বাসে উঠলে বমি হয় কেন? বমি থেকে মুক্তি পাবেন কিভাবে?

অনেকেই বাসে উঠরে বমি করে ফেলেন। অনেকে আবার বমি না করলেও বমি বমি ভাব নিয়ে অতিষ্ঠায় ভ্রমণ করে থাকেন। বাসে উঠলে বমি হয় কেন এবং এর থেকে পরিত্রান পাবেন কিভাবে তা নিয়ে আজকের ইনফো শেয়ার করা হলে।

বাসে উঠলে বমি হয় কেন? পরিত্রান পাবেন কিভাবে?

বমি হওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। তবে মূল কারণ একটাই, আর সেটা হলো পাকস্থলীতে হজম প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হওয়া। বাস, প্রাইভেট কার কিংবা মাইক্রোবাসে উঠলে সাধারণত মোশন সিকনেস হয়। এই মোশন সিকনেস হজম ক্রিয়ায় গোলমাল লাগায় ফলে আপনার বমি হয় ।

মোশন সিকনেস কি?

সাধারণত বাস, প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাস কিংবা এই ধরণে যানবাহনে যাত্রা করলে মোশন সিকনেস হয়। অর্থাৎ গতি ও জড়তার ফলে মস্তিষ্কে সমন্বয়হীনতার বাহনগুলোতে বমির সমস্যা হতে পারে।
আন্তঃকর্ণ আমাদের শরীরের গতি ও জড়তার ভারসম্য রক্ষা করে থাকে। আমার যখন গাড়িতে উঠি তখন অন্তঃকর্ণ মস্তিষ্কে বলে যে সে গতিশীল। কিন্তু আমাদের চোখ বলে ভিন্ন কথা। কেননা বসার সীট ও আশেপাশের সীটে বসা মানুষগুলো স্থীর থাকে।

ফলে মস্তিষ্কে একটি দন্দ শুরু হয়। চোখ দেখে আশেপাশে সবকিছুই স্থির রয়েছে। অপরদিকে অন্তঃকর্ণ মস্তিষ্কে খবর দিচ্ছে সে চলমান রয়েছে।

চোখ আর অন্তঃকর্ণের এই সমন্বহীনতার কারণে তৈরী হয় মোশন সিকনেস। এটি পাকস্থলীতে হজম প্রক্রিয়ায় মারাত্বক প্রভাব ফেলে।

বাসে বমি হয় কেন?

বিভিন্ন কারনে বাসে বমি হতে পারে। যেমন-

** মোশন সিকনেসের কারণে। বাসে উঠলে সাধারণত মোশন সিকনস হয়ে থাকে। আর এটি হজম প্রক্রিয়ার প্রভাব ফেলে। যার কারণে বাসে উঠা যাত্রীর বমি হয়। এছাড়াও আরো অন্যান্য কারনেও বমি হতে পারে।

** আপনার যদি কোন অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকে তাহলে বমি হতে পারে।

** অসুস্থতার জন্য বমি হতে পারে।

** বাজে কোন গন্ধের কারণে বমি হতে পারে।

আরো জানুন:





যাত্রা পথে বমি থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়

** গাড়িতে সামনের দিকে বসে পড়ুন। কেননা পিছনে বসলে গাড়ি বেশি গতিশীল মনে হয়ে থাকে।

** বমি হওয়ার পূর্ব অভিজ্ঞা থাকলে আগে থেকেেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। গাড়িতে জানালার পাশে বসার চেষ্টা করুন। জানালা খোলা রাখুন, বাহিরের বাতাস ভিতরে আসতে দিন। জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে থাকুন। ভিতরের দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকবেন না।

** যে দিকে গাড়ি চলছে তার বিপরীত মুখ করে বসবেন না। কেননা এতে আপনার বমি ভাব বেশি হতে পারে।

** গাড়িতে অন্য যাত্রীর বমি হওয়া দেখলে যদি বমি পায়, তাহলে সেদিকে মনোযোগ দিবেন না।

** হালকাভাবে চোখ বন্ধ করে রাখুন। ভ্রমণের আগের রাতে ভালোভাবে ঘুমানোর চেষ্ঠা করুন।

** হালকা কিছু খেয়ে বাসে উঠুন। কখনই খালি পেটে কিংবা ভ্রমণের আগে ভারী কিছু খেয়ে গাড়িতে উঠবেন না। যাত্রাপথে বাইরের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন, এসিডিটি হয় এমন খাবার ভ্রমণের সময় না খাওয়াই ভালো।

** গড়িতে উঠলে বমি হয় এমন চিন্তা করবেন না। নিজেকে শান্ত রাখুন, লম্বা লম্বা শ্বাস নিতে পারেন কিংবা বমির কথা ভুলিয়ে থাকতে অন্য কিছু করতে পারেন। গানও শুনতে পারেন।

** গাড়ি চলন্ত অবস্থায় বই পড়া ও মোবাইল ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।

** আদা বমি রোধের জন্য অনেক উপকারী, এছাড়াও এটি হজম করতে সাহায্য করে। তাই আদা কুঁচি চিবুতে পারেন, বমি ভাব দূর হয়ে যাবে। প্রয়োজনে আদা দিয়ে চা খেতে পারেন।

** দারুচিনি বমি ভাব দূর হতে ভুমিকা পালন করে থাকে। খাবার হজমে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি অনেক কার্যকরী ভুমিকা রাখে। তাই খাবার হজমের কারণে বমি হলে দারুচিনি খান।

** টকজাতীয় ফল বমি ভাব দূর করে থাকে। এছাড়াও লেবু পাতার গন্ধ, কমলা লেবুর গন্ধও বমি ভাব দূর করে। গরম লেবুর পানিতে লবণ মিশিয়ে খেতে পারেন। মাথাব্যাথা, বমি এবং বমিবমি ভাব দূর করতে এই পানি বেশ উপকারী। তবে গ্যাস্টিকের সমস্যার কারণে বমি হলে লেবু না খাওয়াই ভালো।

** যখনই বমি ভাব চলে আসবে তখনই এক টুকরা লবঙ্গ মুখে দিন। বমি ভাব দূর হওয়ার সাথে সাথে মুখের দুর্গন্ধও দূর হয়ে যাবে এতে।

** অ্যাসিডির সমস্যা থাকলে বা এর কারণে বমি বমি ভাব হলে পুদিনাপাতা খেতে পারেন। পুদিনা পাতা দিয়ে চা বানিয়ে খাওয়া যেতে পারে।

** খুব বেশী দীর্ঘ ভ্রমণ হলে বিরতি নিতে পারেন। বিরতির সময় হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নেওয়া অনেক ভালো । এতে বমি ভাব দূর হওয়ার পাশাপাশি মানসিকভাবে শান্তি পাবেন।

** বাসে উঠে চুইংগাম খেতে পারেন। এত আপনার মন ও মুখ ব্যাস্ত থাকবে। ফলে বমি হবে না।

**  উপরের পদক্ষেপে যদি আপনার সমস্যা সমাধান না হয়, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।

বাসে উঠলে বমি হয় কেন? বমি থেকে মুক্তি পাবেন কিভাবে? বাসে উঠলে বমি হয় কেন? বমি থেকে মুক্তি পাবেন কিভাবে? Reviewed by Home BD info on মার্চ ১৩, ২০২২ Rating: 5

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.