হাঁস পালনের আবদ্ধ পদ্ধতি কত প্রকার ও কি কি?

হাঁস পালন করে বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা করা যায়। নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জ জেলার বিভিন্ন গ্রামে হাঁস পালন করে স্বচ্ছল জীবন ফিরে পেয়েছেন অনেকে। একটি পরিপক্ক হাঁস বছরে 300টি পর্যন্ত ডিম দিতে পারে। এই হাঁসের নাম খাকি ক্যাম্পবেল এবং ইন্ডিয়ান রানার। নদীর পাড়, পুকুর পাড় ও ভেজা জমিতে হাঁস পালন খুবই লাভজনক। হাঁস পালনের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে। আজকের এই ইনফোটিতে আলোচনা করা হয়েছে “হাঁস পালনের আবদ্ধ পদ্ধতি কত প্রকার ও কি কি? সুবিধা অসুবিধা” ইত্যাদি সম্পর্কে।

হাঁস পালনের আবদ্ধ পদ্ধতি কত প্রকার ও কি কি?


হাঁস পালনে লাভবান হওয়ার জন্য খামারি ভাইদের নিম্নলিখিত বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে:- হাঁসের জাত, হাঁসের বাচ্চা নেওয়ার জায়গা, ব্রুডিং সময় ব্যবস্থাপনা, হাঁস খাওয়ানোর ব্যবস্থা, বিভিন্ন বয়সের হাঁসের খাবার তৈরি, হাঁসের ঘর ব্যবস্থাপনা, হাঁসের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা, টিকাদানের সময়সূচি, টিকাদান তালিকা। হাঁস পালন ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানা থাকলে একজন খামারি নিঃসন্দেহে সফল হতে পারেন। যাইহোক, হাঁস পালনের আবদ্ধ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে লেখাটি শেষ পযর্ন্ত পড়ুন।

(ads1)


হাঁস পালনের আবদ্ধ পদ্ধতি

আবদ্ধ পদ্ধতিতে পরিবেশ নিয়ন্ত্রিত ঘরে হাঁসগুলোকে সবসময় আবদ্ধ অবস্থায় রাখা হয়। বাচ্চা হাঁস (৪-৬
সপ্তাহ) পালনের জন্য এই পদ্ধতি খুবই উপযোগী। আবদ্ধ পদ্ধতি তিন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন-

1. মেঝে পদ্ধতি
ii. খাঁচা পদ্ধতি বা ব্যাটারি পদ্ধতি
iii. তারজালির মেঝে পদ্ধতি


1.মেঝে পদ্ধতিতে হাঁস পালন

এই পদ্ধতিতে হাঁসের বাচ্চাগুলো আবদ্ধ অবস্থায় মেঝেতে পালন করা হয়। এ ধরনের মেঝেতে লিটার ব্যবহার
করা হয়ে থাকে। খাবার এবং পানি দিয়ে লিটার যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য ঘরের এককোণে তারজালের উপ-
পানি পাত্র ও খাদ্য পাত্র রাখা হয়।

মেঝেতে হাঁস পালনের সুবিধাসমূহ-

• হাঁসগুলোকে ভালোভাবে পরিচর্যা করা যায়।
• এই পদ্ধতিতে খরচ কম লাগে।
• এই পদ্ধতিতে শ্রমিক কম লাগে ।

মেঝেতে হাঁস পালনের অসুবিধাসমূহ-

• ঘরের লিটার ঘন ঘন পরিবর্তন করতে হয়।
• বাসস্থান সহজেই স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যায় তাই বাসস্থান সহজেই কলুষিত হয়।

ii. খাঁচা বা ব্যাটারি পদ্ধতিতে হাঁস পালন

খাঁচা পদ্ধতিতে হাঁসের বাচ্চাগুলো আবদ্ধ অবস্থায় খাঁচায় পালন করা হয়। এ ধরনের খাঁচায় খাদ্য ও পানি দেয়ার আলাদা ব্যবস্থা থাকে । 
খাবার এবং পানি দিয়ে লিটার যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য ঘরের এককোণে তারজালের উপর পানি পাত্র ও খাদ্য পাত্র রাখা হয়। এ পদ্ধতিতে হাঁসের বাচ্চাগুলোকে খাঁচায় পালন করা হয়ে থাকে। 

প্রতিটি বাচ্চার জন্য ০.৭৫ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন হয়। বাচ্চা পালনের জন্য এ পদ্ধতি খুবই সুবিধাজনক।

(ads2)

খাঁচায় হাঁস পালনের সুবিধাসমূহ

• এই পদ্ধতিতে বাচ্চা হাঁস পালন করা সহজ।
• অনেকগুলো বাচ্চা একসাথে পালন করা যায়।
• সহজে বর্জ্য পদার্থ পরিষ্কার করা যায়।

খাঁচায় হাঁস পালনের অসুবিধাসমূহ

• এই পদ্ধতিতে বড় হাঁস পালন করা যায় না।
• এই পদ্ধতির প্রাথমিক খরচ বেশী হয়।

iii. তারের জালের মেঝেতে হাঁস পালন পদ্ধতি

এক্ষেত্রে হাঁসের বাচ্চাগুলোকে তারের জাল দিয়ে নির্মিত মেঝেতে পালন করা হয়ে থাকে। প্রতিটি বাচ্চার জন্য
০.৫-০.৭৫ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন হয়। 
এ পদ্ধতিতে ঘরের মেঝে থেকে উঁচু করে তারের জাল দেয়া হয় এবং তারের জালের ফাঁক যাতে ১.৫ বর্গ ইঞ্চির বেশি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মাচার চারপাশে ১-২ ফুট বেড়া দিতে হবে যেন হাঁসের বাচ্চা বাইরে পড়ে না যায়। 
এই পদ্ধতিতে হাঁস পালন করলে প্রাথমিক খরচ একটু বেশি হয়।

তারের জালের মেঝেতে হাঁস পালনের সুবিধাসমূহ

• বাচ্চা হাঁস পালনের জন্য এ পদ্ধতি সুবিধাজনক।
• হাঁসের ঘর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে সুবিধা হয়।
• খাদ্য ও পানি সরবরাহের সুবিধা হয়।

তারের জালের মেঝেতে হাঁস পালনের অসুবিধাসমূহ

• তারের জাল বাবদ খরচ বেশি হয়।
• সাধারণত বেশি বয়স্ক হাঁস পালন করা যায় না।


শেষকথাঃ

হাঁস পালনের আবদ্ধ পদ্ধতি তিন প্রকার। যথা- ১. মেঝে পদ্ধতি ২. খাঁচা পদ্ধতি বা ব্যাটারি পদ্ধতি ৩. তারজালির মেঝে পদ্ধতি ইত্যাদি। এই তিন প্রকারের মধ্যে আপনার যেটি সুবিধাজনক হয় সেটি আপনি ব্যবহার করবেন।


আরো জানুন






একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger]

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget