভাবে
আপনার গলা দিয়ে ফুসফুসে ঢুকছে।
ধোয়াগুলো
ফুসফুসে দিয়ে কিভাবে ফুসফুসকে ক্ষতির মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। মনে মনে আরো দেখার চেষ্টা
করুন কিভাবে সিগারেটের ধোয়া রক্তের শিরায় শিরায় প্রবেশ করছে। অর্থাৎ অবচেতন মনকে সিগারেট
টানার পর ধোয়া শরীরের প্রবেশ করার প্রক্রিয়াটি কল্পনায় দেখে বুঝানোর চেষ্টা করুন।
ফলে আপনার
অবচেতন মন হঠাৎ করেই সিগারেটের ক্ষতিকর দিকগুলোর বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠবে। আর আপনার সিগারেট
খাওয়ার সিদ্ধান্তকে অত্যান্ত গুরুত্বের সাথে মেনে নিবে। এতেকরে আপনার ধুমপান ত্যাগ
করার সিদ্ধান্ত পাকাপোক্ত হবে এবং আপনি ধুমপান ত্যাগের প্রথম পদ অগ্রসর হবেন।
ধুমপান ত্যাগের জন্য বিশেষ দিন নির্ধারণ করুন
আগে থেকেই
একটা বিশেষ দিন নির্ধারণ করুন এভাবে যে, এই দিন থেকে আপনি আর ধুমপান করবেন না। সেটা
হতে পারে যে কোন দিন যেমন- কোন একটা শুক্রবার হতে পারে কিংবা চলিত মাসের শেষ হতে পারে
কিংবা সামনের মাসের প্রথম দিন হতে পারে।
সবচেয়ে ভাল
হবে যদি এই দিনটা আপনার বা আপনার প্রিয়জনের জন্ম দিন হয়। অথবা আপনাদের ম্যারেজ ডে কেও
বেচে নিতে পারেন। এই দিন থেকে ধুমপান ছেড়ে দেওয়া আপনার জীবণে স্বরণীয় হয়ে থাকবে।
এতেকরে করে
আপনা যে সুবিধা হবে তা হচ্ছে ধুমপান ছাড়ার জন্য বিশেষ দিন ঠিক করা থাকলে আপনার মাথার
মধ্যে প্রতিদিনই ওই দিনের কথা স্বরণ হবে এবং আপনার মনের মধ্যে একটা অপেক্ষা তৈরি হবে।
সেই সাথে ধুমপান ছাড়াও একটা মানসিকতা শরীরে তৈরি হয়ে যাবে।
বিশেষ এই
দিনটি আপনার মনকে পুরোপুরি সচেতন করে তুলবে যে আপনি ধুমপান ছেড়ে দিতে চলছেন। ফলে আপনি
সত্যিই বিশেষ এই দিনটিতে সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিতে পারবেন।
আপনার সিদ্ধান্তের কথা প্রচার করুন
আপনি নিজে
নিজে ধুমপান ছাড়ার জন্য প্রতিজ্ঞা করেই ফেলছেন এবং সেই সাথে অবচেতন মনকেও তৈরি করে
নিয়েছেন। এমনকি ধুমপান ছাড়ার জন্য একটি বিশেষ দিন নির্ধারণ করেছেন ইতিমধ্যে। তখন আপনার
সিদ্ধান্তের কথা সবাইকে জানিয়ে দিন।
আপনার বন্ধ-বান্ধব,
আত্নীয়-স্বজন, ক্লসমেট, রুমমেট, সহকর্মী, কলিগ, কাজিন ইত্যাদি সবাইকে জানিয়ে দিন। পরিচিত
সকলকে এটা জানাতে পারেন যে, আপনি অমুক দিন থেকে সেগারেট কিংবা ধুমপান করবেন না।
সবচেয়ে কাছের
মানুষকে প্রথমে জানিয়ে দিন যে, আপনি আর ধুমপান করবেন বলে ঠিক করেছেন। যাকে আপনি সবচেয়ে
বেশি যত্ন করে থাকেন, যার মনে কষ্ট দিলে নিজেরই কষ্ট লাগে, তাকেই সবার আগে আপনার প্রতিজ্ঞার
কথা জানিয়ে দিন।
এভাবে যখন
আপনার সিদ্ধান্তের কথা প্রচার করবেন তখন দেখবেন অবচেতন মনে এই প্রতিজ্ঞা বদ্ধমূল হয়ে
গেছে। ধুমপান ছেড়ে দেওয়া আপনার জন্য অনেক সাহায্য করছে এই ট্রিকটি।
খুব মনোযোগ দিয়ে ধুমপান করুন
যখন ধুমপান
ছেড়ে দিবেন তার আগে আগে খুব মনোযোগ সহকারে ধুমপান করুন। কেননা সাধারণত কাজের সময়, আড্ডা
কিংবা অন্য কিছু করার সময় বেশি ধুমপান করা হয়ে থাকে। কাজের সময় নিজের অজান্তেই অনেক
সিগারেট খাওয়া হয়ে থাকে।
তাই কাজের
সময় বা আড্ডা দেওয়ার সময় সিগারেট খাওয়া বিরত থাকুন। কাজ বন্ধ করে নিরিবিলি জায়গায় বসে
সিগারেট খুওয়ার শুরু করুন এবং খুব মনোযোগসহ কারে খান।
আড্ডায় বন্ধুদের
বলুন আপনি এখন সিগারেট খুব মনোযোগ সহকারে খেতে চান তাই তাদেরকে আপনার সাথে কথা বলতে
মানা করুন।
সিগারেট টানার
সময় অন্যকোন মনযোগ না দিয়ে সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে সিগারেট টানুন। কিভাবে সিগারেটের ধোয়া
আপনার শরীরে প্রবেশ করছে তা খেয়াল করুন। প্রতিবার সিগারেট টান দেওয়ার সময় আপনার শরীরে
যা যা ঘটছে তা খেয়াল করে ভাবার চেষ্টা করুন।
খুব আরাম-আয়েশ
করে সিগারেটটি খান, মাঝে মধ্যে সিগারেট টানার সময় চোখ বন্ধ করে ফেলুন, সুযোগ থাকলে
শুয়ে পড়তে পারেন। পূর্ণ আয়েসে সিগারেট টানুন আর মনে মনে দেখার চেষ্টা করুন কিভাবে ধোয়া
আপনার গলা দিয়ে ফুসফুসে প্রবেশ করছে।
কেন আপনি সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিচ্ছেন?
ধুমপান করা
কেন ছেড়ে দিচ্ছেন তা আগেই পরিস্কার করে নিতে পারলে ধুমপান ছাড়া আপনার জন্য সহজ হয়ে
যাবে। যদি কারণগুলোর মধ্যে নিজেকে বাঁচানোর আকুতিটা মনের মধ্যে কাজ করে তাহলে এক ধাপ
এগিয়ে গেছেন ধনে নিতে পারেন।
ধুমপায়ীরা
সাধারণত বড় ধরণের কোন রোগে আক্রান্ত না হওয়া পর্যান্ত নিজেকে বুঝাতে পারে না যে, তিনি
নিজেকে বড় ক্ষতি এবং ভয়াবহ হুমকির মধ্যে ফেলে দিচ্ছেন।
এমনও ধুমপানকারী
আছে যে, ডাক্তারের নিষেধাক্কা উপেক্ষা পরিবারের সদস্যদের চোখ ফাকি দিয়েও ধুমপান করেন
রোগে আক্রান্ত থাকা এবং চিকিৎসা চলাকালিন সময়েও। এরকম পরিস্থিতি আপনার তৈরি হয়ে গেলে
ধুমপান ছাড়ার প্রাকৃতিক টুলগুলো ব্যবহার করে দেখুন।
মনে অটল সিদ্ধান্ত
যারা নিতে পারেন না তারা সমাজের কি ভূমিকা রাখবেন কিংবা পরিবারে কি ভুমিকা রাখবেন এবং
সর্বপরি নিজের জন্য কি ভুমিকা পালন করবেন তা নিজে নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন? নিজেকে
বলুন আমি একজন মানুষ, জ্ঞান, বুদ্ধি, সচেনতা আমার মধ্যে আছে। মনোবল দৃঢ় করার ক্ষমতা
আমার অবশ্যই আছে কারণ আমি পশু নই।
হিসেব করে সিগারেট খান
প্রতিদিন
ঘুম থেকে উঠে আবার ঘুমানো যাওয়া আগে কতটি সিগারেট খেয়েছেন তা হিসেব করে ডাইরিতে লিখে
রাখুন কিংবা আপনার স্মার্টফোনে নোডপ্যাডে লিখে রাখতে পারেন।
ঘুমাতে যাওয়ার
সময় হিসেবটা বের করে দেখুন কতটি সিগারেট খাওয়া হয়েছে। ভাবুন কেন খাওয়া হয়েছে। মাস শেষে
দেখুন কতটি সিগারেট খেয়েছেন।
খুব মনোযোগ
সহকারে সিগারেট খাওয়া এবং সেই সাথে হিসাবটা রাখতে পারলে আপনার মনে সিগারেট খাওয়ার আকাঙ্খা
অনেকটাই কমে যাবে। ফলে আপনি সহজেই ধুমপান ছেড়ে দিতে পারবেন।
সিগারেটে আগুন না দিয়ে টানুন
এটা শুনতে
খারাপ লাগলেও ধুমপান ছাড়তে আপনাকে সাহায্য করবে। আপনার সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছা যখন প্রবল
হয়ে যাবে তখন একটি সিগারেট হাতে নিন। এরপর সিগারেটটি না জ্বালিয়ে টানতে থাকুন। প্রথমে
আপনার কাছে একটু কেমন কেমন লাগলেও একটু পরে দেখবেন সিগারেট খাওয়ার আগ্রহ কিছুটা কমে
গেছে।
এতে সিগারেট
খাওয়ার তৃষ্ণা পুরোপুরি মিটে না গেলেও অনেকক্ষণ আপনি সিগারেট না খেয়ে থাকতে পারবেন।
তাদের কাছে এই ট্রিকটি আরো কাজে দিবে যারা কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিজের অজান্তেই একটার
পর একটা সিগারেট খেয়ে থাকেন।
কেননা কাজের
সময় যখন নিজের অজান্তে সিগারেট ধরাবেন তখন আগুন না জ্বালিয়ে টানতে থাকুন। কাজের সময়ই
যদি এভাবে টানতে পারেন তাহলে সিগারেট খাওয়া অনেকটা কমে আসবে।
এটা মূলত
আপনার মনকে ধোকা দেওয়া যে, আপনি সিগারেট খাচ্ছেন। মন কাজের ব্যস্ততায় বুঝতে পারবে না
যে আপনি সিগারেট খাচ্ছেন না।
চ্যালেঞ্জ গুহণ করতে হবে
আপনি যদি
অনেক দিন যাবৎ ধুমপান করে থাকেন তাহলে নিজেও অনুভব করবেন যে ধুমপান ছাড়া মোটেও কোন
সহজ কাজ নয়। এজন্য আপনাকে একটি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে এবং যে কোন মূল্যে জয়ী হতে
হবে।
যে কারণগুলোর
কারণে ধুমপানের দিকে আপনি ঝুঁকছেন এবং যে সব কারণগুলোর জন্য ধুমপান ছাড়া আপনার জন্য
কষ্টকর তার বিপরীতে একটি উপায় দাঁড় করান।
উদাহরণ হিসাবে
আপনার এই কারণটি যদি নিকোটিন আসক্তির নেশা হয়ে থাকে তাহলে আপনার জন্য নিকোটিন প্রতিরোধক
ঔষধ সেবন করা উপায় হতে পারে।
আবার যদি
আপনার ধুমপানের কারণ অবস্বাদগ্রস্থ সময়ে ধুমপান স্বস্তি ফিরে দেয় তাহলে এর বিপরীতে
হাটাহাটি করা, শরীরিক ব্যায়াম করা কিংবা কথাও ঘুরে আসার মত উপায় গ্রহণ করতে পারেন।
আপনার ধুমপানে
আগ্রহী হওয়ার বিষয়গুলোর বিপক্ষে আপনি যতগুলো উপায় খুঁজে বের করতে পারবেন আপনার জন্য
ততই চ্যালেঞ্জে জয়ী হওয়া সহজ হয়ে যাবে।
ধুমপান ছাড়ার
ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করা কতটা জরুরী তা বুঝতেই পারছেন। সুতরাং এই চ্যালেঞ্জ এ
জয়ী হওয়ার ইচ্ছা অবচেতন মনকে বলে দিন এবং চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন।
ধুমপান সঙ্গ থেকে দূরে থাকুন
বিখ্যাত শেখ
সাদীর সেই বিখ্যাত কবিতা “সঙ্গ দোষ” থেকে জানা যায় যে, মানুষের জীবণে সঙ্গ অনেক প্রভাব
ফেলে থাকে। প্রবাদে আছে “সঙ্গ দোষে লোহা ভাসে”। অর্থাৎ আপনি যাদের সাথে চলফেরা করবেন,
উঠাবসা করবেন তাদের আচারণ আপনার জীবনে প্রভাব বিস্তার করবে।
গবেষণায় দেখা
যায় বেশিরভাগ ধুমপানকারী শুরুর দিকে বন্ধু বান্ধব বা কোন ব্যাক্তির দ্বারা ধুমপান করতে
প্রলুব্ধ হয়ে থাকেন। আবার যখন ধুমপান ছাড়ার জন্য সিদ্ধান নেয়, তখন একই ধরণের মানুষগুলো
বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
এছাড়াও দেখা
যাবে আপনি যাদের সাথে চলাফেরা, উঠাবসা করছেন তারা যদি ধুমপানকারী হয়ে থাকে তাহলে আপনার
সামনে যখন তারা ধুমপান করবে, তখন আপনারও ইচ্ছা করবে । অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পুনরায়
ধুমপান করতে তারা আপনাকে প্রভাবিত করবে।
তাই আপনি
যখন ধুমপান না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তখন অবশ্যই এই ধরণের সঙ্গ ত্যাগ করে চলতে হবে।
এই সঙ্গগুলোর পরিবর্তে আপনি পরিবার কিংবা অন্যান্য কাছের মানুষগুলোর সাথে সময় কাটাতে
শুরু করতে পারেন । যাদের কাছে আপনার ধুমপান করা মোটেও পছন্দনীয় নয়।
নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন
আপনি যদি
নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন তাহলে ধুমপান ছাড়া আপনার জন্য অনেক কঠিন হয়ে
দাঁড়াবে। ধুমপান ত্যাগের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া যেমন জরুরী নিজের আবেদ নিয়ন্ত্রণ করাও
ততটা জরুরী হয়ে পড়বে।
কেননা অনেক
ক্ষেত্রেই দেখা যায়- প্রেম-ভালবাসা কিংবা পারিবারিক অশান্তির কারণে অনেকেই ধুমপানে
অভ্যাস্ত হয়ে থাকেন। রাগ, অসস্তি, দুঃখ ইত্যাদি কিছু আবেগ রয়েছে যা একজন ধুমপানকারীকে
ধুমপান করতে উদ্বুদ্ধ করে থাকে।
আপনি যখন
ধুমপান ছাড়ার সংকল্প করেছেন তখন এ ধরণের পরিস্থিতিতে আবার ধুমপানের জালে আটকে যেতে
পারেন। তাই আপনকে অবশ্যই আবেক নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
আপনি যদি
আগে থেকে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার ব্যপারে সচেতন না হোন তাহলে আবেগ কন্ট্রোল করতে পারবেন
না। তাই এই ব্যপারে আপনাকে অবশ্যই সচেষ্ট হতে হবে।
খুব সহজে
যাতে রেগে না যান কিংবা খুব তাড়াতাড়ি অবসদগ্রস্থ হয়ে না পড়েন, সর্বদা সেদিগে খেয়াল
করে চলবেন। আপনার পক্ষে যতটা সম্ভব শান্ত থাকার চেষ্টা করুন এবং পর্যাপ্ত পরিমানে পানি
পান করুন।
শেষবারের মত ধুমপান করা থেকে বিড়ত থাকুন
ধুমপানকারীদের
স্বভাবজাত বৈশিষ্ট হচ্ছে তারা কখনো একবার ধুমপান করে তৃপ্তি পায় না। একবার ধুমপান করে
ঐ পরিস্তিতির মুখোমুখি হলে আবার ধুমপান করে থাকেন।
যারা ধুমপান
করে তাদের সংগ্রহে কখনো সিগারেটের প্যাকেট কিংবা একাধিকের নিচে থাকে না। যখনই নেশা
ধরে তখনই তারা সেগারেট ধরাতে ভুলতে পারেন না। এই স্বভাব পরিত্যাগ করা খুবই কঠিন।
অনেকে আবার
ধুমপান ছাড়ার আগে শেষ বারের মত একবার ধুমপান করার স্বাদ গ্রহণ করতে চান। তবে এখানে
লক্ষণীয় যে, আপনি যদি কোনভাবেই শেষবারের মত এই ইচ্ছাটা পূরণ করে ফেলেন তাহলে আপনার
জন্য খুব খারাপ সংবাদ।
অর্থাৎ আপনি
যদি এই শেষ ইচ্ছটা পুরণ করা থেকে বিরত না থাকতে পারেন তাহলে আপনার পক্ষে ধুমপান ছাড়ার
সম্ভবনা খুবই কম।
এটা শুধু
সিগারেট খাওয়ার ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে নয়। যে কোন খারাপ কাজ ছেড়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এমনটা
ঘটে থাকে।
সুতরাং ধুমপান
ত্যাগের উপায় হিসাবে শেষ বারের মত সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। কেননা এটা
বাস্তবায়ন করতে না পারলে আপনি ধুমপান ছাড়তে পারবেন না।
নিকোটিন চুইংগাম ধুমপান ছাড়তে সহযোগিতা করবে
সিগারেট ছাড়ার
পর আপনার শরীরে নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে। এটি মোকাবেলার প্রস্ততি থাকতে
হবে আপনার মনের মধ্যে।
মনে রাখতে
হবে আপনি একটি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন। আপনি ধুমপান ছাড়ার পর বড় যে সমস্যাটি হতে পারে
তা হচ্ছে শরীর ম্যাজম্যাজ করা।
এটি হয়ে থাকে
মূলত রক্তে নিকোটিনের অভাবে। আপনি যখন সিগারেট খেতে খেতে অভ্যাস্ত হয়ে যান তখন শরীরে
রক্তের মধ্যে নিকোটিনের একটি নির্দিষ্ট চাহিদা তৈরি হয়ে যায়।
যখন এই নিকোটিন
থেকে শরীল বঞ্চিত হয় তখন শরীরে নানা রকম প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এমতাবস্থায় শরীলকে
বুঝ দিতে পারেন চুইংগাম গেয়ে যে, চুইংগাম খেয়ে আপনি নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট করে দিচ্ছেন।
বাজারে বিভিন্ন
ধরণের নিকোটিন যুক্ত বিষেশ করে বড় বড় সেন্টারগুলোতে নিকোটিনযুক্ত চকলেট ও চুইংগাম পাওয়া
যায়।
এর কয়েকটি
আপনার সংগ্রেহে রাখুন । যখনই এই পরিস্থিতিতে পড়েবেন তখনই চুইংগাম মুখে দিয়ে চিবাতে
থাকুন।
মনকে ভুলিয়ে রাখতে ব্যায়াম করুন
ব্যায়াম শুধু
আপনার ধুমপান করার মনসিকতাকে ভুলিয়ে রাখবে তা নয়, ব্যায়ামের কারণে আপনার শরীরে যে
প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে তা দূর হয়ে যাবে। শুধু তাই নয়, ব্যায়ামের কারণে আপনার শরীর সুস্থ্য
ও ভালভাবে কাজ করবে।
এরফলে আপনার
মন উৎফুল্ল হবে। বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যাবে। নিজেকে অনেক সূখী মনে হবে।
সর্বপোরি আপনি সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারবেন।
উপরে ধুমপান
ছাড়ার জন্য যে ট্রিকগুলো আলোচনা করা হলো তাতে যদি আপনার সন্দেহ থাকে তাহলে সর্বপ্রথম
মন থেকে এই সন্দেহ দূর করুন। কেননা এই উপায়গুলো প্রয়োগ করলে আপনি ধুমপান ছাড়তে পারবেন।
গবেষণায় দেখা
যায় যে, নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ ও সেই অনুযায়ী চলার অভ্যাস গড়ে তোলার আগে খুম কম
সংখ্যাক লোকই ধুমপান ছাড়তে পেরেছে। অনেকে আবার হাজার চেষ্টা করেও ধুমপান ছাড়তে পারছেন
না। আপনার ক্ষেত্রে এমনটা হয়ে থাকরে অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন।
ধুমপান ছাড়ার প্রাকৃতিক কিছু টুলস
উপরে আমরা
আলোচনা করেছি কিভাবে আপনি ধুমপান ছাড়তে পারেন। অর্থাৎ ধুমপান ছাড়ার বিভিন্ন কৌশল যা
প্রয়োগ করে সহজেই ধুমপান ত্যাগ করতে পারবেন। এখন কিছু প্রাকৃতিক খাদ্য উল্লেখ করছি যা
আপনার ধুমপান ছাড়তে সাহায্য করবে।
গোলমরিচ:
সিগারেট খাওয়ার নেশা থেকে মুক্তি পেতে গোলমরিচের বিকল্প হয় না। এই প্রাকৃতিক মশলা জাতীয়
খাদ্যটি নিয়মিত খেতে শুরু করুন দেখবেন ধুমপানে প্রতি আপনার ইচ্ছা অনেকটাই কমে গেছে।
গোলমরিচ যে
শুধু ধুমপান করার ইচ্ছা কমাবে তা নয়, একই সাথে এই জটিল ও কঠিন রোগ থেকে রক্ষা করতে
আপনাকে সাহায্য করবে।
এলাচ: এই
মশলাটি আপনাকে ধুমপান ছাড়তে কিভাবে সাহায্য করবে? একান্তই যদি আপনি জানতে চান তাহলে
ছোট এলাচ আপনার সঙ্গে রাখুন। তাহলে কি এলাচ সঙ্গে রাখলেই ধুমপান ছেড়ে যাবে?
না, তবে কিভাবে
কাজে লাগাবেন এলাচকে? কিছুই করতে হবে না, যখন আপনার ধুমপান করার জন্য মন প্রস্তুতি
নিবে তখনই দুই তিনটা এলাচ মুখে দিন।
দেখবেন স্মোক
করার ইচ্ছা নিমিষেই চলে যাবে এবং আপনার শরীলও চাঙ্গা হয়ে উঠবে। তাই এই প্রাকৃতিক উপায়টি
কাজে লাগিয়ে দেখুন।
আঙ্গুরের
রস: এই প্রাকৃতিক ফলটি আপনার শরীরে অনেক উপকার করবে সেই সাথে আপনার ধুমপানের আগ্রহ
কমে দিবে। ধুমপানের কারণে শরীরে নিকোটিনের জন্য জমে থাকা টক্সিন শরীরের বাইরে বের করতে
আঙ্গুরের রসের ভুমিকা অতুলনীয়।
শুধু তাই
নয় শরীলে অন্যান্য ময়লা বের করতে এই ফলটির জুরি নেই। তাই নিয়মিত আঙ্গুরের রস পান করুন।
পানি: পানির
উপকারিতা নতুন করে বলার প্রয়োজন মনে করছি না। পানি আপনাকে শুধু ধুমপান ছাড়তে সাহায্য
করবে না, এর বহুবিদ উপকারিতা রয়েছে।
যতবেশি আপনি
পানি পান করবেন তত বেশি আপনার শরীল ক্লিন থাকবে। ভিতরের ময়লা সব শরীলের বাইরে বের করে
আনবে পানি। এছাড়াও শরীর চাঙ্গা রাখতে পানির বিকল্প নেই।
মধু: এই প্রাকৃতিক
খাদ্যটিতে রয়েছে শরীরের জন্য বিভিন্ন উপকারী উপাদান। ইসলামেও এর কদর রয়েছে। সু-স্বাস্থ্যের
জন্য এটি খুবই উপকারী খাদ্য।
এই প্রাকৃতিক
খাদ্যাটি আপনাকে সিগারেট খাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। এখানেই শেষ নয় নিয়মিত
মধু খেয়ে দেখুন এক মাসের মধ্যেই আপনার শরীরে কি কি পরিবর্তন হয়েছে।
আদা: আপনি কি আসলেই ধুমপান ছাড়তে চাইছেন? যদি ইতিবাচক
মনোভাব থাকে তাহলে নিয়মিত আদা খান। আদার অনেক উপকারীতা রয়েছে। পেটের নানা রকম সমস্যা
দূর করবে এটি। বিশেষ করে বদহজমে এই মশলা খুবই উপকারী।
ধুমপান ছাড়ার
কারণে আপনার শরীরে যে উইথড্রল সিম্পটন দেখা যাবে তা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে আদা।
তবে কাচা আদা খেতে হবে। চায়ের সাথেও খেতে পারেন।
মুলার রস:
এক গ্লাস মুলার রসের সাথে পরিমানমত মধু মিশিয়ে দিনে দু বেলা খান। যে কোন কু-অভ্যাস
দুর করতে মুলার রসের উপর ভরসা রাখতে পারেন।
ওটস: সিগারেট খাওয়ার নেশা ছাড়াতে ওটসের বিকল্প কোন কিছু
হয় না। তাই সিগারেট খাওয়া ছাড়তে বহুকাল আগ থেকেই এই উপাদানটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ২ কাপ ফুটানো
পানিতে এক চামচ ওটস মিশিয়ে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন।
পরদিন সকালে
পুনরায় দশ মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে প্রতিটি খাবারের পর অল্প অল্প করে খেতে থাকুন। এছাড়াও
ভিটামিন এ. ই ও সি ক্যাপসুল কিংবা খাবার খেলে সিগারেট খাওয়ার নেশা একেবারে দূর হয়ে
যায়।
জিনসেং: এক
চামচ জিনসেং পাউডার জুসে কিংবা সুপে মিশিয়ে সকালে খেলে সারা দিন সিগারেট খাওয়া থেকে
বিরত থাকতে পারবেন। অর্থাৎ সিগারেট খাওয়ার ইচ্ছাকে দমিয়ে রাখতে এই উপাদানটি খেতে পারেন।
শেষকথা:
আশাকরি আজকেই
এই ইনফোটি আপনাকে ধুমপান ছাড়তে সাহায্য করবে। আপনি কিভাবে ধুমপান ছেড়েছেন তা কমেন্ট
করে আমাদের সাথে শেয়ার করুন।
এতে অন্যরাও উপকৃত হতে পারে, বিশেষ করে যারা ধুমপান ছাড়তে চাইছেন কিন্তু পারছেন না।
Home BD info এর অন্যান্য ইনফো জানুন:
আকর্ষণীয় ত্বক ধরে রাখবেন কিভাবে?
সারোগেসি কি? বাংলাদেশে এর আইন কি? ইসলাম কি বলে?