গর্ভাবস্থার শেষের দিকে, বেশিরভাগ শিশু মাথা নিচের দিকে রেখে মায়ের জরায়ুর মুখের দিকে চলে আসে। এটিকে মাথা নিচের দিকের অবস্থান বা ব্র্যাক্সিওসেন্ট্রিক পজিশন বলা হয়। তবে, কিছু শিশু প্রসবকালে মাথা নিচের দিকে না রেখে পা বা নিতম্ব নিচের দিকে রেখে থাকে। এটিকে ব্রিচ পজিশন বলা হয়। আজকের এই ইনফোটিতে আমরা এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছি।
(toc) #title=(ইনফোটি এক নজরে দেখুন)
ব্রিচ পজিশন কি?
গর্ভে শিশুর
স্বাভাবিক অবস্থান হল মাথা নিচের দিকে এবং পা উপরের দিকে থাকা। এই অবস্থানকে ডাক্তারি
ভাষায় "সেফালিক" প্রেজেন্টেশন বা পজিশন বলা হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে শিশু
গর্ভে এর উল্টো পজিশনে, অর্থাৎ নিতম্ব অথবা পা নিচে ও মাথা ওপরের দিকে দিয়ে থাকে।
এই উল্টো অবস্থানকে ডাক্তারি ভাষায় "ব্রিচ" পজিশন বলা হয়।
ব্রিচ পজিশনে
শিশুর ডেলিভারির জন্য বিশেষ ব্যবস্থার প্রয়োজন হতে পারে। কারণ এই অবস্থানে শিশুর মাথা
প্রসবের রাস্তা দিয়ে বেরোনোর আগে তার নিতম্ব বা পা বের হয়। এর ফলে প্রসবের সময় জটিলতা
দেখা দিতে পারে, যেমন:-
- শিশুর মাথা বা কাঁধ প্রসবের রাস্তায়
আটকে যেতে পারে।
- শিশুর নাড়ি বা আম্বিলিকাল কর্ড
প্রসবের রাস্তায় আটকে যেতে পারে।
- শিশুর মাথায় বা শরীরের অন্যান্য
অংশে আঘাত লাগতে পারে।
ব্রিচ
পজিশনে শিশুর প্রসবের সম্ভাবনা প্রায় 3-4%। এটি একটি
সাধারণ অবস্থা, তবে এটি কিছু ঝুঁকির কারণ হতে পারে। ব্রিচ পজিশনের কিছু সম্ভাব্য জটিলতা হল:
- প্রসবের দীর্ঘ সময়: ব্রিচ পজিশনে শিশুর মাথার দিকে জোর পড়ে, যা প্রসবের সময়কে দীর্ঘ করতে পারে।
- শিশুর মাথায় আঘাত: ব্রিচ পজিশনে শিশুর মাথার দিকে জোর পড়লে শিশুর মাথায় আঘাত লাগার ঝুঁকি থাকে।
- সিজারিয়ান ডেলিভারি: ব্রিচ পজিশনে প্রসবের সময় জটিলতা দেখা দিলে সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রয়োজন হতে পারে।
ব্রিচ
পজিশনে শিশুর অবস্থান পরিবর্তনের জন্য কিছু কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। তবে, এসব পদক্ষেপ সব সময় সফল
হয় না।
ব্রিচ পজিশনে শিশুর অবস্থান পরিবর্তনের পদক্ষেপ:
- মালিশ: গর্ভবতী মায়ের পেটে মালিশ করা শিশুর অবস্থান পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে।
- ব্যায়াম: কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম শিশুর অবস্থান পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে।
- ওষুধ: কিছু ওষুধ শিশুর অবস্থান পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে।
ব্রিচ পজিশনে প্রসবের প্রস্তুতি:
ব্রিচ
পজিশনে প্রসবের প্রস্তুতি নিতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে:
- সিজারিয়ান ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত থাকুন: ব্রিচ পজিশনে প্রসবের সময় জটিলতা দেখা দিলে সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রয়োজন হতে পারে। তাই সিজারিয়ান ডেলিভারির জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রস্তুত থাকুন।
- প্রসবের আগে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন: আপনার ডাক্তার আপনাকে ব্রিচ পজিশনে প্রসবের ঝুঁকি ও সুবিধা সম্পর্কে অবহিত করতে পারবেন। তারা আপনাকে প্রসবের জন্য সেরা পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারবেন।
ব্রিচ
পজিশনে প্রসবের জন্য নিম্নলিখিত কিছু টিপস দেওয়া যেতে পারে:
- আপনার ডাক্তারের নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন: আপনার ডাক্তার আপনাকে প্রসবের জন্য কোন পদক্ষেপ নিতে বলেছেন সেগুলো অনুসরণ করুন।
- আপনার সঙ্গীর সাথে কথা বলুন: আপনার সঙ্গীর কাছ থেকে সাপোর্ট ও সাহায্য নিন।
- প্রসবের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন: প্রসবের সময় কী ঘটতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নিন এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন।
ব্রিচ
পজিশনে প্রসবের ক্ষেত্রে সঠিক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা গ্রহণ
করলে শিশু ও মায়ের জন্য
একটি নিরাপদ প্রসবের সম্ভাবনা বাড়ে।
গর্ভের শিশু
ব্রিচ পজিশনে আছে কি না কিভাবে
বুঝবেন?
ব্রিচ
পজিশনে শিশুর অবস্থান নির্ণয়ের জন্য, আপনার ডাক্তার বা নার্স আপনার
পেটে একটি আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করবেন। পরীক্ষার সময়, তারা শিশুর মাথা, পা এবং নিতম্বের
অবস্থান পর্যবেক্ষণ করবে।
ব্রিচ পজিশনের কিছু লক্ষণ হল:
- আপনার পেটের নিচের দিকে একটি দৃঢ়, গোলাকার আকার। এটি শিশুর পা বা নিতম্বের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।
- আপনার পেটের উপরের দিকে একটি ছোট, নরম আকার। এটি শিশুর মাথার প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।
- আপনার পেটের পাশে বা পিছনে একটি দৃঢ় আকার। এটি শিশুর পা বা নিতম্বের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।
যদি
আপনার ডাক্তার বা নার্স সন্দেহ
করেন যে আপনার শিশু
ব্রিচ পজিশনে আছে, তারা আপনাকে প্রসবের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন। এতে সিজারিয়ান ডেলিভারির জন্য পরিকল্পনা করা, মালিশ বা ব্যায়াম দিয়ে
শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করার চেষ্টা করা অথবা ব্রিচ ডেলিভারির প্রস্তুতি নেওয়া অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
ব্রিচ পজিশন জানার উপায়
ব্রিচ
পজিশনে শিশু আছে কি না তা
নির্ধারণ করার দুটি প্রধান উপায় রয়েছে:
- বাহ্যিক পরীক্ষা: গর্ভবতী মায়ের পেটে ডাক্তার বা নার্স হাত দিয়ে শিশুর অবস্থান পরীক্ষা করতে পারেন। ব্রিচ পজিশনে শিশুর মাথা সাধারণত জরায়ুর পেছনে থাকে এবং পা বা নিতম্ব জরায়ুর মুখের দিকে থাকে।
- অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা: গর্ভবতী মায়ের পেটে ডাক্তার বা নার্স হাত দিয়ে শিশুর অবস্থান পরীক্ষা করতে পারেন। এই পরীক্ষাটি সাধারণত 36 সপ্তাহে বা তার পরে করা হয়।
সিজারিয়ান ছাড়া স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব?
হ্যাঁ,
ব্রিচ পজিশনে সিজারিয়ান ছাড়া স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব। তবে, এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। ব্রিচ পজিশনে প্রসবের সময় শিশুর মাথা জরায়ুর মুখের দিকে না পৌঁছতে পারে,
যার ফলে প্রসবের সময় জটিলতা দেখা দিতে পারে।
ব্রিচ
পজিশনে সিজারিয়ান ছাড়া স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব কিনা তা নির্ভর করে
বিভিন্ন কারণের উপর, যেমন:
- শিশুর আকার ও অবস্থা: যদি শিশু খুব বড় হয় বা যদি শিশুর পা বা নিতম্ব জরায়ুর মুখের দিকে সঠিকভাবে না থাকে, তাহলে সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রয়োজন হতে পারে।
- মায়ের স্বাস্থ্য: যদি মায়ের কোনো জটিলতা থাকে, যেমন উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস, তাহলে সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রয়োজন হতে পারে।
- প্রসবের সময়ের অবস্থা: প্রসবের সময় যদি জটিলতা দেখা দেয়, তাহলে সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রয়োজন হতে পারে।
ব্রিচ
পজিশনে সিজারিয়ান ছাড়া স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব হলে, এর জন্য প্রসবের
আগে ও পরে কিছু
পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। এই পদক্ষেপগুলি হল:
- মালিশ: গর্ভবতী মায়ের পেটে মালিশ করা শিশুর অবস্থান পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে।
- ব্যায়াম: কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম শিশুর অবস্থান পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে।
- ওষুধ: কিছু ওষুধ শিশুর অবস্থান পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে।
ব্রিচ
পজিশনে সিজারিয়ান ছাড়া স্বাভাবিক প্রসব করার জন্য একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
মালিশ, ব্যায়াম, ওষুধ—কী কী উপায়ে শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করা যায়?
ব্রিচ পজিশনে শিশুর অবস্থান পরিবর্তনের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:
মালিশ:
গর্ভবতী মায়ের পেটে মালিশ করা শিশুর অবস্থান পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে। মালিশ শিশুর পেশীগুলিকে শিথিল করতে এবং শিশুকে সঠিক অবস্থানে যেতে উৎসাহিত করতে পারে। মালিশ করার সময়, গর্ভবতী মায়ের পেটের নিচের অংশে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া উচিত।
ব্যায়াম:
কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম শিশুর অবস্থান পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে। এই ব্যায়ামগুলি শিশুর
পেশীগুলিকে শিথিল করতে এবং শিশুকে সঠিক অবস্থানে যেতে উৎসাহিত করতে পারে। কিছু সাধারণ ব্যায়াম হল:
- ব্রিচ পজিশনে শিশুর অবস্থান পরিবর্তনের জন্য ব্যায়াম: এই ব্যায়ামগুলি গর্ভবতী মাকে তার পেটের নিচের অংশে চাপ দিতে সাহায্য করে, যা শিশুকে মাথা নিচের দিকে নিতে উৎসাহিত করতে পারে।
- কাঁধের উপর ভর দিয়ে শুয়ে থাকা ব্যায়াম: এই ব্যায়ামটি শিশুর মাথাকে জরায়ুর মুখের দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
- সাইড-লি পজিশনে শুয়ে থাকা ব্যায়াম: এই ব্যায়ামটি শিশুর পা বা নিতম্বকে জরায়ুর মুখের দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করে।
ওষুধ:
কিছু ওষুধ শিশুর অবস্থান পরিবর্তনে সহায়তা করতে পারে। এই ওষুধগুলি শিশুর
পেশীগুলিকে শিথিল করতে এবং শিশুকে সঠিক অবস্থানে যেতে উৎসাহিত করতে পারে। তবে, এই ওষুধগুলির কিছু
পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে, তাই সেগুলি গ্রহণ করার আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
**ব্রিচ
পজিশনে শিশুর অবস্থান পরিবর্তনের জন্য কোন পদক্ষেপটি সবচেয়ে কার্যকর তা নির্ভর করে
বিভিন্ন কারণের উপর, যেমন:-
- শিশুর বয়স: 36 সপ্তাহের পরে শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করা সহজ।
- শিশুর আকার: বড় শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
- মায়ের স্বাস্থ্য: যদি মায়ের কোনো জটিলতা থাকে, তাহলে শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করা কঠিন।
ব্রিচ
পজিশনে শিশুর অবস্থান পরিবর্তনের জন্য প্রসবের আগেই পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। প্রসবের পরেও কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে, তবে সেগুলির কার্যকারিতা প্রসবের আগের পদক্ষেপের তুলনায় কম।
ব্রিচ
পজিশনে শিশুর অবস্থান পরিবর্তনের জন্য একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
জটিলতা
ও ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন থাকুন
ব্রিচ
পজিশনে শিশুর প্রসবের কিছু সম্ভাব্য জটিলতা ও ঝুঁকি হল:
- দীর্ঘ প্রসবের সময়: ব্রিচ পজিশনে শিশুর মাথা জরায়ুর মুখের দিকে না পৌঁছতে পারে, যার ফলে প্রসবের সময় দীর্ঘ হতে পারে।
- শিশুর মাথায় আঘাত: ব্রিচ পজিশনে প্রসবের সময় শিশুর মাথায় আঘাত লাগার ঝুঁকি থাকে।
- সিজারিয়ান ডেলিভারি: ব্রিচ পজিশনে প্রসবের সময় সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রয়োজন হতে পারে।
সিজারিয়ান ডেলিভারি
ব্রিচ
পজিশনে শিশুর প্রসবের জটিলতা ও ঝুঁকি কমাতে
নিম্নলিখিত সতর্কতা অবলম্বন করা যেতে পারে:
- গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা: গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে শিশুর প্রসবের জটিলতা ও ঝুঁকি কম থাকে।
- শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করা: প্রসবের আগে শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করা গেলে শিশুর প্রসবের জটিলতা ও ঝুঁকি কম থাকে।
- প্রসবের সময় সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া: প্রসবের সময় সঠিক পদক্ষেপ নিলে শিশুর প্রসবের জটিলতা ও ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।
ব্রিচ
পজিশনে শিশুর প্রসবের জন্য একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
শিশু ও মায়ের জন্য নিরাপদ প্রসবের উপায় কী?
ব্রিচ
পজিশনে শিশুর প্রসবের জন্য নিরাপদ প্রসবের উপায় নির্ভর করে শিশুর অবস্থান, মায়ের স্বাস্থ্য এবং প্রসবের অবস্থার উপর।
যদি
শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করা সম্ভব হয়, তাহলে প্রসবের সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হল নরমাল ডেলিভারি।
প্রসবের সময়, ডাক্তার বা নার্স শিশুর
মাথাকে জরায়ুর মুখের দিকে চালিত করতে সাহায্য করবেন।
যদি
শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করা সম্ভব না হয়, তাহলে
প্রসবের সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হল সিজারিয়ান ডেলিভারি।
সিজারিয়ান ডেলিভারিতে, ডাক্তার বা নার্স পেটের
একটি ছোট কেটে শিশুর জন্ম দেন।
শিশু
ও মায়ের জন্য নিরাপদ প্রসবের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে:
- গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা: গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকলে শিশুর প্রসবের জটিলতা ও ঝুঁকি কম থাকে।
- শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করা: প্রসবের আগে শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করা গেলে শিশুর প্রসবের জটিলতা ও ঝুঁকি কম থাকে।
- প্রসবের সময় সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া: প্রসবের সময় সঠিক পদক্ষেপ নিলে শিশুর প্রসবের জটিলতা ও ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।
- সিজারিয়ান ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত থাকা: যদি সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রয়োজন হয়, তাহলে গর্ভবতী মা এবং তার পরিবারকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
সাধারণ জিজ্ঞাসা
ব্রিচ প্রেজেন্টেশনের শিশুর যদি নরমাল ডেলিভারি হয়, তাহলে কী জটিলতা হতে পারে?
ব্রিচ প্রেজেন্টেশনের
শিশুর যদি নরমাল ডেলিভারি হয়, তাহলে নিম্নলিখিত জটিলতা হতে পারে:
- দীর্ঘ প্রসবের সময়: ব্রিচ
প্রেজেন্টেশনে শিশুর মাথা জরায়ুর মুখের দিকে না পৌঁছতে পারে, যার ফলে প্রসবের
সময় দীর্ঘ হতে পারে।
- শিশুর মাথায় আঘাত: ব্রিচ
প্রেজেন্টেশনে প্রসবের সময় শিশুর মাথায় আঘাত লাগার ঝুঁকি থাকে।
- শিশুর কাঁধের আটকে যাওয়া: ব্রিচ
প্রেজেন্টেশনে প্রসবের সময় শিশুর কাঁধ জরায়ুর মুখের দিকে আটকে যেতে পারে, যা
একটি জরুরী অবস্থা।
ব্রিচ প্রেজেন্টেশনে
শিশুর নরমাল ডেলিভারি নিরাপদ করার জন্য একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে প্রসবের
পরিকল্পনা করা জরুরি। প্রসবের সময়, ডাক্তার বা নার্স নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি নিতে
পারেন:
- শিশুর অবস্থান পর্যবেক্ষণ: প্রসবের
সময়, ডাক্তার বা নার্স শিশুর অবস্থান পর্যবেক্ষণ করবেন এবং যদি শিশুর অবস্থান
পরিবর্তন হয় তবে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেবেন।
- শিশুর মাথাকে জরায়ুর মুখের দিকে
চালিত করা: প্রসবের সময়, ডাক্তার বা নার্স শিশুর মাথাকে জরায়ুর মুখের
দিকে চালিত করতে সাহায্য করবেন।
- শিশুর কাঁধের আটকে যাওয়া প্রতিরোধ
করা: প্রসবের সময়, ডাক্তার বা নার্স শিশুর কাঁধের আটকে যাওয়া প্রতিরোধ
করার জন্য পদক্ষেপ নিতে পারেন।
ব্রিচ প্রেজেন্টেশনে
শিশুর নরমাল ডেলিভারি নিয়ে উদ্বিগ্ন হলে, একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা
উচিত।
আপনার যদি জমজ শিশু হয় এবং তাদের মধ্যে একজনের ব্রিচ প্রেজেন্টেশন থাকে, সেক্ষেত্রে ডেলিভারির অপশন কী?
জমজ শিশুর
ক্ষেত্রে, যদি একজনের ব্রিচ প্রেজেন্টেশন থাকে, তাহলে ডেলিভারির জন্য নিম্নলিখিত অপশনগুলি
বিবেচনা করা যেতে পারে:
- সিজারিয়ান ডেলিভারি: সিজারিয়ান
ডেলিভারি হল সবচেয়ে নিরাপদ বিকল্প, কারণ এটি উভয় শিশুর জন্য জটিলতা কমাতে
সাহায্য করে।
- ব্রিচ এক্সটার্নাল ভার্টিব্রা
ফেল্টো (ECV): ECV হল একটি প্রক্রিয়া যেখানে ডাক্তার বা নার্স বাহ্যিকভাবে
শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করার চেষ্টা করেন। ECV সফল হওয়ার সম্ভাবনা 60-70%।
- ব্রিচ ডেলিভারি: যদি ECV
সফল হয়, তাহলে শিশুর ডেলিভারি নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে করা যেতে পারে। তবে, যদি
ECV সফল না হয়, তাহলে সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রয়োজন হতে পারে।
জমজ শিশুর
ক্ষেত্রে, ডেলিভারির পরিকল্পনা করার সময় নিম্নলিখিত কারণগুলি বিবেচনা করা উচিত:
- শিশুর অবস্থান: যদি উভয়
শিশুই ব্রিচ প্রেজেন্টেশনে থাকে, তাহলে সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রয়োজন হবে।
- শিশুর আকার: বড় শিশুদের
ব্রিচ প্রেজেন্টেশনে ডেলিভারি করা কঠিন হতে পারে।
- মায়ের স্বাস্থ্য: যদি মায়ের
কোনো জটিলতা থাকে, তাহলে সিজারিয়ান ডেলিভারি প্রয়োজন হতে পারে।
ব্রিচ প্রেজেন্টেশনে
জমজ শিশুর ডেলিভারির জন্য একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রিচ শিশুর কি জন্মের পর কোনো সমস্যা হতে পারে?
হ্যাঁ, ব্রিচ
শিশুর জন্মের পর কিছু সমস্যা হতে পারে। এই সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে:
- মাথায় আঘাত: প্রসবের সময়, ব্রিচ
শিশুর মাথায় আঘাত লাগার ঝুঁকি থাকে। এই আঘাতের ফলে শিশুর মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে
পারে।
- কাঁধের আটকে যাওয়া: প্রসবের
সময়, ব্রিচ শিশুর কাঁধ জরায়ুর মুখের দিকে আটকে যেতে পারে। এই অবস্থাকে
কাঁধের আটকে যাওয়া বলা হয়। কাঁধের আটকে যাওয়া একটি জরুরী অবস্থা যা শিশুর ক্ষতি
হতে পারে।
- শ্বাসকষ্ট: প্রসবের সময়, ব্রিচ
শিশুর শ্বাসনালীতে শ্লেষ্মা বা রক্ত জমা হতে পারে। এই অবস্থাকে নবজাতক শ্বাসকষ্ট
বলা হয়। নবজাতক শ্বাসকষ্ট শিশুর শ্বাস নিতে অসুবিধা করতে পারে।
ব্রিচ শিশুর
জন্মের পর এই সমস্যাগুলির ঝুঁকি কমাতে, শিশুর জন্মের পর একজন অভিজ্ঞ ডাক্তার বা নার্স
দ্বারা শিশুর পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর মাথায় আঘাতের ঝুঁকি কমাতে, শিশুকে
সাবধানে ধরা এবং নার্সিং করা গুরুত্বপূর্ণ। কাঁধের আটকে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে, প্রসবের
সময় শিশুর অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ। নবজাতক শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি কমাতে,
শিশুর জন্মের পর শিশুকে শ্বাস নিতে সাহায্য করা গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রিচ শিশুর
জন্মের পর সমস্যাগুলির ঝুঁকি কমাতে, গর্ভবতী মহিলাদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা
গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভবতী মহিলাদের ডাক্তার বা নার্সকে ব্রিচ প্রেজেন্টেশন সম্পর্কে অবহিত
করা উচিত।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন