মাসিক হল মহিলাদের স্ত্রীরোগ যা প্রতি মাসে প্রকৃতি দ্বারা হয়। স্ত্রীর শরীরের হরমোন বিভিন্ন কারণে পরিবর্তিত হয় যার ফলে রক্তস্রাব হয় যা মাসিক নামে পরিচিত। আজকের এই লেখাটিতে আমরা আলোচনা করবো “মাসিকের সময় অতিরিক্ত পেট ব্যথার কারণ ও লক্ষণ কি? মাসিকের সময় তীব্র ব্যথা হলে কি করবেন?”
স্ত্রী
শরীরে একটি সম্পূর্ণ সিস্টেম আছে যা হরমোন উৎপাদন
করে এবং নিয়ন্ত্রণ করে এবং এই হরমোন সিস্টেম
বিভিন্ন কারণে স্থির থাকতে পারে না।
এই কারণেই মাসিক হয় এবং এর
জন্য মহিলাদের শারীরিক এবং মানসিক অবস্থা প্রভাবিত হয়।
এছাড়াও
মাসিকের সময় মহিলাদের শরীরে শুকনোতা, ব্যথা, স্বাভাবিক শরীরের পরিবর্তন এবং মনস্তত্ত্বার পরিবর্তন হয়।
এই কারণে মাসিক সময় মহিলাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব হিসাবে বিবেচিত হয়।
এগুলো পড়তে পারেন:
মেয়েদের মাসিক না হলে কি বাচ্চা হওয়ার সম্ভবনা থাকে?
গর্ভপাত কি? ধরণ,কারণ ও লক্ষণ সমূহ কি কি?
মাসিকের কতদিন পর গর্ভধারণ হয় না?
মাসিকের সময় তীব্র ব্যথা হয় কেন?
মাসিকের
সময় মহিলাদের শরীরে শুকনোতা, ব্যথা এবং অন্যান্য অসুখ হতে পারে। এর কারণ হল মাসিকের সময়ে
মহিলাদের শরীরে হরমোনের স্তরে পরিবর্তন হয়।
এই হরমোনের নাম হল প্রোস্টাগ্লান্ডিন।
প্রোস্টাগ্লান্ডিন
একটি হরমোন যা মাসিকের সময়
মহিলাদের শরীরে উৎপাদিত হয়।
এটি মাসিকের দিনে গরম এবং ভারী ব্যথা উত্পন্ন করতে পারে। এছাড়াও
এই হরমোনের স্তর বাড়তে পারে যখন মহিলার শরীরে পরিবর্তন হয়, যেমন পাবজি বা গর্ভাবস্থার সময়।
মাসিকের
সময় তীব্র ব্যথার কারণ হিসাবে দুটি মূল কারণ হল প্রোস্টাগ্লান্ডিন এবং শরীরের
অভ্যন্তরীণ শক্তির অভাব। এই দুটি কারণে মহিলাদের শরীর মাসিক পর্যন্ত কিছু ব্যথার মুখোমুখি হয়।
এছাড়াও
মাসিকের সময় মহিলাদের শরীরে প্রতি দিন যে স্তন বাড়তে
থাকে, তার কারণ হল একটি অন্য
হরমোন যা প্রোল্যাকটিন নামে
পরিচিত। এটি
শরীরে স্তন উন্নয়ন করে এবং মাসিকের সময় শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে উপস্থিত হয়।
এই হরমোনের স্তর বাড়তে পারে যা শরীরের অভ্যন্তরীণ
শক্তির সাথে সম্পর্কিত হতে পারে।
মাসিকের
সময় মহিলাদের শরীর একটি অপরিহার্য পরিবর্তন চলতে থাকে। এই পরিবর্তন সম্পর্কে শিক্ষাবিদরা বলে যে এটি শরীরের
স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং এর কোন ধরণের
চিকিৎসা প্রয়োজন নেই।
তবে, অসুস্থতার কারণে ব্যাথা হলে অবশ্যই
চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
যেসব রোগের
কারণে
মাসিকের
তীব্র
ব্যথা
হয়:
বিভিন্ন রোগ
যেমন- এন্ডোমেট্রিওসিস, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS), ফাইব্রয়েড, পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি
ডিজিজ (PID), সার্ভিকাল স্টেনোসিস,
অ্যাডেনোমায়োসিস, জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (IUD) ইত্যাদি। নিচে এগুলোর বিস্তারিত
দেওয়া হলো।
1. এন্ডোমেট্রিওসিস:
এন্ডোমেট্রিওসিস
একটি দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা যেখানে জরায়ু কোষ জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পায়। এর সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হল পেলভিক ব্যথা। এর সাথে ভারী মাসিক রক্তপাত, সাত দিনের বেশি সময়কাল, পিরিয়ডের মধ্যে রক্তপাত, পেটে ব্যথা, মিলনের সময় ব্যথা এবং গর্ভধারণের সমস্যা হতে পারে।
2. পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS):
3. ফাইব্রয়েড:
তীব্র
তলপেটে ব্যথা ছাড়াও, ফাইব্রয়েডগুলি পিঠে ব্যথা, পিঠে ব্যথা, পায়ে ব্যথা, ভারী মাসিক রক্তপাত, সাত দিনের বেশি সময়কাল ইত্যাদির কারণ হতে পারে।
4. পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ (PID):
5. সার্ভিকাল স্টেনোসিস:
এই
রোগটি আপনার শরীর থেকে মাসিকের রক্তের প্রবাহকে বাধা দিতে পারে, যার ফলে খুব হালকা বা অনিয়মিত মাসিক
হয়। সার্ভিকাল
স্টেনোসিস এছাড়াও প্রজনন সমস্যা হতে পারে।
6. অ্যাডেনোমায়োসিস:
7. জন্ম নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা (IUD):
আইইউডি
ঢোকানোর সময় আপনার জরায়ুতে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশের ঝুঁকিও থাকে, যার ফলে পিআইডি হতে পারে এবং কখনও কখনও আইইউডি বের হয়ে যেতে পারে। এসব
কারণেও পিঠে ব্যথা হতে পারে।
মাসিকের সময় তীব্র ব্যথা হলে কি করবেন?
১। প্রথম কাজ শারীরিক চাপ কমানো: মাসিকের সময়
তীব্র ব্যথার সাথে মহিলাদের শারীরিক চাপ বাড়তে থাকে। এতে মাথা ঘুরতে পারে এবং জ্বলজ্বলে
আবহাওয়া হতে পারে। তাই প্রথম করে মহিলাদের শরীরের চাপ কমানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর
জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, স্বপ্ন পান এবং শারীরিক কাজকর্ম থেকে দূরে থাকতে
হবে।
২। উপস্থিত সিলিকন এবং লোহিত সামগ্রী কমানো:
মাসিকের সময় মহিলাদের শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে সিলিকন এবং লোহিত সামগ্রী পদার্থ বের
হয়। এদের বেশিরভাগ স্বাভাবিক হয়, তবে যদি ব্যথা অস্বাভাবিক হয় তবে ডাক্তারের সাথে
সাম্প্রতিক পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৩। শারীরিক ব্যায়াম না করা: মাসিকের সময় শারীরিক ব্যায়াম
করা কিন্তু ভাল হতে পারে না কারণ এটি মাসিক সামগ্রী বের হতে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
তবে যদি মহিলা প্রয়োজন হয় তাহলে তিনি একটি ন্যূনতম শারীরিক ব্যায়াম করতে পারেন।
৪। চিকিৎসা নেওয়া: মাসিকের সময় ব্যথা যদি খুব বেশি হয় এবং
তা যদি নিয়মিত চলতেই থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
উপসংহার:
আশাকরি, মাসিকের
সময় অতিরিক্ত পেট ব্যথার কারণ ও লক্ষণ কি? মাসিকের সময় তীব্র ব্যথা হলে কি করবেন?
এই লেখাটি থেকে কিছু ধারণা পেয়েছেন। আপনার কাছে লেখাটি প্রয়োজনীয় মনে হলে শেয়ার করে
নিজের ওয়ালে রেখে দিন প্রয়োজনের সময় যাতে নিজের ওয়াল থেকে সহজেই খুঁজে নিতে পারেন।
যারা জানতে
চান, মাসিকের পেট
ব্যাথার কারণ কি? মাসিকের সময় পেট ব্যথার কারণ কি? মাসিকের আগে পেট ব্যথার কারণ কি? মাসিকের সময় অতিরিক্ত পেট ব্যথার কারণ কি? তারা এই লেখাটি পড়ুন।
অন্যান্য ইনফো জানুন:
যৌন মিলনের পর মেয়েদের তলপেটে ব্যথা হয় কেন?
মহিলাদের প্রসারে রক্ত হয় কেন? করণীয় কি?
যৌনাঙ্গে চুলকানি, জ্বালাভাব কিংবা যন্ত্রণা হয় কেন?
গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণসমূহ কি কি?
কোন কোন সময় সহবাস করলে গর্ভবতী বা গর্ভধারণ হয় না?
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন