লাইসেন্স কোন ব্যবসা বা প্রতিষ্ঠানের জন্য নয়, এটি আপনার নিজের জন্য। অর্থাৎ লাইসেন্স ছাড়া যে কাজ করতে পারবেন না বা করলে জনসাধারণের কাছে কিংবা সরকারের কাছে অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত হবেন। বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম অনুযায়ী বেশ কিছু পেশায় কাজ করতে চাইলে প্রথমে আপনাকে লাইসেন্স নিতে হবে। যেকোনো পেশায় যোগ্য ও নির্ভরযোগ্য লোকদের সেবা নিশ্চিত করতে এ ধরনের লাইসেন্সিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
জনসাধারণের
অসচেনতার কারণে অনেক অসাধু লোক এসব পেশায় কাজ করে দেশ ও জাতীর ক্ষতি করতে পারে। এছাড়াও
আপনি যদি এসব পেশায় নিজেকে নিয়েজিত রাখতে চান তাহলে লাইসেন্স করে বৈধভাবে সম্মানজনক
উপায়ে উপার্জন করতে পারেন। কোন কাজ করলে আপনার নিজের পেশার জন্য লাইসেন্স নিতে হবে?
সেই সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
যে সকল পেশায় কাজ করতে হলে লাইসেন্স নিতে হয়?
মানুষ জীবন-যাপন
করার ক্ষেত্রে নিজেকে নানান পেশায় নিয়োজিত রাখেন। কিন্তু কিছু নির্দিষ্ট পেশা রয়েছে
যেগুলোতে কাজ করতে চাইলে আপনাকে লাইসেন্স নিতে হবে। এখানে আমরা কোন কোন পেশার জন্য
লাইসেন্স নিতে হবে তার সামারি দিয়েছি। পরবর্তীতে আমরা নির্দিষ্ট পেশার জন্য কিভাবে
লাইসেন্স নিতে হবে সেই বিষয়ে বিস্তরিত আলোচনা করবো ইনশাল্লাহ।
এমবিবিএস ডাক্তার (MBBS Doctor)
এমবিবিএস
পাশ করার পর, একজন ডাক্তার হিসাবে, আপনি যদি একটি প্রাইভেট চেম্বার খুলে চিকিৎসা সেবা দিতে চান, তাহলে আপনাকে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে বেশ কিছু নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। MBBS সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে “কিভাবে এমবিবিএস ডাক্তার হবেন” ইনফোটি দেখুন।
ডেন্টিস্ট (Dentist)
আপনি
যদি একজন ডেন্টিস্ট হন, তাহলে আপনাকে জেনারেল প্র্যাকটিশনারদের মতো বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। এর জন্য ন্যূনতম
বিডিএস ডিগ্রি প্রয়োজন।
নার্স এবং মিডওয়াইফ (Nurse and midwife)
একজন
নার্স বা মিডওয়াইফ হিসেবে
ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে বাংলাদেশ নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিল থেকে সার্টিফিকেট নেওয়া বাধ্যতামূলক। এই সার্টিফিকেট ছাড়া
কাউকে বৈধ বা স্বীকৃত নার্স
বা মিডওয়াইফ হিসেবে গণ্য করা হয় না।
ফার্মাসিস্ট (Pharmacist)
বাংলাদেশের
ফার্মাসি কাউন্সিল (PCB) বাংলাদেশে ফার্মাসিস্টদের লাইসেন্স প্রদান করে থাকে।
পেশাদার প্রকৌশলী (Professional engineer)
একজন
প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করার জন্য আপনাকে ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ
(IEB) থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। এই সংস্থাটি 3 ধরনের
লাইসেন্স অফার করে: ফেলোশিপ, মেম্বারশিপ এবং অ্যাসোসিয়েট মেম্বারশিপ।
উকিল (Advocate)
কোনো
আইনজীবী শুধু আইনি ডিগ্রি নিয়ে অ্যাডভোকেট হিসেবে কাজ করতে পারেন না। এ জন্য বাংলাদেশ
বার কাউন্সিল আয়োজিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সার্টিফিকেট পেতে হবে।
বেসরকারি শিক্ষক (Private teacher)
আপনি
যদি একটি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হতে চান তবে আপনাকে প্রাইভেট টিচার রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড সার্টিফিকেশন অথরিটি (এনটিআরসিএ)
দ্বারা পরিচালিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আপনার যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে। শিক্ষক নিবন্ধনের পুরো প্রক্রিয়াটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সুনির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী সম্পন্ন হয়।
পাইলট, কেবিন ক্রু এবং অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (Pilot, cabin crew and aeronautical engineer)
বাংলাদেশ
সিভিল এভিয়েশন অথরিটি বাংলাদেশে এভিয়েশন সেক্টরে পাইলট, কেবিন ক্রু এবং অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের লাইসেন্স প্রদান করে থাকে।
চার্টার্ড হিসাবরক্ষক (Chartered Accountant)
আপনি
যদি একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসাবে পেশাদার পরিষেবা প্রদান করতে চান তবে আপনাকে ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস
বাংলাদেশ (ICAB) থেকে একটি অডিট ফার্ম খোলার লাইসেন্স নিতে হবে।
গাড়ী চালক বা ড্রাইভার (Driver)
যারা পেশাদার গাড়ী চালক হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে চান তাদেরকে অবশ্যই ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হবে। এছাড়াও যারা অপেশাদার গাড়ী চালাতে চান তাদেরকেও লাইসেন্স করে নিতে হয়।
ড্রাইভিং লাইসেন্স সম্পর্কে আমাদের সাইটে আরো ইনফো রয়েছে। যেমন- ”অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম”, ”এসএমএস দিয়ে কিভাবে ড্রাভিং লাসেন্স এর অবস্থা জানা যায়?”, “ ড্রাইভিং স্মার্ট কার্ড চেক করবেন কিভাবে?”, “DL Checker কিভাবে ব্যব্হার করবেন?” ইত্যাদি।
শেষকথাঃ
আশাকরি কোন কোন পেশার জন্য আপনাকে লাইসেন্স নিতে হবে সেই বিষয়ে ধারণা হয়েছে। এছাড়াও আপনার কোন লাইসেন্স প্রয়োজন কিংবা এই বিষয়ে কোন মন্তব্য থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। যে কোন কমেন্ট আমরা গুরত্বের সাথে বিবেচনা করে থাকি।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন