সুস্থ থাকার সবচেয়ে বড় উপায় হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখা কিংবা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। কেননা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি থাকলে যে কোন রোগ সহজেই আপনাকে আক্রমণ করতে পারবে না। আর দেহে যদি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সঠিক না থাকে তাহলে যে কোন শারীরিক সমস্যা ঔষুধ খেয়েও সহজে ভাল হতে চাইবে না। তাই আজকের ইনফোটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়, শরীর দুর্বল হলে কি ভিটামিন খেতে হবে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়, শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় কি তা নিয়ে সাজিয়েছি।
ছবি: পিক্সেল ডটকম
প্রতিটি মানুষের জন্য খুবই জরুরী এটি। চাই নারী হোক বা পরুষ হোক কিংবা শিশু হোক বা বৃদ্ধা হোক সবাইকে এই বিষয়ে যত্নবান হওয়া জরুরী। দেহের যাতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকে সেজন্য নিয়মিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। এখানে এমন কিছু খাবার উল্লেখ করা হলো যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে সেই সাথে আপনাকে রাখবে সুস্থ।
কি কি খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে?
সব রকম খাবার শরীরের শক্তির জন্য গ্রহণ করা প্রয়োজন। তবে বিশেষ কিছু খাবার রয়েছে যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। যেমন- দুদ্ধজাত খাবার, ভিটামিন ‘বি’ এবং ‘সি’ জাতীয় খাবার, শারীরিক ব্যায়াম ইত্যাদি।
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এই সমস্ত খাবার নিয়মিত রাখলে আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। আর শারীরিক পরিশ্রম বা শারীরিক ব্যায়াম সুস্থ থাকার জন্য খুবই জরুরী।
নিচে এমন কিছু খাদ্যের তালিকা দেওয়া হলো যা নিয়মিত গ্রহণে আপনার দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
এগুলো পড়তে পারেন-
যে সকল খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
আপনার দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য নিচের খাবারগুলো নিয়মিত গ্রহণ করুন। কেননা খাদ্যই আপনাকে প্রাকৃতিকভাবে শক্তিশালী করে তুলবে এবং রোগ ব্যধি থেকে মুক্ত রাখবে।
যে সকল খাবার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে তার তালিকা নিচে দেওয়া হলো।
১) রুটি, ময়দা, আটা, লিভার, মাছ, ডিম, ছত্রাক ও শস্যজাতীয় খাবার। এই সকল খাবারে বিশেষ করে আটা,ময়দা, চাপাতির মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি-৬ থাকে, যা আপনার দেহে প্লিহা ও থাইমাস গ্রন্থির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং অর্গান দুটি রোগ প্রতিরোধের জন্য সবচেয়ে বেশি ভুমিকা পালন করে থাকে।
এছাড়াও দেহের জন্য অন্য ‘বি’ ভিটামিনের গুরুত্ব অনেক। ফলিক এসিড টাটকা শাকসবজিতে পাওয়া যায়, ভিটামিন বি-১২ লিভার, মাছ, ডিম ও ছত্রাক জাতীয় খাদ্যে থাকে।
তাই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখতে এই সকল খাবার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত রাখুন।
২) ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। কেননা ভিটামিন ‘এ’ তে বিটাক্যারোটিন থাকে যা ত্বক ও মিউকাস মেমব্রেনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে, রোগ প্রতিরোধ তন্ত্রের তীব্রতা বৃদ্ধি করে। অ্যান্টিবডি রেসপন্ডে সাহায্য করে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে থাকে।
ভিটামিন ‘এ’ যুক্ত খাবারগুলো হচ্ছে- লালশাক, পুঁইশাক, টাটকা শাকসবজি ইত্যাদি। এছাড়াও গাজর, আম, কলা, পেঁপে, রঙিন ফলেও ভিটামিন ‘এ’ প্রচুর পরিমানে থাকে।
৩) ঘি, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখুন। এই সকল খাদ্যে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম থাকে, যা ম্যাগনেসিয়ামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে ইমিউন কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং দেহে চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তাই দুগ্ধজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে ভুলবেন না। এছাড়াও শাকসবজি, মাছ চীনাবাদাম ও ডালের মধ্যে প্রচুর পরিমানে ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।
৪) ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত খাবার। কেননা এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে। সাধারণত সামুদ্রিক মাছ, সামদ্রিক খাদ্য, মুরগি, লিভার, ডিমের কুসুম, শস্যজাতীয় খাবার, ইলিশ মাছ, মাছের তেল ইত্যাদির মধ্যে সেলেনিয়াম নামক খনিজ লবণ থাকে। এই খনিজ শ্বেত রক্তকণিকা ও ইমিউন এনজাইমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
৫) ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। এই খাবার দেহের ইমিউনিটির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। টাটকা শাকসবজি, চীনাবাদাম, সামুদ্রিক খাদ্য ও শস্যজাতীয় খাবারে প্রচুর পরিমানে ম্যাগনেসিয়াম থাকে।
৬) ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ। এই খাবারগুলো দেহের শ্বেত রক্তকণিকার কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কেমিক্যাল মেসেঞ্জার নাম্বার বৃদ্ধি করে। বিশেষ করে ইন্টাফেরন যা ইনফেকশনের প্রসেস প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।
ভিটামিন ‘ই’ সমৃদ্ধখাবারগুলো হচ্ছে- উদ্ভিদজাতীয় খাবার, শকসবজি, ফলমূল, ভেষজ তেল, শিম, শিমের বিচি, চীনাবাদাম, ইত্যাদি। প্রাণিজ খাদ্যের মধ্যে হচ্ছে- ডিম, ডিমের কসুম, মাছ, গোশত ও দুধে পাওয়া যায়।
এছাড়াও আমলকী, হরতকী, পেঁপে, তরমুজ, বাঁধাকপি, টকজাতীয় লেবু, কমলালেবু, পেয়ারা, ইত্যাদিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ‘ই’ পাওয়া যায়।
৭) জিংক সমৃদ্ধ খাবার। জিংক আমাদের শরীরের পুষ্টির জন্য একটি অতিপ্রয়োজনীয় উপাদান। এটি দেহের জাঞ্জাল কোষকে অর্থাৎ জীবাণু ধ্বংস করার পর যে কোষগুলোর মৃত্যু ঘটে সেগুলোকে মুক্ত করতে সাহায্য করে। জিংক দেহের বিভিন্ন এনজাইমের একটি অংশ এবং দেহের সব টিস্যুতেই এটি থাকে।
জিংক খনিজ সমৃদ্ধ খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, ডিম, সেরিয়াল, চিংড়ি, সামুদ্রিক খ্যদ্য ইত্যাদি। এই সকল খাবারে প্রচুর পরিমানে জিংক উপাদান পাওয়া যায়।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়
আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে চাইলে আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। আর তা হচ্ছে-
** নিয়মমিত সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।
** যে সকল খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে তা নিয়মিত খেতে হবে।
** পর্যপ্ত পরিমানে ঘুমাতে হবে। আপনার ঘুম কম হলে কিংবা রাতে ঘুমাতে গেলে ঘুম না আসলে কি করবেন বিস্তারিত জানতে
এখানে ক্লিক করুন।
** নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।
** জীবন থেকে দূরচিন্তা বিদায় করুন। দুরচিন্তা বা টেনশন মানুষ ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়।
নিয়মিত শারিরীক পরিশ্রম
দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সাথে শারীরিক পরিশ্রমের সম্পর্ক অত্যান্তু নিবিরভাবে জড়িত। কেননা একজন মানুষ যখন শারীরিক পরিশ্রম করে তখন তার প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গ কাজ করে।
আমরা জানি, কোন ব্যবহৃত যন্ত্র যখন ব্যবহার না করে ফেলে রাখি তখন যন্ত্রটি নষ্ট হয়ে যায় কিংবা তার কার্যক্ষমতা কমে যায়। এরুপে আপনি যখন শারিরীক পরিশ্রম না করবেন তখন শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যাঙ্গ অলস হয়ে পড়ে থাকবে এবং তার কার্যক্ষমতা কমে যাবে।
তাই দেহের রোগ প্ররিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং সুস্থ থাকতে নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করুন। এজন্য আপনি যদি নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারেন।
শিশুর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কি খাওয়াবেন?
অনেক মায়েরাই শিশুর স্বাস্থ ও তার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য চিন্তিত থাকেন। অনেকে ছোট শিশুকে সকাল বেলার হালকা রৌদ্রে এবং বিকাল বেলার হালকা রৌদ্রে শুয়ে রাখেন। এটা অবশ্য শিশুর হাড় মজবুদ করে এবং শিশুর শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি করে। শুধু শিশুদের জন্য এটি উাপকারি নয়। সকল বয়সের মানুষের জন্য এটি অত্যান্তু উপকারি।
শিশুর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত সুষম খাদ্যের প্রতি নজর দিতে হবে। কেননা খাবার শিশুর দেহকে সু-গঠিত করে তুলবে। শিশুকে যে খাবার নিয়মিত খাওয়াবেন তা হচ্ছে-
* মাতৃ দু্ধ
* হলুদ
* দই
* ডিম
* সবুজ শাকসবজি
* বাদাম
* ফলমূল ইত্যাদি।
ইনফো হিনস: রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়, শরীর
দুর্বল হলে কি ভিটামিন খেতে
হবে, শরীরের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়, শরীরে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, শিশুদের
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়
অন্যান্য ইনফো
গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তারেহর লক্ষণসমূহ কি কি?
কোন কোন সময় স্ত্রী সহবাস করলে গর্ভবতী হবে না?
যৌন সম্পর্কের ইচ্ছা কমে যায় কেন?
গর্ভধারণের ইতিবাচ পরীক্ষার ফলাফল ভুল হয় কেন?
গর্ভবতী নারীর পেটের সন্তান ছেলে না মেয়ে কিভাবে জানবেন?
বাসে উঠলে বমি হয় কেন? কিভাবে মুক্তি পাবেন?
কোন মন্তব্য নেই: