আমাদের সামাজিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আইনি প্রতিকার। বর্তমান সমাজে অসাধু লোকের পরিমান অনেকগুণে বেড়ে যাওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে মামলা মোকাদ্দামা করেও কেউ কেউ হতাশা প্রকাশ করে থাকেন। এটা অবশ্য আইন সম্পর্কে অজ্ঞ এবং মামলা করার নিয়ম না জানার কারণে হয়ে থাকে। কেননা অনেকেই আইনগত জটিলতায় পড়ার আগে কিভাবে সহজেই আইনি সহায়তা নেওয়া যায়, কোন সহায়তা নেওয়ার জন্য কোথায় যেতে হয় সেই সম্পর্কে ধারণা রাখেন না। তাই আজকে আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
নানা কারণে
অনেকের আইনি সহায়তার প্রয়োজন পড়ে। সাধারণ ডায়রি বা জিডি থেকে শুরু করে মামলা করা কিংবা
আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়। এই বিষয়ে অনেকে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে আইনগত জটিলতায়
পড়েন।
অন্যদিকে
ঠিক সময়ে মামলা করা সম্ভব না হলে অনেক সময় মামলার গুরুত্বপূর্ণ আলামত নষ্ট হয়ে যায়।তাই
কোন পরিস্থিতিতে কিভাবে আইনি সহায়তা নিতে হয় তার সংক্ষিপ্ত নিয়ম কানুন আজকের ইনফোতে
তুলে ধরা হলো।
অপরাধ সংঘটিত হলে পুলিশে অভিযোগ
যে কোন অপরাধ
হতে দেখতে যেকোন সচেতন নাগরিক পুলিশে খবর দিতে পারেন। যেমন- চুরি, হুমকি, মারামারি
বা যে কোনো নিরাপত্তাহীনতা মূলক অপরাধ ইত্যাদি।
মানুষের যে
কোন বিপদে প্রথম যোগাযোগের ক্ষেত্র হচ্ছে পুলিশ। তাই স্থানীয় থানার ওসি, ডিউটি অফিসার,
থানার নাম্বার সবার বাসায় সংরক্ষণ করে রাখা প্রয়োজন।
এছাড়াও পুলিশের
জরুরী সেবা নাম্বার ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে পুলিশে খবর দেওয়া যেতে পারে। স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তার
নাম্বার সবার ফোনে সেভ থাকলে বিপদের সময় সহজেই যোগাযোগ করা যাবে।
সুতরাং নিজে
বিপদে পড়লে কিংবা কোন অপরাধ হতে দেখলে সরাসরি পুলিশকে জানানো উচিৎ। কোন কারণে স্থানীয়
থানা থেকে দ্রুত সহায়তা না পেলে সেখানকার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানাতে পারেন।
অপরাধ সংঘটিত হতে দেখলে আপনি নিজে বাদী হয়ে কিংবা মামলা সাক্ষী হতে পারেন। অথবা পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ নিজেরাও ব্যবস্থা নিতে পারে।
আপনার মোটরসাইকেলের বিরুদ্ধে মামলা হলে কি করবেন?
সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করার নিয়ম
কেন থানায়
সাধারণ ডায়রি করবেন এবং কিভাবে করবেন এই বিষয়ে ইতিমধ্যে একটি ইনফো আমাদের সাইটে শেয়ার
করা হয়েছে। এখানে সংক্ষিপ্তভাবে কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো।
যে কোন ঘটনার
আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রাথমিক এবং সাধারণ একটি বিষয় হলো জেনারেল ডায়েরি বা জিডি করা।
বিশেষ কোন মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়ে গেলে আইনগত রেকর্ড সংরক্ষণ বা পুলিশে প্রাথমিক
তথ্য জানানোর জন্য সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করা হয়।
অনেক সময়
কারো বিরুদ্ধে অভিযোগও মামলা না করে জিডি আকারে করা হয়। জিডি সবসময় স্থানীয় থানায় করা
হয়ে থাকে। যে এলাকায় হারিছে বা ঘটনার যে এলাকার সেই এলাকার থানাতে জিডি করতে হবে, অন্য
কোন থানা জিডি নিবে না।
সাদা কাগজে
বরাবর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, স্থানীয় থানার নাম, বিষয়: ”সাধারণ ডায়রি প্রসঙ্গে” লিখে
ঘটনার বিস্তারিত বিবরণসহ জিডির আবেদন করতে হয়। আপনি আবেদনকারী হলে আপনার নাম, মোবাইল
নাম্বারসহ বিস্তারিত দিতে হবে।
হারিয়ে যাওয়া
জিনিসপত্রের ক্ষেত্রে যা হারিয়ে গেছে তার বিস্তারিত বর্ণনা থাকতে হবে। এনআইডি, আইডি
কার্ড কিংবা দলিল ইত্যাদি হারিয়ে গেলে জিডি করার ক্ষেত্রে এর একটি ফটোকপি আবেদনের সাথে
সংযুক্ত করা লাগতে পারে।
জিডির দুটি
আবেদন নিয়ে থানায় গেলে জিডি নথিভুক্ত করে সেই নম্বর বসিয়ে একটি কপি আবেদনকারীকে দেওয়া
হয়। এই বিষয়ে আরো জানতে “থানায় সাধারণ ডায়রি বা জিডি কিভাবে করবেন” ইনফোটি
দেখুন।
মামলা কি? বা মামলা করার অর্থ কি?
মামলা করা
মানে হলো কোন ঘটনার আইনি বিচার চাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা। মামলা কয়েক প্রকার হতে পারে
। যেমন- ফৌজদারি বা ক্রিমিনাল কেস ও দেওয়ানী মামলা।
ফৌজদারি মামলা
বা ক্রিমিনাল কেস থানায় কিংবা আদালতে উভয় স্থানে দায়ের করা যায়। দেওয়ানী মামলা বা সিভিল
কেস সাধারণত আদালতে দায়ের করা হয়ে থাকে।
মামলা পরিচালনার
জন্য সবসময় আইনজীবীদের সহায়তা নেওয়া যেতে পারে। নিজেও এই সম্পর্কে অভিজ্ঞ হলে আদালতের
অনুমতি নিয়ে পরিচালনা করতে পারেন।
ফৌজদারি মামলা বা ক্রিমিনাল কেস কি?
সাধারণত হত্যা,
ধর্ষণ, নির্যাতন, অপহরণ, হুমকি, অগ্নিসংযোগ, চুরি, ছিনতাই ইত্যাদির মতো ঘটনায় ফৌজদারি
মামলা হয়ে থাকে। অর্থাৎ যে অপরাধগুলোর কারণে মানুষের স্বাভাবিক জীবণ ক্ষতি হয় বা ক্ষতির
সম্মুখিন হয় সেই সব ঘটনায় ফৌজদারি মামলা হয়।
কোন ফৌজদারি
ঘটনার শিকার হলে প্রথমেই স্থানীয় থানার সহায়তা নেয়া প্রয়োজন। কেননা স্থানীয় থানায় ফৌজদারি
মামলা করার কথা। পুলিশ মামলা নিয়ে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দিবে, আসামীদের গ্রেপ্তার
করবে, এরপর তাদের বিচার শুরু হবে।
যদি কোন কারণে
থানা মামলা না নিতে চায় বা গড়িমসি করে, তাহলে সরাসরি আদালতে মামলা করতে পারেন। আদালত
বিষয়টি আমলে নিলে থানাকে এজাহার আকারে নিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিতে পারেন।
দেওয়ানী মামলা বা সিভিল কেস কি?
দেওয়ানী মামলা
বা সিভিল কেস বলতে যে মামলাগুলো জমিজমা সংক্রান্ত, সম্পত্তি, পারিবারিক বিরোধ, অর্থ
সংক্রান্ত বিরোধ, মানহানি ইত্যাদির ক্ষেত্রে করা হয়।
দেওয়ানী মামলা
সাধারণত আদালতে করা হয়ে থাকে। এই মামলা করার ক্ষেত্রে আইনজীবী নিয়োগের ক্ষেত্রে আগে
থেকেই বিবেচনা করতে হবে। কেননা ফৌজদারি মামলা আইনজীবী ও দেওয়ানী মামলার আইনজীবী আলাদা
রকমের হয়ে থাকে।
দেওয়ানী মামলা
বা সিভিল কেস সাধারণত কিছুটা জটিল প্রকৃতির হয়ে থাকে। তাই মামলা করার আগে ভাল করে বিষয়টি
আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করে নিবেন।
থানায় মামলা করার নিয়ম
সাধারণত ফৌজদারি
যে কোন ঘটনা ঘটে থাকলে থানায় মামলা করবেন। কোন কারণে যদি থানায় মামলা নিতে অস্বীকার
করে, অহেতুক থানার কর্মকর্তাদের মামলা নিতে অস্বীকার করার কথা নয়, তারপরও যদি এরকম
ঘটে থাকে তাহলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে বিষয়টি নিয়ে আসবেন। তাহলে তারা আইন অনুযায়ী
দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
মামলা করার
ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব থানাকে অবহিত করে সেখানে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরার
পাশাপাশি আলামত যাতে নষ্ট না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কেননা মামলার আলামত নষ্ট
হয়ে গেলে মামলার তদন্ত ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
এজাহার ও এফআইআর বা ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট কি?
থানায় যে
সাদা কাগজে অভিযোগকারীর বিস্তারিত বর্ণনা, অভিযুক্তদের নাম ঠিকানা ইত্যাদি লিখে অভিযোগ
দেওয়া হয়, অর্থাৎ সাদা কাগজের এই অভিযোগ পত্রটিকে বলা হয় এজাহার।
যে বইতে এই
এজাহার সংযুক্ত করে নথিভুক্ত করা হয় তাকে এফআইআর বা ফার্সট ইনফরমেশন রিপোর্ট বলা হয়।
পরবর্তীতে তদন্তে আরও কারো নাম পাওয়া গেলে কিংবা আরো কোন তথ্য যোগ হলে সেটা এই এফআইআর
ও এজাহারের সাথে সংযুক্ত করা হয়।
আলামত রক্ষা করা ও প্রমাণ সংরক্ষণ করা জরুরী কেন?
মামলার মূল
ভিত্তি হচ্ছে ঘটনার আলামত ও সাক্ষ প্রমাণ। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, যে কোনো মামলার ক্ষেত্রে
আলামত রক্ষা করা, প্রমাণ সংরক্ষণ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তদন্তে যেন সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসে সে জন্য আলামত ও প্রমাণগুলো সংরক্ষণ করা জরুরী। কেননা ধর্ষণের
মতো ঘটনায় অনেকে গোছল করে ফেলেন।ফলে অনেক সময় ধর্ষণের আলামত নষ্ট হয়ে যায়।
আবার অনেক
সময় এমনও হয় যে, হত্যা বা দড়িতে ঝুলে মৃত্যুর সময় স্বজনরা সেখানকার আলামত নড়াচড়া করে
ফেলেন, যা মামলার তদন্তে ক্ষতির কারণ হযে দাঁড়ায়।
থানায় মামলা না করে জিডি করার পরামর্শ দেওয়া হয় কেন?
অনেক সময়
থানায় মামলার সংখ্যা কম দেখানোর উদ্দেশ্যে থানার কর্মকর্তারা ছিনতাই, চুরির মতো ঘটনার
ক্ষেত্রে মামলা না করে জিডি করার পরামর্শ দেন। এ ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীর মামলা করা উচিৎ।
কোন কারণে
যদি থানায় মামলা নিতে না চায়, তাহলে এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করবেন। কোনভাবেই
যদি থানায় মামলা করা সম্ভব না হয়, তাহলে আদালতে মামলা করতে পারেন।
আদালতে মামলা
হলে আদালত সংশ্লিষ্ট থানাকে এজাহার গ্রহণে নির্দেশ দিতে পারেন এবং আইন অনুযায়ী পুলিশ
দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা
থানায় মামলা
হবার পর থানার একজন কর্মকর্তাকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে
ওসি নিজেও তদন্ত কর্মকর্তা হিসাবে মামলার তদন্ত করতে পারেন। আবার কোন কারণে মামলার
গোয়েন্দা পুলিশ, সিআইডি কিংবা র্যাবে হস্তান্তরিত হলে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ
করা হয়।
পুলিশ কিংবা
অন্য কোন বাহিনী তদন্ত করুক না কেন কিংবা আসামী আটক করুক না কেন, সব ক্ষেত্রে স্থানীয়
থানায় মামলা হতে হয়।
ব্যাপ বা
সিআইডি, ডিবি কাউকে আটক করলেও সেটার মামলা স্থানীয় থানায় হতে হয়। সংশ্লিষ্ট বাহিনী
সেই মামলার তদন্ত করে থাকতে পারে।
বিচার শুরু হয় কিভাবে?
থানার পুলিশ,
সিআইডি বা র্যাব কিংবা ডিবি ইত্যাদি যেকোনো বাহিনী তদন্ত করুক না কেন, তদন্তের পর
আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে। এক্ষেত্রে কাউকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ পত্র দেয়া হতে
পাবে, আবার কাউকে নির্দোষ পেলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হতে পারে।
আদালত তদন্ত
প্রতিবেদন পেলে কিংবা আদালতে প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ফৌজদারি গুরুতর
অপরাধে যেমন-হত্যা করার মতো অপরাধের মামলা অবশ্যই হতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে অভিযোগকারী পাওয়া
যায় না, সেক্ষেত্রে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে থাকে।
আদালতে মামলা করার নিয়ম
ফৌজদারি মামলা
বা ক্রিমিনাল কেস কোন কারণে যদি থানায় না নেয় কিংবা থানায় মামলা করা সম্ভভ না হলে আপনি
সরাসরি আদালতে মামলা করতে পারেন।
আপনার মামলাটি
আদালত গ্রহণযোগ্য মনে করলে মামলাটি গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট থানাকে এফআইআর গ্রহণ করার এবং
তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দিতে পারেন।
আদালতে আপনার
মামলটি খারিজও হতে পারে অর্থাৎ আদালত আপনার মামলাটি গ্রহণ না করে সরাসরি খারিজ করেও দিতে পারেন।
আদালতে কিছু
কিছু মামলার বিচার সরাসরি শুরু হয়ে থাকে। যেমন- রাষ্ট্রদ্রোহের মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়া
আদালতে সরাসরি শুরু হয়।
তবে দেওয়ানী
মামলার ক্ষেত্রে যেমন- জমি-জমা, সম্পত্তি, পারিবারিক বিষয় (পারিবারিক নির্যাতন, নারী
সহিংসতা ব্যতীত), অর্থ ইত্যাদি বিষয়ে সিভিল কোর্ড অর্থাৎ আদালতে দেওয়ানী মামলা করা
যায়।
আইনজীবী নিয়োগ
মামলা পরিচালনার
জন্য সব সময় আইনজীবীর সহায়তা নিতে পারেন। সাধারণত ফৌজদারি এবং দেওয়ানী উভয় মামলার ক্ষেত্রে
আলাদা ধরণের আইনজীবী কাজ করে থাকেন।
তাই আইনজীবীর
সহায়তা নেওয়ার আগে এই বিষয়ে জেনে নেওয়া প্রয়োজন। মামলা ফাইলিংয়ের ক্ষেত্রে এফিডেভিড
লাগে। ফলে একজন আইনজীবীর সহায়াতর দরকার হয়ে থাকে।
তবে আপনি
চাইলে নিজেও নিজের মামলা পরিচালনা করতে পারেন। এক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি নিতে হবে এবং
এই বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে।
উচ্চ আদালতে রিট করার নিয়ম
অ্যাডমিরালটি
অর্থাৎ সমুদ্র- সংক্রান্ত বিষয় এবং কোম্পানি সংক্রান্ত বিষয়ে সরাসরি উচ্চ আদালতে বিচার
প্রার্থনা করতে পারেন। এছাড়াও জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ে সরকার বা সংশ্লিষ্ট পক্ষের
বিরুদ্ধে আদালতে রিট দায়ের করতে পারেন।
উচ্চ আদালতে
রিট দাখিল করার একটি নির্দিষ্ট কাঠামো আছে। এটি অনুসরণ করে নিজেই রিট দাখিল করতে পারবেন।
তবে আপনার যদি এফিডেভিট দাখিলের অভিজ্ঞতা না থাকে তাহলে কোন অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ
নিবেন। আদলতের সম্মতি নিয়ে নিজেও রিটের ব্যাপারে শুনানি করতে পরেন।
মনে রাখুন,
অভিজ্ঞতা না থাকলে একজন আইনজীবী নিয়োগ করা আপনার জন্য শ্রেয় হবে।
উচ্চ আদালতে অন্যান্য বিষয়
উচ্চ আদালতে
সাধারণত আগাম জামিনের আবেদন ছাড়া নিম্ন আদালতে যে সকল মামলার বিচার চলমান থাকে, সেসকল
মামলার ব্যাপারে সরাসরি উচ্চ আদালতে যাওয়া যায় না।
নিম্ন আদালতে
চলমান মামলাগুলোর রায় হলে তার বিরুদ্ধে আপীল কিংবা বিচারে অসন্তুষ্ট হলে কেবল সেই ব্যাপারে
উচ্চ আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।
এর অর্থ হলো
যে সকল মামলা নিম্ন আদালতে সমাধান করা সম্ভব হয় না কেবল সেই সকল মামলার ক্ষেত্রে উচ্চ
আদালতে প্রতিকার চাওয়া যেতে পারে।
আইনি সহায়তা তহবিল কি?
আদালতে বিচার
প্রক্রিয়া শুরু হলে মামলা ফাইলিং, আইনজীবীদের খরচ থেকে শুরু করে আদালতে বিভিন্ন ধরণের
খরচ থাকে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের একটি আইনি সাহায়তা তহবিল রয়েছে।
প্রতিটি জেলা
আদালতে এই তহবিল থেকে অর্থ নিয়ে মামলা পরিচালনা করতে পারেন, মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে
অর্থিকভাবে অক্ষক ব্যক্তিরা। অর্থাৎ এই তহবিল থেকে সহায়তা পেতে হলে আপনাকে তহবিল পাওয়ার
শর্ত পূরণ করতে হবে।
আপনি যদি
মামলা পরিচালনা করতে আর্থিকভাবে অক্ষম হয়ে থাকেন, তাহলে সরকারি তহবিল ছাড়াও বেসরকারি
কিছু সংস্থা, যেমন- ব্লাস, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, লিগ্যাল এইড সার্ভিসেস, মহিলা আইনজীবী
সমিতির মতো সংস্থা থেকে সহায়তা নিতে পারেন।
এই সংস্থাগুলো
দুঃস্থ ও মামলা চালাতে অক্ষম ব্যক্তিদের আইনি সহায়তা দিয়ে থাকে। এই সংস্থাগুলো থেকে
সহায়তা পেতে হলে সেখানে সরাসরি যোগাযোগ করুন।
পুলিশ বাদী মামলা কি?
যে সকল অপরাধের
অভিযোগকারী পাওয়া যায় না সেই সকল মামলার বাদী সাধারণত পুলিশ হয়ে থাকে। পুলিশ বাদী হয়ে
যে মামলাগুলো করা হয় সেই মামলা পরিচালনা করে থাকেন সরকারি কৌসুলিরা।
পুলিশের মাধ্যমে
যে মামলাগুলো হয়ে থাকে, সাধারণভাবে সেগুলো পরিচালনা করে থাকে সরকারি কৌসুলিরা, যেমন
পিপি, এপিপি তার পক্ষে একজন আইনজীবী হয়ে থাকেন।
এছাড়াও যিনি
মামলা করেছেন তিনি একজন আইনজীবী নিয়োগ করতে পারেন কিংবা নিজেও আদালতের অনুমতি নিয়ে
মামলা পরিচালনা করতে পারেন।
শেষকথা:
আশাকরি মামলা
করা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা এই ইনফোটি থেকে পেয়ে গেছেন। এই ব্যাপারে আপনার মতামত, পরামর্শ
কিংবা যে কোন প্রশ্ন কমেন্ট করে আমাদের ও পাঠকদের জানাতে পারেন। আপনাদের যে কোনো কমেন্ট
আমরা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে থাকি।
এছাড়াও এই ইনফোটি আপনার কাছে প্রয়োজনীয় মনে হলে শেয়ার করে নিজের ওয়ালে রেখে দিতে পারেন, প্রয়োজনের সময় যাতে নিজের ওয়াল থেকে সহজেই খুঁজে নিতে পারেন।