ব্যক্তির স্বাস্থ্যস্থিতি উন্নয়ন ও সংরক্ষণের জন্য রোগ নির্ণয় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রোগ নির্ণয় করা না হলে উচ্চমাত্রার চিকিত্সা প্রদান করা কঠিন হবে। এছাড়াও সঠিক রোগ নির্ণয় করা না হলে রোগের কারণ স্পষ্ট হয় না এবং এর উপচার বিষয়ে নির্দিষ্ট হয়না। সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করা না হলে চিকিৎসা করা সম্ভব নয় কিংবা ভুল চিকিৎসা হতে পারে। ফলে স্বাস্থ্যঝুকি আরো বেড়ে যেতে পারে।
সঠিক রোগ নির্ণয় করার জন্য পরীক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ। পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিত্সার প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করে রোগ নির্ণয় করা হয়। পরীক্ষার মাধ্যমে উন্নয়নশীল স্বাস্থ্য মাপার সাথে রোগের কারণ এবং ধরণ, সম্ভাব্য উপসর্গ এবং উপচার পরামর্শ জানা যায়। তাছাড়া সঠিক রোগ নির্ণয় করা পরিবেশে পরিবার সদস্যদের প্রতি সচেতন হতে সাহায্য করে এবং অন্যদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে।
রোগ নির্ণয়ের জন্য টেস্ট করা প্রয়োজন কারণ রোগ নির্ণয়ের সঠিক উপায় হল এটি অর্থাৎ সঠিক রোগ নির্ণয়ের জন্য অবশ্যই করণীয় হচ্ছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা। একটি সঠিক রোগ নির্ণয় করা যায় তখন পরবর্তী চিকিত্সা এবং সঠিক ঔষধ নির্বাচনে সহায়তা করে।
আরো জানুন: নেবুলাইজার কি? কিভাবে ব্যবহার করবেন?
রোগ নির্ণয় করা জন্য স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা কেন প্রয়োজন?
রোগ নির্ণয়ের জন্য টেস্ট করা প্রয়োজন কারণ রোগ নির্ণয়ের সঠিক উপায় হল অবশ্যই করণীয়। একটি সঠিক রোগ নির্ণয় করা যায় তখন পরবর্তী চিকিত্সা এবং সঠিক ঔষধ নির্বাচনে সহায়তা করে। আমার কিছু উদাহরণ হল:
অ্যার্থ্রাইটিস ও স্বল্পতা: রোগের নির্ণয় একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। যখন কেউ জয়েন্ট পেইন এবং স্বল্পতা অনুভব করে, তখন সঠিক রোগ নির্ণয় করা দরকার। একটি সঠিক রোগ নির্ণয় করা যায় তখন রোগের ধরণ ও মাত্রা জানতে পারেন এবং সেই ভিত্তিতে চিকিত্সার পরামর্শ পাওয়া সম্ভব হয়।
হৃদরোগ: কোন ব্যক্তি যখন হৃদরোগের সন্দেহ করে, তখন হৃদরোগের সঠিক রোগ নির্ণয় করা দরকার। রোগ নির্ণয়ের জন্য টেস্ট করা দরকার এবং সেটি চিকিত্সকদের সঠিক পরামর্শ প্রদান করতে সহায়তা করে। একজন চিকিত্সক একটি রোগ নির্ণয় করার জন্য পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের তথ্য সংগ্রহ করে এবং সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে রোগ নির্ণয় করে। যেমন, একজন রোগীর জন্য হৃদরোগ নির্ণয় করতে হলে হৃদয়ের ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম (ECG), হৃদপেটের এক্স-রে বা এক্কের প্রোটিনের জন্য পরীক্ষা করতে হতে পারে।
এছাড়াও, কিছু রোগে রোগ নির্ণয় করতে ল্যাব টেস্টগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেমন মলের পরীক্ষা, ক্রিয়াশক্তির পরীক্ষা, হেমোগ্লোবিনের পরীক্ষা এবং বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যায়।
যদি সঠিক রোগ নির্ণয় না করা হয় তবে ত্রুটিপূর্ণ চিকিত্সা করা সম্ভব হয়। অস্পষ্ট রোগ নির্ণয় বা ভুল রোগ নির্ণয় এর ফলে প্রথমে নির্দিষ্ট রোগের লক্ষণগুলি মিথ্যা রোগের জন্য ভুল হতে পারে। একটি সঠিক রোগ নির্ণয় মূলত সঠিক চিকিত্সা নির্বাচনে ব্যবহৃত হয় যা সম্পূর্ণরূপে সমাধান হতে সাহায্য করে।
যদি সঠিক রোগ নির্ণয় না করা হয় তবে চিকিত্সক সঠিক ট্রিটমেন্ট সিলেক্ট করতে না পারে এবং সঠিক রোগ নির্ণয় ছাড়াও চিকিত্সা প্রদান করতে পারে। এটি পেশাদার দিক থেকে বেশি কার্যকর নয় এবং রোগের কমপক্ষে একটি সঠিক প্রাক্তনের সৃষ্টি করতে পারে।
এগুলো আপনার প্রয়োজন হতে পারে...
মাসিকের সময় অতিরিক্ত ব্যাথা হয় কেন? করণীয় কি?
মাসিকের কতদিন পর গর্ভধারণ হয় না?
মেয়েদের মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভবনা থাকে?
গর্ভবতী হয়েছেন কিনা কিভাবে বুঝবেন?
কোন সময় সহবাস করলে গর্ভধারণ হয় না?
স্বাস্থ্য পরীক্ষা কেন গুরুত্বপূর্ণ?
স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হলে ব্যক্তির শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার সম্পর্কে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা যায়। সেই তথ্য দ্বারা চিকিৎসক বা স্বাস্থ্য পরামর্শদাতা ব্যক্তির স্বাস্থ্য সম্পর্কে সঠিক নির্ণয় করে পরিমাপ ও তথ্য ব্যবহার করে উপযুক্ত চিকিত্সা বা পরামর্শ প্রদান করতে পারে।
যেমন, শরীরে কোন রোগ আছে কি না, রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট এবং দুর্বলতা ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়। এছাড়াও পরীক্ষার মাধ্যমে সম্পর্কিত ব্যক্তির পূর্ববর্তী চিকিৎসার সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা যায় যাতে চিকিৎসক সঠিক চিকিত্সা প্রদান করতে পারে।
স্বাস্থ্যপরীক্ষা সম্পন্ন করা ব্যক্তির স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করার একটি উপযোগী পদক্ষেপ। এটি কয়েকটি বিশেষ কারণে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে:
প্রথমতঃ, স্বাস্থ্যপরীক্ষা সম্পন্ন করে ব্যক্তির স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই তথ্য ব্যক্তির স্বাস্থ্য সম্পর্কে চিকিৎসকের জ্ঞান বৃদ্ধি করে এবং সেই তথ্যের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা প্ল্যান তৈরি করা যায়।
স্বাস্থ্যপরীক্ষার মাধ্যমে স্বাস্থ্যবিষয়ক সমস্যার চিহ্ন সনাক্ত করা হয়। মানে, যদি ব্যক্তির কোন স্বাস্থ্যসমস্যা থাকে, তাহলে সে সেই সমস্যার উপর ফোকাস করে নিষ্ক্রিয় না থাকেন।
স্বাস্থ্যপরীক্ষা সম্পন্ন করার মাধ্যমে ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নির্ধারিত হয় এবং চিকিৎসক তার বিপদসম্মুখ হতে রক্ষা পায়। অর্থাৎ ভুল চিকিৎসা করা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারেন।
কোন রোগের জন্য কি টেষ্ট করা হয়?
১২ টি মেডিকেল টেষ্ট
১) CBC: Complete blood count (CBC: সম্পূর্ণ রক্ত গণনা)
- শরীরে রক্তের পরিমাণ কেমন।
- রক্তের ঘাটতি থাকলে সেইটা আয়রণ বা ভিটামিনের অভাবে কিনা তার একটা ধারণা পাওয়া যায়। আরো অনেকগুলো কারণ আছে রক্তশূন্যতার সেইসব ব্যাপারে প্রাথমিক ধারণা পাওয়া যায়
- কোন ব্যক্তির শরীরের ভিতরে এলার্জি কেমন তার ধারণা পেতে এই টেস্ট করা হয়। (S. IgE নামক টেস্ট ও দেয়া হয়)
- প্রদাহ বা ইনফেকশন কিরকম তার ধারণা পাওয়া যায়।
- রক্ত জমাট বাধার বাধানোর উপাদানের পরিমাণ কেমন তা জানা যায়। (যেমন ডেংগু হলে Platelet কমে যায় অর্থাৎ রক্তপাত হবার প্রবণতা বেড়ে যায়।
- ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে কিনা সে সম্পর্কে ধারনা পাওয়ার জন্য এই টেস্ট দেওয়া হয়।
২) Urine RME: প্রসাবের পরীক্ষা বা প্রসাব মেডিকেল টেষ্ট
- কিভাবে সংক্রমণ হয়?
- গ্লুকোজ হোক বা সুগার (ডায়াবেটিস) চলে যায়।
- প্রোটিনুরিয়া (কিডনির কোনো সমস্যা থাকলে)
- এটা কি রক্তপাত হয়?
- কিডনিতে ক্যান্সার বা পাথর আছে কিনা জানা যায়।
3) Serum Creatinine (সিরাম ক্রিয়েটিনিন বা কিডনি পরীক্ষা):
4) Lipid Profile (লিপিড প্রোফাইল মেডিকেল টেষ্ট):
5) RBS: Random blood sugar (এলোমেলো রক্তে শর্করা মেডিকেল টেষ্ট):
- CBC/প্রস্রাব RE/S.
- Creatinine/ECG/Lipid Profile ক্রিয়েটিনিন/ইসিজি/লিপিড প্রোফাইলের সাথে চোখের পরীক্ষা করাও ভালো। কারণ ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ নীরব ঘাতক, তারা মস্তিষ্ক/হার্ট/অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ/কিডনির মারাত্মক ক্ষতি করে। এমনকি এটি মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
6) Serum Uric Acid, CRP (সিরাম ইউরিক অ্যাসিড):
7) S. Bilurubin (এস. বিলিরুবিন):
8) Serum TSH/T3/T4 (সিরাম TSH/T3/T4):
9) Serum Electrolytes (সিরাম ইলেক্ট্রোলাইটস): :
10) BT /CT (Bleeding Time / Clotting Time) (BT /CT (রক্তপাতের সময় / জমাট বাঁধার সময়):
11)ECG (ইসিজি মেডিকেল টেষ্ট):
- অ্যারিথমিয়াস - হার্টের অস্বাভাবিক ছন্দ যেমন অ্যাট্রিয়াল ফাইব্রিলেশন, ব্র্যাডিকার্ডিয়া বা টাকাইকার্ডিয়া।
- হার্ট অ্যাটাক - রক্ত প্রবাহের অভাবে হার্টের পেশীর ক্ষতি হয়।
- হার্টের ভালভ রোগ - এমন একটি অবস্থা যেখানে হার্টের ভালভ সঠিকভাবে কাজ করে না।
- জন্মগত হৃদরোগ - জন্মের সময় উপস্থিত হৃদরোগ। অন্যান্য হার্টের অবস্থা - যেমন পেরিকার্ডাইটিস, মায়োকার্ডাইটিস এবং আরও অনেক কিছু।