ডলার এনডোর্সমেন্ট কি? কেন? কোথায় কিভাবে করবেন?

0

যারা বিভিন্ন দেশে ভ্রমণ করতে বা ব্যবসা কিংবা অন্য কোন কারণে লেনদেন করতে চান তাদের জন্য ডলার এনডোর্সমেন্ট করা বাধ্যতামূলক। অর্থাৎ এনডোর্সমেন্ট ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন না। এখন আপনার কাছে মনে হতে পারে যে, দেশের মুদ্রা থাকতে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করতে যাব কেন? এর সহজ উত্তর হলো দেশের মুদ্রা শুধুমাত্র দেশের ভিতরেই বৈধভাবে ব্যবহার করতে পারেন। বিদেশে নিয়ে যেতে পারবেন না। এছাড়াও বিদেশের মার্কেট বা প্রতিষ্ঠানগুলো দেশীয় নোট গ্রহণ করবে না। সেখানকার চাহিদা মেটানোর জন্য আপনাকে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করার প্রয়োজন হতে পারে। আজকের এই ইনফোটিতে আলোচনা করা হয়েছে “ডলার এনডোর্সমেন্ট কি? কেন? কোথায় কিভাবে করবেন?

ডলার এনডোর্সমেন্ট কি? কেন? কোথায় কিভাবে করবেন?

যারা বিদেশি ওয়েবসাইটগুলোতে ক্রয়-বিক্রয় করতে চান তাদেরকেও দেশে থাকলেও ডলার এনডোর্স করতে হবে। কেননা এনডোর্স করা ছাড়াও ডলার বা বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করা যায় না। আর এনডোর্সমেন্ট হচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করার অনুমোদন। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ইনফোটি শেষ পর্যন্তু পড়ুন।

 

ডলার এনডোর্সমেন্ট কি?

আমি যদি সহজভাবে বলি তাহলে বলেতে হবে যে, ডলার লেনদেন করার জন্য অনুমোতি বা অনুমোদন কিংবা বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করার সার্টিফিকেট। কেননা আপনি চাইলেই ডলার বা বৈদেশিক কোন মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবেন না।

তাই আপনাকে ডলার ক্রয় করার জন্য পাসপোর্টে এনডোর্স করে করতে হবে। টাকা দিয়ে কোথায় কার কাছ থেকে ডলার ক্রয় করেছেন তার অনুমোদন প্রমাণই হচ্ছে এনডোর্সমেন্ড।

 আর বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদিত ডিলার, মানি এক্সচেঞ্জ ও ব্যাংক ছাড়া অন্য কোথাও থেকে ডলার বা অন্য কোনো বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করা বেআইনি। সুতরাং বুঝতেই পেরেছেন যে, ডলার এনডোর্সমেন্ড করার গুরুত্বটা কি?


ডলার এনডোর্স কেন করবেন?

এতক্ষণ আলোচনা থেকে বুঝতেই পারছেন যে, ডলার এনডোর্সেমেন্ট করা কেন প্রয়োজন। তারপরও একটু বলে রাখি যে, বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোন দেশে ভ্রমণ, চিকিৎসা, পড়াশুনা, ব্যবসা কিংবা অন্য কোন কারণে অর্থের প্রয়োজন হয়, তখন কিন্তু আপনি সেখানে বাংলাদেশি নোট বা মুদ্রা ব্যবহার করতে পারবেন না।

এছাড়াও বাংলাদেশ থেকে অন্য কোন দেশে দশ হাজারের বেশি টাকা নিয়ে যেতে পারবেন না একসাথে। আইনগতভাবে এটা অবৈধ। তবে আপনি এনডোর্সমেন্ট করে প্রয়োজনীয় ডলার বা বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে যেতে পারেন।

সুতরাং বৈদেশিক অর্থ খরচ করার জন্য আপনাকে এনডোর্সমেন্ট করতে হবে। বৈদেশিক অর্থ (ডলার, রুপি, রিয়াল ইত্যাদি) বিভন্ন কারণে প্রয়োজন হতে পারে। যেমন- চিকিৎসার জন্য, ভ্রমণ করার জন্য, পড়াশুণার জন্য কিংবা ব্যবসা করার জন্য ইত্যাদি।


কিভাবে ডলার এনডোর্সমেন্ট করবেন?

ডলার এন্ডোর্সমেন্ট কি এবং কেন করবেন তা আমরা উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পেরেছি। এখন প্রশ্ন হলো ডলার এনডোর্সমেন্ট কিভাবে করবেন এবং কোথায় করবেন?

দুই ধরণের প্রতিষ্ঠান থেকে আপনি ডলার এনডোর্সমেন্ট করতে পারবেন। সরকার অনুমোদিত যে কোন ব্যাংক কিংবা মানি এক্সচেঞ্জ থেকে এই প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে হবে।

পাসপোর্ট এনডোর্সমেন্ট বা পাসপোর্ট এনডোর্স হচ্ছে মূলত ডলার এনডোর্সমেন্ট। বিভিন্ন জন বিভিন্ন নামে ডাকে আরকি। এর মূল বিষয় হচ্ছে বৈধভাবে বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করা।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি কি লাগে?

বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন প্রকার কাজগপত্রের প্রয়োজন হতে পারে। এছাড়াও ব্যাংকে এক ধরনের কাগজপত্র লাগতে পারে আবার মানি এক্সচেঞ্জ এর ক্ষেত্রে ভিন্ন ধরণের কাগজপত্র লাগতে পারে। তবে সাধারণ ভাবে যে কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন হয় তা নিম্নরুপঃ
  • পাসপোর্ট
  • ভিসা (যে দেশের জন্য এনডোর্স করবেন সেই দেশের ভিসার ফটোকপি/ ভিসা না হলে ভিসার আবেদন কপির ফটোকপি লাগতে পারে)
  • বিমানের টিকেট ফটোকপি
  • মানি এক্সচেঞ্জ এর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ফরম ইত্যাদি।

ব্যাংক থেকে এনডোর্সমেন্ট করার প্রক্রিয়া

দেশের সরকারি বেসরকারি যেকোনো ব্যাংক থেকে ডলার এনডোর্সমেন্ট করতে পারেন। এখানে মনে রাখা দরকার যে, ব্যাংকে এনডোর্সমেন্ট করার ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংকে করাটা সুবিধাজনক। কেননা সোনালী ব্যাংকে ডলার এনডোর্স করার জন্য একাউন্ট থাকার প্রয়োজন নেই।

অন্যান্য ব্যাংকের ক্ষেত্রে আপনার ঐ ব্যাংকের একাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক। আর সোনালী ব্যাংকের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পাসপোর্ট নিয়ে গেলেই হবে। পাসপোর্ট নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে বললেই হবে যে আপনি ডলার কিনবেন। তাহলে ব্যাংকের কর্মকর্তারা ঐ দিনের ডলার রেট অনুযায়ী টাকা হিসাব করে এবং সার্ভিস চার্জ কেটে ডলার দিয়ে দিবে এবং পাসপোর্ট এর শেষের পাতায় সিল মেরে দিবে।

সেই সাথে আপনাকে একটা কাগজ দিয়ে দিবে। এটাই মূলত এনডোর্সমেন্ট বা ডলার ক্রয় করার অনুমোদন সার্টিফিকেট। এই সুবিধার জন্য অনেক লোকজন সোনালী ব্যাংকে এনডোর্সমেন্ট করে থাকেন।


 সরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে শুধুমাত্র সোনালী ব্যাংকে একাউন্ট ছাড়া শুধু পাসপোর্ট নিয়ে ডলার এনডোর্সমেন্ট  করা যায়। অন্য সরকারি ব্যাংক বা বেসরকারি সকল ব্যাংকে এনডোর্স করার জন্য সেই ব্যাংকে একাউন্ট থাকা লাগবে।

সোনালী ব্যাংক ছাড়া অন্য সরকারি ব্যাংকে এনডোর্স করার ক্ষেত্রে

মনে করুন, আপনি নতুন ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করেছেন কিন্তু এখনো ভিসা পান নাই। এই ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ভিসা আবেদন ফর্মের ফটোকপি এবং পাসপোর্ট ডাটা পেজের ফটোকপি অর্থাৎ পাসপোর্টের নামের পেজের কপি এবং শেষ পৃষ্ঠার আগের পৃষ্টার কপি এবং অরিজিনাল পাসপোর্ট নিয়ে যেতে হবে।

শুধু পাসপোর্ট নিয়ে ব্যাংকে গেলে এনডোর্স করতে পারবেন না। তবে ভিসা পাওয়ার পর গেলে শুধু পাসপোর্ট এবং পাসপোর্ট এর ফটোকপি নিয়ে গেলেই হবে। প্রয়োজনীয় ফি নিয়ে আপনাকে ডলার দিয়ে দিবে।

বেসরকারি ব্যাংকে এনেডোর্স করার নিয়ম

বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে এনডোর্স করার ক্ষেত্রে একটু ঝামেলা রয়েছে। কেননা লোকাল শাখাগুলোতে সাধারণত এনডোর্স করা হয় না। শুধুমাত্র এডি শাখা বা ফরেইন এক্সচেঞ্জ শাখাগুলোতে এই সুবিধা নিতে পারেন। তবে লোকাল শাখাতে যদি এনডোর্স করতে যান তাহলে সেখানে আপনাকে একটা ফরওয়াডিং লেটার দেওয়া হবে।

এই লেটার নিয়ে সেই ব্যাংকের যে শাখায় এই সুবিধা রয়েছে সেই শাখায় গিয়ে ডলার নিতে পারবেন। আমার জানামতে বিভাগিয় শহরগুলো ছাড়াও বিশেষ কিছু বাণিজ্য এলাকাতেও বেসরকারি ব্যাংগুলোর এডি শাখা রয়েছে।

তবে আপনি যে ব্যাংকেই পাসপোর্ট এনডোর্স করেন না কেন প্রথমে জেনে নেওয়া উচিৎ যে, সেই ব্যাংকের এনডোর্স করার প্রক্রিয়া কি বা কিভাবে প্রসেস করতে হবে পাসপোর্ট এনডোর্স করার জন্য।


মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার ক্রয় করার নিয়ম

ব্যাংক থেকে ডলার ক্রয় করার চেয়ে মানি এক্সচেঞ্জগুলো থেকে ডলার ক্রয় করা বা এনডোর্স করা খুবই সহজ এবং অনেক ঝামেলা থেকে মু্ক্তি পাওয়া যায়। আপনি শুধু পাসপোর্ট নিয়ে গেলেই ব্যাংকের মতোই ঐ দিনের রেট অনুযায়ী হিসেব করে ডলার দিয়ে দিবে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র এক্সচেঞ্জ ফি দিতে হবে আপনাকে।

প্রথমে তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করবে যে, আপনার আগে ভিসা আছে কিনা, কেননা অনেকেই ব্যাংক স্টেটমেন্ট না দিয়ে ডলার এনডোর্সমেন্ট দিয়ে ভিসা আবেদন করে থাকেন।

এই ক্ষেত্রে আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, বর্তমানে মানি এক্সচেঞ্জ ডলার এনডোর্সমেন্ট দিয়ে ভিসা আবেদন করা যায় না। অনেকেই বর্তমানে ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করার ক্ষেত্রে মানি এক্সচেঞ্জ এনডোর্সমেন্ট জমা দেন। 

তাই মনে রাখবেন, ইন্ডিয়ান ভিসা আবেদন করার ক্ষেত্রে ব্যাংক স্টেটমেন্ট কিংবা কোন ব্যাংকের ডলার এনডোর্সমেন্ট লাগবে।

এনডোর্সমেন্ট ছাড়াই আপনি মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার ক্রয় করতে পারবেন। যদিও ব্যাপারটি অবৈধ বলে মনে হয় আমার কাছে, তবুও অনেকে দুই/তিনশত টাকা বাচাতে গিয়ে এমনটি করে থাকেন।

আপনি লক্ষ রাখুন যে, এনডোর্সমেন্ট ছাড়া ডলার ক্রয় করা অবৈধ। আর অনেক সময় বর্ডারে ডলার এনডোর্সমেন্ট চেক করে থাকে। 

তাই মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার ক্রয় করার সময় আপনি চাইলেই ওরা এর ফি নিয়ে পাসপোর্টের শেষের দিকে পাতায় সিল মেরে দিয়ে এনডোর্সমেন্ট সার্টিফিকেট দিয়ে দিবে। আর আপনিও থাকবেন ভেজাল মুক্ত এবং নিশ্চিন্ত। 


ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড এনডোর্সমেন্ট কি?

এখন প্রায় ব্যাংকগুলো ডুয়েল কারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিড বা ডেবিট কার্ড অফার করে থাকে। আপনার যদি কোন ডুয়াল কারেন্সি কার্ড থাকে যেমন ধরুন- ভিসা কিংবা মাস্টর কার্ড (ক্রেডিট বা ডেবিট) বিশ্বের যে কোন দেশের এটিএম বুথ থেকে ডলার উত্তোলন করতে পারবেন। এছাড়াও অনলাইনেও বিশ্বের যে কোন দেশে পেমেন্ট করতে পারেন।

আপনার যদি কার্ড না থাকে তাহলে খুব কম খরচেই ডেবিট কার্ড নিতে পারেন। যে কোন ব্যাংক থেকে এই ধরণের কার্ড নেওয়ার সময় অবশ্যই কার্ড ফি এবং সার্ভিস চার্জ সম্পর্কে জেনে নিবেন। এবং দেখবেন কোন হিডেন চার্জ রয়েছে কিনা।

এই কার্ডও আপনি এনডোর্স করতে পারেন। কার্ড এনডোর্স করলে আপনি ডলার এর বদলে এটি ব্যবহার করতে পারেন। দেশিয় মুদ্রার ক্ষেত্রে যেমনটি করে থাকেন আরকি।

ইন্ডিয়ান ভিসার জন্য কত ডলার এনডোর্স করতে হয়?

আপনার যদি ব্যাংক একাউন্ট থাকে তাহলে ব্যাংক স্টেটমেন্ট দিয়ে ভিসা আবেদন করুন। আর যদি ব্যাংক একাউন্ট না থাকে কিংবা আপনি ডলার এনডোর্সমেন্ট দিয়ে ভিসা আবেদন করতে চান তাহলে ভিসা আবেদনের জন্য কমপক্ষে আপনাকে ১৫০ ডলার এনডোর্স করতে হবে।

তবে কোন মানি এক্সচেঞ্জ থেকে এনডোর্স করলে হবে না। কোন ব্যাংকের মাধ্যমে করতে হবে। এই বিষয়ে উপরেই আলোচনা করা হয়েছে।

এছাড়াও আপনি আইভিএসি ঢাকা এবং আইভিএসি চট্রগ্রামে সকাল ৯.০০ টা থেকে বিকাল ৪.০০ টা পর্যন্ত স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার বুথে আন্তুর্জাতিক ভ্রমণ কার্ড এবং ক্যাশ ডলার এন্ডোর্সমেন্ড করতে পারবেন।

যমুনা ফিউচার পার্কের স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়াতে ডলার এনডোর্স করতে পারেন। তবে শুনেছি সেখানে নাকি ক্যাশ ডলার দেওয়া হয় না। শুধুমাত্র তাদের ট্রাভেল কার্ড দেওয়া হয়। তবে এর জন্য তারা প্রায় ১৫০০ টাকার মতো বাড়তি চার্জ নিয়ে থাকে।

যেভাবেই এনডোর্স করুন না কেন আপনাকে একটা ফি প্রদান করা লাগবে। আর চার্জ সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাবেন সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওয়েবসাইটে কিংবা তাদের অফিসে। অন্য কোথাও থেকে সংগ্রহ করলে হয়তো ভুলও হতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা কি?

বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয়-বিক্রয় করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের রয়েছে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা। এই নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যাংকগুলো কিংবা মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো লেনদেন করে থাকে। আপনি চাইলেই যে কোন পরিমান ডলার এনডোর্স করতে পারবেন না।

নির্দেশনা অনুযায়ী ডলার এনডোর্স করার বিভিন্ন খাতে ডলারের পরিমান ভিন্নতা দেখা যায়। যেমন- ভ্রমণ করার ক্ষেত্রে এক রকম আর চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে ভিন্ন রকম। নিচে এই বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো।

কত ডলার পর্যন্ত এনডোর্স করা যাবে?

আপনি ইচ্চা করলেই যে কোন পরিমাণ ডলার এনডোর্স করতে পারবেন না। এখানে আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, আপনি কি জন্য ডলার ক্রয় করবেন, তার উপর ডিপেন্ড করে ডলার এনডোর্স করার পরিমান তারতম্য হতে পারে।

অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংকিং এবং মুত্রা ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী বিদেশ ভ্রমণের জন্য বাৎসরিক কত ডলার পর্যন্ত খরচ করা যাবে এবং অন্যান্য খাতে যেমন- চিকিৎসার জন্য, লেখাপড়ার জন্য ইত্যাদি বিষয়ে নীতিমালা রয়েছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী আপনাকে ডলার এনডোর্স করতে হবে।

আমরা সাধারণত বেশিরভাগ লোক বিদেশে যাই ভ্রমণ কিংবা চিকিৎসার জন্য। এছাড়াও লেখাপড়া, চাকরি কিংবা অন্যান্য বিষয়ের জন্য আপনাকে ডলার ক্রয় করা লাগতে পারে। কোন বিষয়ের জন্য কত ডলার এনডোর্স করা যাবে, নিচে সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো।

বিদেশে ভ্রমণ করার জন্য কত ডলার এনডোর্স করা যাবে?

ভ্রমণ করা অনেকেরই প্রধান শখ। আমিও ভ্রমণ করতে খুবই ভালবাসি। কেননা ভ্রমণ করার মজাই আলাদা। কিন্তু জানেন কি? ভ্রমণ করার জন্য একজন ব্যক্তি বছরে কত ডলার এনডোর্স করতে পারবেন?

২০২০ সালে এই বিষয়ে একটি নতুন নীতিমালা হয়েছিল। সেখানে বলা আছে কোন ব্যক্তি এক বছরে সর্বোচ্চ ১২,000 (বার হাজার) ইউ এস ডলার বা সবমানের বৈদেশিক মুদ্রা এনডোর্স করতে পারবে।

আগের নিয়মে এই বিষয়ে একটু শর্ত ছিল যে, সার্কভুক্ত দেশ এবং মিয়ানমারের জন্য 5000 (পাঁচ হাজার) ইউএস ডলার বা সমপরিমান বৈদেশিক মুদ্রা। আর সার্কভুক্ত দেশ এবং মিয়ানমার ব্যাতিত অন্যান্য দেশের জন্য 7000 (সাত হাজার) ইউএস ডলার বা সমপরিমান বৈদেশিক মুদ্রা এনডোর্স করা যেত। 

কিন্তু বর্তমানে এই নিয়ম আর কার্যকর নেই। অর্থাৎ ২০২০ সাল থেকে দেশ বা অঞ্চল ভেদে এনডোর্স করার ক্ষেত্রে ডলার পরিমানের তারতম্য নেই। এখন ভ্রমণ করার জন্য প্রাপ্তবয়স্করা এক বছরে সর্বোচ্চ ১২,০০০ ডলার এবং ১২ বছরের কম বয়সীরা এর অর্ধেক অর্থাৎ ৬০০০ ডলার এনডোর্স করতে পারবে।


চিকিৎসার জন্য ডলার এন্ডোর্স করার পরিমাণ

চিকিৎসার জন্য অনেক বেশি ডলার প্রয়োজন হতে পারে আপনার। কেননা চিকিৎসার জন্য রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে থাকে যে, কত ডলার বা বৈদেশিক মুদ্রা লাগতে পারে। এই ক্ষেত্রে আপনাকে ব্যাংক থেকে ডলার এনডোর্স করতে হবে।

চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখিয়ে ১০,০০০ (দশ হাজার) ডলার কিংবা বৈদেশিক মুদ্রা এনডোর্স করতে পারেন। এর বেশি যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনাকে ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

চিকিৎসার জন্য যখন ১০,০০০ (দশ হাজার) এর বেশি বৈদেশিক মুদ্রার প্রয়োজন হবে তখন ব্যাংকে যোগাযোগ করলে তারা আপনাকে ডলার কিংবা বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থা করে দিবে।

ব্যাবসার জন্য ডলার এনডোর্স করার নিয়মঃ

 আপনি যদি আমদানি বা রপ্তানি ব্যাবসা করতে চান তাহলে ডলারে লেনদেন করার প্রয়োজন হতে পারে। এই ক্ষেত্রে ডলার এনডোর্স করার নিয়মটা আলাদা।

অর্থাৎ ব্যাবসা করার জন্য ডলার এনডোর্স করতে হলে আপনাকে ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি (লেটার অব ক্রেডিট) করতে হবে। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে “এলসি কি? কিভাবে, কোথায় এবং কেন করবেন?” ইনফোটি দেখুন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !