আপনি একজন নারী, মেয়ে, মহিলা তাইতো! আপনার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো মাসিক ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড। মেয়েরা সাধারণত কিশোর বয়সে মাসিক সম্পর্কে কৌতুহোলি হয়ে থাকে। তাই মাসিক সম্পর্কে তাদের পরিস্কার ধারণা দেওয়ার প্রয়োজন অবিভাবকদের। কেননা মাসিক হচ্ছে মাতৃত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ। মাসিক ছাড়া মা হওয়া সম্ভব নয়। অনেক মেয়েরা অনলাইনে জানতে চান যে, মেয়েদের মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে? এখানে জেনে রাখা ভালো যে, মেয়েরা যখন নতুন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হোন, তখন তাদের কাছে এই প্রশ্নটি কমন। যাইহোক আজকে আমরা এই বিষযে আলোচনা করবো।
সাধারণত একজন
মেয়ে যখন কিশোরি হয়, তখন তার মাসিক ঋতুস্রাব বা পিরিয় শুরু হয়। এলাকা বা অঞ্চলভেদে
মেয়েরদের বয়সের তারতম্য হয় মাসিক শুরু হওয়ার ক্ষেত্রে। তবে সাধারণত ৯ থেকে ১৩ বছর বয়সে
একজন মেয়ের মাসিক ঋতুস্রাব শুরু হয়।
মাসিক ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড কি?
মাসিক ঋতুস্রাব
বা পিরিয়ড সাধারণত একটি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যা উচ্চতর স্তন্যপায়ী
প্রাণীদের [মহিলা লিঙ্গ] প্রজননের জন্য অভিযোজিত হয়। প্রাকৃতিকভাবে নারীদের যেীনিপথে
প্রতি মাসে একটি
নির্দিষ্ট সময়ে মাসিক হয়। যার কারণে ইংরেজিতে একে বলা হয় পিরিয়ড।
এক কথায় মাসিক
ঋতুস্রবা বা পিরিয়ড প্রক্রিয়াটিকে বলা যায় এভাবে যে, যখন একটি মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হয়,
প্রাকৃতিকভাবেই তখন তার দেহের হরমোনের প্রভাবে প্রতিমাসে একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর মেয়েটির
যৌনিপথে যে রক্ত ও স্রাব বের হয়, তাকে মাসিক ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড বলে।
এখানে বলে
রাখা ভালো যে, মেয়েটি যখন বিবাহিত হয় এবং তার স্বামীর সাথে সহবাস করে তখন যদি মেয়েটির
ডিম্বাণু তার স্বামীর শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হয় এবং ডিম্বাণুটি তার ফ্যালোপিয়ান টিউবে
থাকা অবস্থায় এন্ডোমেট্রিয়ামের সাথে সংযুক্ত থাকে, তাহলে তার এই মাসিক ঋতুস্রবা বা
পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যায়। এটাও স্বাভাবিক প্রাকৃতিক নিয়ম। কেননা মেয়েটি এখন তার পেটে একটি
শিশু জন্ম দিতে যাচ্ছেন।
অর্থাৎ মেয়েদের
মিলনের পর তাদের মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে এটিকে গর্ভবস্থার প্রাথমিক লক্ষণ হিসাবে
বিবেচনা করা হয়। আবার মেয়েদের বয়স যখন ৪৫ বছর অতিক্রম করে তখন তাদের মাসিক ঋতুস্রাব
হয় না। এটাও স্বাভাবিক নিয়ম।
মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে?
মেয়েদের মাসিক
না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভবনা থাকে কিনা সেই বিষয়ে এতক্ষণে আপনার ধারণা হয়েছে। সাধারণভাবে
কোন নারী যখন পরুষের সাথে মিলন করে তখন পরুষের শ্রুক্রাণু এবং নারীর ডিম্বাণুর সাথে
নিষিক্ত হয়।
নারীর যৌনিপথের
ফ্যালোপিয়ান টিউবে এই নিষিক্ত ডিম্বাণু ও শুক্রাণু সংযুক্ত হওয়ার অর্থ এই যে, নারী
এখন গর্ভধারণ করেছে। ফলে গর্ভের সন্তুান প্রসব না হওয়ার আগে তার আর মাসিক ঋতুস্রাব
হবে না।
তাই সাধারণভাবে
মেয়েদের মাসিক না হলে ধরে নেওয়া হয় যে, মেয়েটি এখন গর্ভধারণ করেছে । ফলে সে এখন বাচ্চা
জন্ম দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করবে।
তবে অন্য
কোন কারণেও মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই মাসিক বন্ধ হলে ঠিক কি কারণে মাসিক
বন্ধ হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
গর্ভধারণের
প্রধান লক্ষণ হিসাবে মাসিক বন্ধ হওয়াকে দেখা হলেও গর্ভাবস্থার প্রাথমিক আরো বেশকিছু
লক্ষণ রয়েছে। একটি মেয়ে যখন গর্ভধারণ করতে যায়, তখন তার শরীরে নানা রকম পরিবর্তন ও
উপসর্গ দেখা যায়।
গর্ভাবস্থার
প্রথম সপ্তাহে নারীর শরীরে যে লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে তা জানতে “নারীর গর্ভধারণেরপ্রথম সপ্তাহের লক্ষণসমূহ কি কি?” ইনফোটি দেখুন।
আরো জানুন:
নারীরা কখন সহবাস করলে গর্ভবতী হয় না?
আপনি গর্ভবতী হয়েছেন কি না বাসায় বসে পরীক্ষা করবেন কিভাবে?গর্ভাধারণ পরীক্ষার ফলাফল ভুল হয় কেন?
গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে কিভাবে জানবেন?
গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা: গর্ভকালীন সময় কি খাওয়া উচিৎ এবং কি খাওয়া উচিৎ নয়?