ঋতুস্রাব বা মাসিক কিংবা পিরিয়ড সম্পর্কে মানুষজন যে সকল প্রশ্ন করে থাকে তা নিম্নরুপ:
* ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব কালো হয় কেন?
* ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব বা মাসিকের রক্ত জমাট বাধে কেন?
* পিরিয়ডের রং বাদামি হয় কেন?
* মাসিকের রক্ত কম হলে করণীয় কি?
* ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব কম হওয়ার কারণ কি?
* মেয়েদের ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব কি?
* ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব বন্ধ করার উপায় কি?
* ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব কেন হয়?
* ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব হলে করণীয় কি? ইত্যাদি ইত্যাদি।
আমাদের পিরিয়ড সংক্রান্ত ইনফোগুলোতে এই সকল প্রশ্নের উত্তর ইতিমধ্যেই দিয়েছি। আজকে আমরা এই সংক্রান্ত আরো কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
মেয়েদের ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব কি
মেয়েদের জীবনে একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হচ্ছে ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব। এটি একটি সাভাবিক প্রক্রিয়া। সকল মেয়েদেরই নির্দিষ্ট বয়সে এই স্রাব দেখা দেয় এবং প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময় পর পর হতে থাকে।
মেয়েদের ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব কি এই বিষয়ে আপনি যদি বিস্তারিত জানতে চান। যেমন- একজন মেয়ের কখন মাসিক শুরু হয় এবং কখন বন্ধ হয়ে যায়। কত বয়সে মাসিক শুরু না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে? ইত্যাদি। তাহলে আমাদের সাইটের “রজঃস্রাব বা ঋতুস্রাব কি? এবং নারীদের এটি কেন হয়?” ইনফোটি দেখুন।
মেয়েদের ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব কেন হয়?
আমরা এখানে এই প্রশ্নে উত্তর দেব না। কেননা এই উত্তর আমরা অন্য একটি ইনফোতে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনার যদি জিজ্ঞাসা থাকে যে, মেয়েদের ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব কেন হয়? তাহলে “নারীদের জীবনে কেন পিরিয়ড সংঘটিত হয়” ইনফোটি দেখুন।
এখানে আমরা মাসিক সংক্রান্ত অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
মাসিক কালো হলে কি করবেন?
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, ভুক্তভুগি নারী পিরিয়ডের মধ্যে গাঢ় রঙের পিরিয়ড অনুভব করে। কালো রং এর মাসিক দেখে ভীত হওয়ার কিছুই নেই।
কারণ, অনেক সময় জরায়ু থেকে রক্ত একটু দেরিতে বের হলেই রক্তের রং এমন হয়। যাইহোক, পরপর কয়েক মাস গাঢ় রঙের মাসিক হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
মাসিকের রক্ত রক্ত জমাট বাঁধার কারণ কী?
এস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন এন্ডোমেট্রিয়াম বৃদ্ধি এবং ঘন করে। এখান থেকে ডিম নিষিক্ত হয়। ভারী মাসিক রক্তপাতকে ডাক্তারি ভাষায় “হেভি মেনস্ট্রয়াল ব্লিডিং” বলা হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে অনেক সময় তরলের পরিবর্তে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। এটি অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে হতে পারে। রক্তের রং গাঢ় বাদামী বা কালো হতে পারে।
অনেক সময় চাপের রক্তও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়। পিরিয়ডের শুরুতে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। কমবয়সী মেয়েরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়। অনেকেই আছেন যাদের প্রথম থেকেই তলপেটে ব্যথা বেশি থাকে। এই সমস্যাকে বলা হয় 'পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ'। এটি যোনি এবং ফ্যালোপিয়ান টিউবের সংক্রমণের সাথেও ঘটে থাকে।
মাসিকে অত্যধিক রক্তপাত হলে কি ঘটে?
এটির কারণে যা ধারণা করা হয় তা হলো অ্যানিমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর এই সমস্যা চলতে থাকলে পরবর্তীতে গর্ভধারণের সম্ভাবনা থাকে।
ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরন এবং থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণেও এই একই সমস্যা হতে পারে।
এছাড়াও মানসিক চাপ, উদ্বেগ। ডায়েট বা লাইফস্টাইলের কারণে আপনার ঋতুস্রাব অধিক হতে পারে।
পিরিয়ডের রং বাদামি হয় কেন
ভারী মাসিক রক্তপাতকে ডাক্তারি ভাষায় “হেভি মেনস্ট্রয়াল ব্লিডিং” বলা হয়। প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে অনেক সময় তরলের পরিবর্তে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। ফলে অতিরিক্ত রক্তপাতের কারণে হতে পারে। আর এই সময় রক্তের রং গাঢ় বাদামী বা কালো হতে পারে।
এছাড়াও অনিয়মিত মাসিক হলে মাসিকের রং বাদামি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে অন্য কোন রোগের কারণে আপনার রজঃস্রাবের রং বাদামি দেখা যেতে পারে।
ঋতুস্রাব বা মাসিকের রক্ত কম হলে করণীয় কি?
বিভিন্ন কারণে মাসিকের রক্ত কম হতে পারে। যেমন:-
1. সাধারণত বয়ঃসন্ধিকালে পিরিয়ডের অনেক সমস্যা দেখা যায়। এছাড়াও বিভিন্ন বয়সে এখন বিভিন্ন হরমোনের তারতম্যও পিরিয়ডের উপর প্রভাব ফেলে।
2. ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হলে রক্তপাত কম হয়। বেশি হলেও সমস্যা আছে। এছাড়াও আপনার খাদ্যতালিকায় অতিরিক্ত ফাস্টফুড, চিকেন, মাটন, ডিম থাকলে তাও পিরিয়ডের ওপর প্রভাব ফেলে। এছাড়াও, খাবারের মধ্যে দীর্ঘ ব্যবধান থাকলে, গ্যাস এবং অম্বল হওয়ার প্রবণতা থাকে।
3. কোনো কারণে গর্ভধারণ হলে প্রথমে দাগ দেখা দেয়। পিরিয়ডের জন্য অনেকেই এই ভুল করেন। ফলে অনেকেই বুঝতেও পারেন না কখন তারা গর্ভবতী হন। সন্দেহ থাকলে বা কোনো কারণে পিরিয়ড মিস হয়ে গেলে অবশ্যই প্রেগন্যান্সি টেস্ট করুন।
4. বুকের দুধ খাওয়ানোর পরেও পিরিয়ড আসতে সময় লাগে। কারণ সন্তান প্রসবের পর ডিম্বস্ফোটন বিলম্বিত হয়।
5. এমনকি যারা নিয়মিত পিল খান তাদেরও পিরিয়ডের সময় এই সমস্যা হতে পারে। কারণ এই পিল ডিম্বস্ফোটন প্রতিরোধ করে।
6. মানসিক চাপেরও অনেক প্রভাব রয়েছে। কারণ আপনি যদি খুব চাপে থাকেন তবে আপনার হয় বেশি ব্যথা হবে বা কম পিরিয়ড হবে। নানা শারীরিক সমস্যা লেগেই থাকে।
7. অতিরিক্ত পরিশ্রমও পিরিয়ডকে প্রভাবিত করে। কখনও খুব সামান্য, কখনও কখনও শারীরিক প্রভাব খুব বেশি হয়। যারা নাচ করেন, জিম করেন, অতিরিক্ত ওজন তোলেন তাদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাটি খুবই সাধারণ।
8. প্রতিদিন একটি সুষম খাদ্য অনেক সমস্যা থেকে দূরে রাখতে পারে। ফলমূল ও শাকসবজি অবশ্যই খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
9. পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এই সমস্যা বেশি হয়। কারণ তাদের স্থূলতা, হরমোনজনিত সমস্যা, আর সব সমস্যা সেখান থেকেই তৈরি হয়। এই সমস্যার জন্য যে পিল নেওয়া হয় তা পিরিয়ড রোধ করে। PCOS-এ আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও টাইপ 2 ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
10. পলিসিস্টিক ডিম্বাশয় ছাড়াও অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও হালকা পিরিয়ডের কারণ হতে পারে। তাই দুই মাস এভাবে থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
শেষকথাঃ
আশাকরি, রজঃস্রাব বা ঋতুস্রাব বিষয়ে আনেব বিষয় জেনে গেছেন এই লেখাটি থেকে। আপনার কাছে যদি এটি প্রয়োজনীয় মনে হয় তাহলে শেয়ার করে নিজের ওয়ালে রেখে দিন। প্রয়োজনের সময় যাতে নিজের ওয়াল থেকে দ্রুত খুঁজে নিতে পারেন।