ত্বীন হল এক প্রকার ডুমুরের মত ফল। গাছটির বৈজ্ঞানিক নাম Ficus carica। এটি Moraceae পরিবারের Ficus গণের একটি সপুষ্পক উদ্ভিদ। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে খুব লাভজনকভাবে এর চাষ হচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশেও। ফাইকাস জেনাসের প্রায় 800 প্রজাতির মধ্যে আনজি হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতি। এই ফলের আকার ডুমুরের চেয়ে বড়; এটি একটি জনপ্রিয় মিষ্টি ও রসালো ফল। হিন্দি, মারাঠি, ফার্সি ও উর্দুতে এই ফলটিকে বলা হয় আনজির আর আরবিতে বলা হয় ত্বীন।
এটি বিশ্বের অনেক দেশে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিম এশিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। আফগানিস্তান থেকে পর্তুগালে বাণিজ্যিকভাবে ফল চাষ করা হয়। এর আদি বাসস্থান মধ্যপ্রাচ্য। অঞ্জি বা ত্বীন গাছ 6 মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।
ত্বীন ফল কি?
আঞ্জির ফলকে
আরবিতে ত্বীন ফল বলা হয়। অর্থাৎ যে ফলকে হিন্দি, মারাঠি, ফার্সি ও উর্দুতে আঞ্জির বলা
হয় সেই ফলটিকে আরবিতে ত্বীন বলা হয়।
মুসলিমদের
পবিত্র গ্রন্থ কুরআনে 'টিন' (ডুমুর) নামে একটি অধ্যায় বা সূরা রয়েছে। সেখানে এই ফলটিকে
ঈশ্বরের বিশেষ আশীর্বাদ বা কৃপা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। বাইবেলে এই ফলের উল্লেখ
আছে; এটি বলে যে ক্ষুধার্ত যিশু একটি ডুমুর গাছ দেখেছিলেন কিন্তু কোন ফল ছিল না, তাই
তিনি গাছটিকে অভিশাপ দিয়েছিলেন।
ত্বীন বা আঞ্জির গাছের বর্ণনা
ফাইকাস
প্রজাতির প্রায় 800টি প্রজাতির মধ্যে
আনজি হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ
প্রজাতি। এই ফলের আকার
ডুমুরের চেয়ে বড়; এটি একটি জনপ্রিয় মিষ্টি ও রসালো ফল।
অঞ্জি বা ত্বীন গাছ 6 মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। হিন্দি, মারাঠি, ফার্সি ও উর্দুতে এই
ফলটিকে বলা হয় আনজির আর আরবিতে বলা
হয় কিশোর।
এটি
বিশ্বের অনেক দেশে, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য এবং পশ্চিম এশিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয় এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থকরী ফসল। আফগানিস্তান থেকে পর্তুগালে বাণিজ্যিকভাবে ফল চাষ করা
হয়। এর আদি বাসস্থান
মধ্যপ্রাচ্য।
মুসলিমদের পবিত্র গ্রন্থ কুরআনে 'টিন' (ডুমুর) নামে একটি অধ্যায় বা সূরা রয়েছে। সেখানে এই ফলটিকে ঈশ্বরের বিশেষ আশীর্বাদ বা কৃপা হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই ফলটি বাইবেলে উল্লেখ আছে; এটি বলে যে ক্ষুধার্ত যিশু একটি ডুমুর গাছ দেখেছিলেন কিন্তু কোন ফল ছিল না, তাই তিনি গাছটিকে অভিশাপ দিয়েছিলেন। (তথ্যসুত্র: উইকিপিডিয়া)
ত্বীন ফল
খাওয়ার
নিয়ম
সাধারণত অন্যান্য
ফলের মতোই এই ফলটি খাওয়া যায়। যেমনি ভাবে আপনি আঙ্গুর, লিচু, আপেল খান তেমনি ভাবে ত্বীন
ফল খেতে পারেন।
ত্বীন ফলের
বিশেষ উপকার পেতে কিছু নিয়ম অবলম্বণ করে খাওয়া যায়। যেমন- যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য দুধে
ভিজে রেখে দুধসহ ফলটি খাওয়া।
এছাড়াও সালদ
তৈরি করে খেতে পারেন। ভাতের সাথে সলাদ খাওয়ার পাশাপাশি জুস তৈরি করেও খাওয়া যেতে পারে
এই ফলটি।
ত্বীন ফলের গুরুত্ব কি?
ত্বীন ফলে
রয়েছে দেহের জন্য অনেক উপকারি খনিজ। যেমন- ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, বি ভিটামিন,
পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন।
তাই নিয়মিত
খাদ্য তালিকায় এই ফলটি অনেক গুরুত্ব বহন করে।
ত্বীন ফলের উপকারিতা
বরকতময় এই
ফলটির বহু উপকারিতা রয়েছে। নিচে ত্বীন ফলের উপকারিতা ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা করা হলো-
ত্বকের সৌন্দর্যে ত্বীন ফলের ভুমিকা
বয়স
বৃদ্ধির লক্ষণ হিসেবে মুখে বলি রেখার মতো সমস্যা দেখা দেয়। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ত্বকের বলিরেখা দূর করতে Tine খুবই কার্যকরী।
এটি
ত্বকের গভীরে কাজ করে তাই এটি ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করতেও কার্যকর। ভিটামিন সি এবং এর
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্রিয়া ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় ত্বককে সুন্দর ও কোমল করে।
চুলের
যত্নে ত্বীন ফল
শুধু
সুস্বাস্থ্য নয়, চুলের যত্নেও টিনের বিকল্প নেই। এটি চুল পড়া কমাতে সাহায্য করবে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন সি, ই এবং ম্যাগনেসিয়াম
যা চুলের জন্য উপকারী।
চুলের
ময়েশ্চারাইজার হিসেবে এর খ্যাতি বেশ
পুরনো। এটি মাথার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে।
দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় ত্বীন ফল
এই
আশীর্বাদযুক্ত ফলটি নিয়মিত সেবন আপনার দৃষ্টিশক্তি উন্নত করতে পারে। ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের কারণে বয়স্কদের দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়।
এতে
উপস্থিত ভিটামিন এ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন
প্রতিরোধ করে এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। এই ফলটি রেটিনার
ক্ষতি প্রতিরোধ করতেও সক্ষম।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট গুণমান
ফলটির
রয়েছে চমৎকার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্ষমতা। এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট
ক্রিয়া আপনার শরীরকে জীবাণু মুক্ত রাখে এবং রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
এটি
প্লাজমা লাইপোপ্রোটিন বাড়াতেও পরিচিত।
গলা ব্যথা উপশম করে
ত্বীন
ফল গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে। এটি শুধুমাত্র গলা ব্যথা উপশম করে না, এটি প্রতিরোধ করে। এটি ভোকাল কর্ডের জন্যও বেশ উপকারী।
ত্বীন
ফল টনসিল সারাতে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধে এটি অনেক
ভুমিকা পালন করে থাকে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে ত্বীন ফল
আশ্চর্যজনক
হলেও সত্য, এই আশ্চর্যজনক ফলটি
ওজন কমাতে সাহায্য করার পাশাপাশি রোগা মানুষের জন্য সুখবর বয়ে আনতে পারে।
এই
ফলের উচ্চ ফাইবার উপাদান শরীরের অতিরিক্ত ক্যালোরি কমাতে সক্ষম।
আবার
এই ফলটি বেশি পরিমাণে খাওয়া হলে এর উন্নত পুষ্টি
উপাদান ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখবে। তাই এটি চর্বি এবং রোগা উভয়ের জন্যই একটি আশির্বাদ।
হাড় রক্ষণাবেক্ষণে ত্বীন ফল
ক্যালসিয়াম
হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ খনিজটি
আমাদের শরীরে তৈরি হয় না। তাই খাদ্যের মাধ্যমেই শরীরের চাহিদা মেটাতে হয়।
ত্বীনে
সঞ্চিত ক্যালসিয়াম আপনার শরীরের ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করবে এবং আপনার হাড় মজবুত ও মজবুত করবে।
এটি
পটাশিয়ামেরও একটি ভালো উৎস, যা হাড়ের ক্ষয়
রোধে উপকারী।
ত্বীন ফল ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
গবেষণায়
দেখা গেছে যে মহিলারা তাদের
খাদ্যের অংশ হিসাবে প্রতিদিন Tine গ্রহণ করেন তাদের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কম থাকে।
প্রধানত
এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা ক্যান্সার প্রতিরোধে
ভূমিকা রাখে। কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধেও এটি খুবই কার্যকরী।
রক্তস্বল্পতা
দূর করে ত্বীন ফল
প্রচুর
পরিমাণে আয়রনের কারণে, আপনার শরীর রক্তাল্পতা এবং আয়রনের ঘাটতি পূরণ করবে। মহিলাদের শরীরে আয়রনের সঠিক পরিমাণ বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই ফল
গর্ভাবস্থায়ও মায়ের শরীরে আয়রনের পরিমাণ নিশ্চিত করতে পারে। এতে উপস্থিত আয়রনের কাজ রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ ও দূর করতে
সাহায্য করে।
যৌন শক্তি
বাড়ায়
ত্বীন
ফল
ক্যালসিয়াম,
পটাসিয়াম, আয়রন এবং জিঙ্ক সমৃদ্ধ, টিআইএন একটি যৌন সম্পূরক হিসাবে বিবেচিত হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা সেক্স হরমোন
এবং ইস্ট্রোজেন এবং অ্যান্ড্রোজেন তৈরিতে সাহায্য করে।
এই
ফলটি নারী-পুরুষের বিভিন্ন যৌন সমস্যার সমাধান করে এবং যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে।
এর
উপকারিতা পেতে, ত্বীন ফল সারারাত দুধে
ভিজিয়ে রাখুন এবং সকালে পান করুন।
হজমে সাহায্য
করে
এর
উচ্চ ফাইবার উপাদান আপনার হজমশক্তি উন্নত করবে। এটি হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। টিন ফলটি ডায়রিয়ার চিকিৎসায়ও কাজ করে এবং পুরো হজম প্রক্রিয়াকে সহজতর করে।
আপনার
হজম শক্তির উন্নতির জন্য নিয়মিত সকালে 2-3 চা পানিতে ভিজিয়ে
পান করুন। আপনি চাইলে এর সাথে মধু
মিশিয়ে নিতে পারেন।
কোলেস্টেরলের মাত্রা
কমায়
উচ্চ
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা মানে হার্টের ঝুঁকি। তাই রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
এই
ফলের ফাইবার দ্রুত শরীর দ্বারা শোষিত হয়। এর ফাইবার দ্রুত
দ্রবীভূত করে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এছাড়াও ফলটিতে উপস্থিত পেকটিন কোলেস্টেরল কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
করে
আপনি
যদি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাহলে নিয়মিত টিন ফল খেলে আপনার
রক্তচাপ প্রত্যাশিতভাবে কমতে শুরু করবে।
ফলটিতে
প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে। এটি উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।