বিয়ের আগে বর কনে উভয় উভয়পক্ষকে অনেক কিছু জানা প্রয়োজন, আপনি যদি একজন পাত্র হয়ে থাকেন তাহলে আপনার হবু স্ত্রী সম্পর্কে কি কি জানবেন বিয়ে করার আগে ভাবছেন? বিয়ের আগে একটি মেয়ে সম্পর্কে কি কি জানা জরুরী জানতে চান? কিন্তু আপনি কতটা জানতে পারবেন তা নির্ভর করবে আপনার অনুসন্ধান এবং ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির উপর।
বিয়ে করার আগে দেখাশুনা করা জরুরী। কারণ বিয়ে করার পর কিছু বিষয় হয়তো আপনাকে বিব্রত করতে পারে। তাই আগেই খোঁজ খবর নিয়ে জানুন।
যদিও কোন মেয়ের ব্যক্তিগত বিষয় জানা তেমন সম্ভব হয় না
তবুও সর্বোচ্চ
খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। যা খুঁজতে হবে
তা নিচে দেওয়া হল। যারা মুসলিম তারা “মুসলিম বিবাহ
গাইডলাইন” ইনফোটি দেখে নিতে পারেন। এখানে সামগ্রিকভাবে যা দেখা প্রয়োজন তা আলোচনা করা হয়েছে।
পড়ুন: বিবাহ বার্ষিকী শুভেচ্ছা: বাংলা কালেকশন
পাত্রী হিসাবে মেয়েটির সম্পর্কে কি কি জানবেন?
Ø
পাত্রী
হিসাবে একটি মেয়ের প্রথম যে বিষয়টি দেখা জরুরী তা হলো মেয়েটি ধর্মীয় বিশ্বাস ও নীতি মানে
কিনা। কারণ প্রতিটি ধর্মই ন্যায়ের নীতি শিক্ষা দেয়। আর যে ব্যক্তি ধর্মীয়
নীতি অনুসরণ করে তার পক্ষে পাপ কাজ এবং অনৈতিক কার্যকলাপ করা কঠিন।
Ø মেয়েটির প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং অন্যান্য যোগ্যতা কী। কারণ যে সত্যিকারের শিক্ষিত, সে বহুগুণবর্তী হয়ে থাকে। এতে জ্ঞানের অনেক স্তর রয়েছে। সে তার জ্ঞান ব্যবহার করে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে। মানুষের ধরন বোঝার চেষ্টা করুন। মনে রাখুন, জ্ঞানীরা সহজেই বিশ্বের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন। মেয়েটি জ্ঞানী হলে অবশ্যই আপনি এক অসাধরণ সম্পদ হিসাবে আপনার স্ত্রীকে দেখবেন।
Ø
মেয়েটির
পরিবারের অর্থনৈতিক
কাঠামোও দেখে নিবেন। কেননা মেয়েটি
কিছু প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বড় হয়েছে কিনা। এটি একটি মেয়ের
সারা জীবনের জন্য একটি ধারণা হিসাবে কাজ করে থাকে। আর স্বভাবতই, একজন বড়লোকের মেয়ের বেশি খরচ করার প্রবণতা থাকে এবং পৃথিবী কতটা কঠিন তা বোঝার ক্ষমতা
একটু কমই থাকবে বড়লোকের মেয়েদের। অন্যদিকে, মেয়েটি যদি একেবারেই দরিদ্র হয়, তাদের বেড়ে ওঠার অভিজ্ঞতা ভয়াবহ। একটি মধ্যবিত্ত বাড়িতে বসবাসের জন্য সংগ্রাম করে, অনেকে একটি বৃদ্ধির মানসিকতা তৈরি করে। এই কারণে নিজের
অবস্থা বিবেচনা করে মেয়ের পরিবারের আর্থিক শ্রেণী নির্বাচন করে বিয়ে করবেন। (পরিবেশগত অবস্থা বিবেচনায় কিছু পার্থক্য হতে পারে, সবাইকে
একই সূত্রে পরিমাপ করা যায় না এবং করবেনও না, এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ক্ষেত্রে কী হয় তা তুলে ধরার জন্য বলা হয়েছে)
Ø মেয়েটির আগের সম্পর্ক ছিল কি না, সম্পর্কটা মানসিক বা শারীরিক যাই হোক। কেননা একে এক ধরনের অভ্যাস বা অভিজ্ঞতাও বলা যেতে পারে। এমনও হতে পারে যে, মেয়েটি ডিভোর্স হয়েছে কিংবা করেছে এটা গোপন করলে পরবর্তীতে ঝামেলা সৃষ্টি হতে পারে। অভিজ্ঞ ব্যক্তির অভিজ্ঞতা না চাইলেও কাজে লাগানোর সম্ভাবনা বেশি। তাদের মধ্যে পরিবর্তন আরও অনুভূতি দেয়, তাদের মধ্যে সম্পর্কের প্রবাহ যে কোনও সময় কাজ করতে পারে। বিদেশে অবস্থানকালে বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অনেকের।
Ø মেয়েটির চিন্তাধারা কি বৈজ্ঞানিক নাকি কুসংস্কার? এই বিষয়ে খোলামেলা কথা বলাই শ্রেয়।
Ø
বাস্তববাদী
বা আবেগপ্রবণ কিনা জানার চেষ্টা করুন।
কেননা মেয়েটি যদি বাস্তববাদী হয় তবে কঠিন
পরিস্থিতি সহজেই মেনে নিতে পারবে। আর যদি আবেগপ্রবণ
হয়, তাহলে সারাজীবন নিজেকে একজন অসুখী ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করবে।
মেয়েরা হয়তো এই লেখাটি পড়ে গড় গড় করে আমার প্রতি রাগ করতে পারেন। না আগে রাগ হইয়েন না, শেষ পযর্ন্ত পড়ুন। তারপরে না হয় রাগ হইয়েন। রাগ হওয়ার কারণ হিসাবে যদি ধরেন যে, বিয়ে হওয়ার আগে একটি মেয়ের কি কি বিষয় জানা জরুরী তা বলেছেন কিন্তু বিয়ে হওয়ার আগে একটি ছেলের সম্পর্কে কি কি জানা জরুরী তা বলছেন না কেন?
এখন আপনাকে
প্রশ্ন করি, একটি ছেলে যখন আপনাকে দেখতে আসে তখন কি আপনি চোখ বন্ধ করে থাকেন? যদি না
থাকেন তাহলে জেনে নিন বিয়ের আগে একটি ছেলে সম্পর্কে কি কি জানা জরুরী।
বিয়ের আগে ছেলে সম্পর্কে কি কি জানা জরুরী?
মেয়ের মতো ছেলেটিও ধর্মীয় বিশ্বাস ও নীতি মানে কিনা তা দেখে নেওয়া জরুরী। কেননা প্রতিটি ধর্মই ন্যায়ের নীতি শিক্ষা দেয়। আর যে ব্যক্তি ধর্মীয় নীতি অনুসরণ করে তার পক্ষে পাপ কাজ এবং অনৈতিক কার্যকলাপ করা কঠিন।
ছেলেটি কর্মট
কিনা। কেননা ছেলে কুরা হলে তার জীবন অশান্তির পাশাপাশি পরিবারেরও অশান্তির কারণ হতে
পারে। বাপের অনেক সম্পদ থাকলেও ছেলে কুরা হলে সেই সম্পদ অল্প দিনের মধ্যেও শেষ করে
ফেলতে পারে।
ছেলেটি সৎ
কিনা তা দেখা জরুরী। অসৎ হলে জীবন অশান্তিতে ভরপুর থাকবে।
ছেলেটির শিক্ষাগত
এবং অন্যান্য যোগ্যতাও জেনে নিবেন। আপনার শিক্ষার সাথে যেন মেসিং হতে পারে।
আপনি একজন
সুন্দরী হিসাবে আপনার জীবন সঙ্গীকে কেমন চান সেটাও বিবেচনা করবেন।
পাত্রী
দেখতে যাওয়ার সময় ছেলেরা কি ভাবে?
পাত্রী
দেখতে যাওয়ার সময় ছেলেরা সাধারণত বেশ উত্তেজিত থাকে। তারা
জানতে চায়, পাত্রী কেমন হবে, তার সাথে তাদের কেমন মানাবে। তারা
পাত্রীর চেহারা, চরিত্র, শিক্ষা, পরিবার ইত্যাদি বিষয়ে ধারণা পেতে চায়।
পাত্রী দেখতে
যাওয়ার
সময়
ছেলেরা
যা
করে:
- তারা নিজেদের যথাসম্ভব ভালোভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে যায়। তারা
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কাপড় পরে, সুগন্ধি ব্যবহার করে এবং নিজেদের চুল-দাড়ি ঠিকঠাক করে নেয়।
- তারা পাত্রীর পরিবারের সাথে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে। তারা
তাদের সাথে কথা বলে, তাদের মতামত শুনে এবং তাদের সাথে মিলেমিশে থাকার চেষ্টা করে।
- তারা পাত্রীর সাথে কথা বলে, তার সাথে পরিচিত হওয়ার চেষ্টা করে। তারা
তার পছন্দ-অপছন্দ, আগ্রহ-অনাগ্রহ, শিক্ষা-দীক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চায়।
- তারা পাত্রীর পরিবারের সাথে বিয়ের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করে।
ছেলেদের কি
বিষয়
খেয়াল
রাখা
উচিত?
- তারা যেন পাত্রীর পরিবারের সাথে ভালো ব্যবহার করে। তারা
যেন তাদের সম্মানহানি না করে।
- তারা যেন পাত্রীর সাথে অপ্রাসঙ্গিক বা অযাচিত প্রশ্ন না করে।
- তারা যেন পাত্রীকে বিরক্ত না করে।
পাত্রী
দেখতে যাওয়ার সময় ছেলেদের মনে রাখতে হবে যে, এটি একটি গুরুত্বপূর্ন পদক্ষেপ। এটি
তাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তাই
তারা যেন এই সময়টি ভালোভাবে
কাজে লাগায় এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
উপসংহার:
ইসলামিক নিয়ম
অনুযায়ী, বিবাহ হল বিবাহযোগ্য দুইজন নারী ও পুরুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক প্রনয়নের
বৈধ আইনি চুক্তি ও তার স্বীকারোক্তি। এছাড়াও ইসলামে কনে তার নিজের ইচ্ছানুযায়ী বিয়েতে
মত বা অমত দিতে পারে। একটি আনুষ্ঠানিক এবং দৃঢ় বৈবাহিক চুক্তিকে ইসলামে বিবাহ হিসেবে
গণ্য করা হয়, যা বর ও কনের পারষ্পারিক অধিকার ও কর্তব্যের সীমারেখা নির্ধারণ করে।
তাই বিয়ের আগে একটি মেয়ে সম্পর্কে কি কি জানা জরুরী এবং মেয়ের জন্য ছেলে কি কি বিষয় জানা জরুরী তা জেনে নিলে পরবর্তীতে অনেক ঝামেলা থেকে মুক্ত থাকা যায়। ফলে দাম্পত্ত জীবণও অনেক সুখের হয়।
অন্যান্য ইনফো জানুন:
কোর্ট ম্যারেজ কি? কোর্ট ম্যারেজ করে বিয়ে করলে আইনগতভাবে কেন বৈধ হবে না?
বিয়ের জন্য জিনিসপত্রের ক্রয়ের তালিকা
শুভ বিবাহ শুভেচ্ছা বার্ষিকী বাণী বা বিবাহ বার্ষিকী ফেসবুক স্ট্যাটাস কালেকশন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন