নারীদের জীবনে একটি প্রাকৃতিক বিষয় হচ্ছে ঋতুস্রবা বা পিরিয়ড। আর রমজান মাসেও প্রতিটি নারীর জন্য এটি হতে পারে এটাই স্বাভাবিক। আমরা সাধারণত জানি যে, নারীর পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে নামাজ রোজ আদায় করতে হয় না। তবে পিরিয়ডের কারণে যদি রোজা ভঙ্গ হয়ে যায় তাহলে পরবর্তীতে পিরিয়ড থেকে মুক্তি হয়ে রোজা কাজা আদায় করতে হবে। কিন্তু নামাজ আদায় করতে হয় না। এমনকি নফল রোজা হলেও কাজা আদায় করতে হবে।
বর্তমানে অনলাইনে অনেক প্রতিবেদন পাবেন এই সংক্রান্ত। আপনি গুগল সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন সেগুলো। আমাদের পাঠকদের জন্যও আমরা একটি পত্রিকার প্রতিবেদন নিচে তুলে ধরছি।
পিরিয়ড সময় রোজা রাখার নিয়ম
সূর্যাস্ত: রোজা পালনকারী নারীর যদি সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ আগেও পিরিয়ড দেখা দেয়, তা হলে তার ওই দিনের রোজা বাতিল হয়ে যাবে। পরে রোজাটি কাজা করতে হবে।
নফল রোজা: নফল রোজা হলে এর কাজাও নফল। যদি রমজানে দিনের মধ্যভাগে পিরিয়ড থেকে পবিত্র হওয়া যায়, তবে দিনের শুরুতে রোজা পালনের প্রতিবন্ধকতা থাকায় ওই দিনের বাকি অংশেও রোজা পালন সহি হবে না।
সুবহে সাদিক: যদি রমজানের রাতে সুবহে সাদিক হওয়ার সামান্য আগেও কোনো নারী পিরিয়ড থেকে পবিত্র হন, তবে তার ওপর রোজা পালন আবশ্যক। কারণ তিনি রোজা পালনে সক্ষমদের অন্তর্ভুক্ত। তার রোজা পালনে এখন কোনো অন্তরায় না থাকায় রোজা পালন ওয়াজিব।
এক্ষেত্রে তিনি পবিত্র হওয়ার গোসল সুবহে সাদিকের পর করলেও রোজা শুদ্ধ হবে। যেমন গোসল ফরজ হওয়া ব্যক্তি সুবহে সাদিকের পর গোসল করলে তার রোজা শুদ্ধ হয়।
পিরিয়ড বন্ধ রেখে রোজা : আধুনিক যুগে ওষুধ খেয়ে পিরিয়ড সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা যায়। কোনো নারী যদি ওষুধ খেয়ে রোজা রাখতে চান, তা হলে তার রোজা হয়ে যাবে। তবে প্রাকৃতিক নিয়মে ব্যত্যয় ঘটানো অনেক সময় স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়। তাই আল্লাহর স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী চলা এবং ওষুধ গ্রহণ না করাই শ্রেয়।
প্রসব-পরবর্তী সময়ে রোজা: নিফাস তথা সন্তান প্রসবকারী নারীর বিধান পূর্বোক্ত হায়েজ বা মাসিকগ্রস্ত নারীর বিধানের মতোই। তিনিও পবিত্র হওয়া পর্যন্ত রোজা করবেন না।
স্তনদানকারী বা অন্তঃসত্ত্বা নারীর রোজা : যে স্তনদানকারী কিংবা অন্তঃসত্ত্বা নারী রোজার কারণে নিজের বা সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা করেন, তিনি রোজা ছেড়ে দিতে পারবেন। আনাস বিন মালেক আল কাবি (রা) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা) বলেন, ‘আল্লাহ মুসাফিরদের সালাত অর্ধেক করেছেন। আর গর্ভবতী, স্তনদানকারিণী ও মুসাফির থেকে রোজা শিথিল করেছেন।’ (আবু দাউদ : ২৪০৮)।
বাদপড়া রোজার কাজা: হায়েজ ও নিফাসহেতু যে কয়দিন রোজা বাদ পড়বে, সে দিনগুলোর কাজা ওয়াজিব। কারণ আল্লাহতায়ালা রোজাসম্পর্কিত দীর্ঘ আলোচনায় রমজানে সঙ্গত কারণে বাদপড়া রোজা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘তবে অন্য দিনে এগুলো গণনা (কাজা) করে নেবে।’ (সুরা আল বাকারা : ১৮৪)।