কিভাবে চিনবেন ভালো মানের ল্যাপটপ বা ল্যাপটপ ক্রয় করার সময় কি কি বিষয় বিবেচনা করবেন?

ল্যাপটপ এখন আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কাজ, পড়াশোনা, বিনোদন, এমনকি যোগাযোগ সবকিছুতেই ল্যাপটপের ব্যবহার অপরিহার্য। তাই একটি ভালো মানের ল্যাপটপ কেনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখন প্রশ্ন হলো কিভাবে আপনি নিশ্চিত হবেন যে আপনি একটি ভালো মানের ল্যাপটপ ক্রয় করছেন?


কিভাবে চিনবেন ভালো মানের ল্যাপটপ বা ল্যাপটপ ক্রয় করার সময় কি কি বিষয় বিবেচনা করবেন


সাধারণত যারা ল্যাপটপ ক্রয় করে প্রথমবারের মতো তারা মূলত দোকানদার বা সেলসম্যানের তথ্যের উপর ভিত্তি করে ল্যাপটপের মান নির্ধারণ করার চেষ্টা করে থাকেন। এতে আসলে সঠিক মূল্যায়ণ হয় না। কেননা দোকানদার বা সেলসম্যান তাদের ব্যবসায়িক সুবিধা যেখানে বেশি পায় সেই ব্যাপারে আপনাকে প্রভাবিত করতে পারে।

যাইহোক, কিভাবে চিনবেন ভালো মানের ল্যাপটপ বা ল্যাপটপ ক্রয় করার সময় কি কি বিষয় বিবেচনা করবেন? সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ইনফোটি মনোযোগসহকারে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।

(toc) #title=(ইনফোটি এক নজরে দেখুন)

ভালো মানের ল্যাপটপ ক্রয় করার সময় কি কি বিষয় বিবেচনা করবেন?

যারা প্রথমবারের মতো ল্যাপটপ কিনতে যান তারা এই বিষয়টি নিয়ে খুবই চিন্তিত থাকেন যে কিভাবে একটি সেরা মানের ল্যাপটপ ক্রয় করবেন? আসলে প্রথমে আপনি জানতে পারবেন না যে, কোন ল্যাপটপটি আপনার কাছে সেরা। কারণ আপনার কাছে ব্যবহারিক কোন অভিজ্ঞতা নেই। তাছাড়া যখন কারো কাছ থেকে যখন সেরা ল্যাপটপের জন্য পরামর্শ চাইবেন তখন একেক জন একেক কথা বলবে। অথ্যাৎ একেক জনের কাছে একেক ল্যাপটপ সেরা।

এটা এই জন্য হয়ে থাকে যে, একেক জন একেক ব্রান্ডের ল্যাপটপ ব্যবহার করে থাকেন। সবাই একই ব্রান্ডের ল্যাপটপ ব্যবহার করেন না বা প্রয়োজন হয় না। তাই আপনি কি জন্য ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন বা ক্রয় করবেন সেই বিষয়টি আগে পরিস্কার করুন। তারপর নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করুন।

  • Processor/CPU (প্রসেসর/সিপিইউ)
  • RAM র‌্যাম
  • ROM (hard disk) রোম বা হার্ড ডিস্ক
  • Display (ডিসপ্লে)
  • motherboard (মাদারবোর্ড)
  • Laptop size and weight (ল্যাপটপের সাইজ এবং ওজন)
  • Laptop design (ল্যাপটপের ডিজাইন)
  • Operating System (Software) (অপারেটিং সিস্টেম)
  • Laptop brand (ল্যাপটপের ব্রান্ড)

এই বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে আপনি সহজেই একটি সেরা মানের ল্যাপটপ ক্রয় করতে পারেন। এগুলোর বিস্তারিত আলোচনা নিচে রয়েছে।

কেন আপনি ল্যাপটপ ক্রয় করবেন?

ল্যাপটপ কেনার আগে আপনার প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি ল্যাপটপটি কিসের জন্য ব্যবহার করবেন? আপনি কি কেবলমাত্র ওয়েব ব্রাউজিং, ইমেল এবং অফিস অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করবেন, নাকি আপনি গেম খেলবেন, ভিডিও এডিট করবেন বা গ্রাফিক্স ডিজাইন করবেন? আপনার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী আপনি ল্যাপটপের হার্ডওয়্যার এবং বৈশিষ্ট্য নির্বাচন করতে পারবেন।

ল্যাপটপের সকল কাজ ডেক্সটপ কম্পিউটারে করা যায়। তবে ডেস্কটপ কম্পিউটার ক্রয় না করে ল্যাপটপ কেনার সুবিধা হচ্ছে-

  • বহনযোগ্যতাল্যাপটপ একটি ডেস্কটপ কম্পিউটারের তুলনায় অনেক বেশি বহনযোগ্য। আপনি ল্যাপটপটি আপনার সাথে যেকোনো জায়গায় নিয়ে যেতে পারেন।
  • কর্মক্ষমতা: ল্যাপটপগুলো এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। আপনি ল্যাপটপ ব্যবহার করে যেকোনো ধরনের কাজ করতে পারেন।
  • বৈচিত্র্য: বাজারে বিভিন্ন ধরনের ল্যাপটপ পাওয়া যায়। আপনি আপনার প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী একটি ল্যাপটপ নির্বাচন করতে পারেন।

ল্যাপটপ বা কম্পিউটার কেন ক্রয় করবেন?

বিভিন্ন কারণে আপনার ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার ক্রয় করা লাগতে পারে। কেননা বর্তমানে জীবনের সাথে প্রযুক্তি ওৎপ্রোড়তভাবে জড়িত। তাই আপনি যে পেশারই হোন না কেন আপনার এটি প্রয়োজন হতে পারে।

  • **আপনি যদি একজন শিক্ষার্থী হনতাহলে ল্যাপটপ আপনার জন্য একটি অপরিহার্য সরঞ্জাম। আপনি ল্যাপটপ ব্যবহার করে ক্লাস নেওয়াগবেষণা করাএবং রিপোর্ট লেখা ইত্যাদি কাজ করতে পারেন।
  • **আপনি যদি একজন ব্যবসায়ী হনতাহলে ল্যাপটপ আপনার কাজের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। আপনি ল্যাপটপ ব্যবহার করে ইমেল চেক করামিটিংয়ে যোগদান করাএবং দস্তাবেজ তৈরি করা ইত্যাদি কাজ করতে পারেন।
  • **আপনি যদি একজন গেম খেলোয়াড় হনতাহলে ল্যাপটপ আপনার জন্য একটি দুর্দান্ত বিকল্প। আপনি ল্যাপটপ ব্যবহার করে আপনার প্রিয় গেমগুলো খেলতে পারেন।
  • **আপনি যদি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার বা ভিডিও এডিটার হনতাহলে ল্যাপটপ আপনার জন্য একটি অপরিহার্য সরঞ্জাম। আপনি ল্যাপটপ ব্যবহার করে আপনার কাজগুলি সম্পাদন করতে পারেন।

সেরা মানের একটি ভালো ল্যাপটপ চেনার উপায় কি?

একটি ভালো মানের ল্যাপটপ চিনতে হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে:

প্রসেসর: ল্যাপটপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল প্রসেসর। ভালো মানের প্রসেসর থাকলে ল্যাপটপ দ্রুত কাজ করবে এবং মাল্টিটাস্কিং সহজে হবে। বর্তমানে বাজারে Intel Core i5 এবং Core i7 প্রসেসরগুলো বেশ জনপ্রিয়।

গ্রাফিক্স কার্ড: গ্রাফিক্স কার্ডের গুণগত মান ল্যাপটপের গেমিং এবং ভিডিও এডিটিং ক্ষমতা নির্ধারণ করে। ভালো মানের গ্রাফিক্স কার্ড থাকলে ল্যাপটপে মসৃণভাবে গেম খেলা এবং ভিডিও এডিটিং করা যাবে। বর্তমানে বাজারে NVIDIA GeForce GTX এবং RTX সিরিজের গ্রাফিক্স কার্ডগুলো বেশ জনপ্রিয়।

মেমরি: মেমরি ল্যাপটপের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। যত বেশি মেমরি থাকবে, ল্যাপটপ তত দ্রুত কাজ করবে। বর্তমানে বাজারে 8GB থেকে 16GB মেমরিযুক্ত ল্যাপটপগুলো বেশ জনপ্রিয়।

স্টোরেজ: ল্যাপটপে ফাইল, অ্যাপ্লিকেশন এবং অন্যান্য ডেটা সংরক্ষণের জন্য স্টোরেজ ব্যবহার করা হয়। যত বেশি স্টোরেজ থাকবে, তত বেশি ডেটা সংরক্ষণ করা যাবে। বর্তমানে বাজারে SSD এবং HDD স্টোরেজযুক্ত ল্যাপটপগুলো বেশ জনপ্রিয়। SSD স্টোরেজ দ্রুতগতিতে কাজ করে, তবে দাম বেশি। HDD স্টোরেজ তুলনামূলকভাবে কম দামে পাওয়া যায়, তবে গতি SSD স্টোরেজ এর তুলনায় কম।

ডিসপ্লে: ডিসপ্লে ল্যাপটপের ব্যবহারযোগ্যতা বাড়াতে সাহায্য করে। ভালো মানের ডিসপ্লে থাকলে ল্যাপটপের রঙ, ব্রাইটনেস এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য ভালো হবে। বর্তমানে বাজারে Full HD (1920x1080) এবং Quad HD (2560x1440) রেজোলিউশনের ডিসপ্লেযুক্ত ল্যাপটপগুলো বেশ জনপ্রিয়।

ব্যাটারি ব্যাকআপ: ল্যাপটপের ব্যাটারি ব্যাকআপ কতক্ষণ থাকবে, তা নির্ভর করে ব্যাটারির ক্যাপাসিটি এবং ল্যাপটপের ব্যবহারের উপর। ভালো মানের ব্যাটারি থাকলে ল্যাপটপ দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করা যাবে।

ওজন এবং ডিজাইন: ল্যাপটপের ওজন এবং ডিজাইন বহনযোগ্যতা নির্ধারণ করে। হালকা ওজনের এবং সুন্দর ডিজাইনের ল্যাপটপ বহন করা সহজ হয়।

ল্যাপটপের জনপ্রিয় ব্রান্ডগুলো কি কি?

ল্যাপটপ কেনার সময় আপনাকে অবশ্যই আপনার প্রয়োজনীয়তা এবং বাজেট বিবেচনা করতে হবে। তবে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলোর ল্যাপটপগুলো একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।

  • লেনোভো (Lenovo): লেনোভো একটি চীনা মাল্টিন্যাশনাল কম্পিউটার প্রযুক্তি কোম্পানি। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ল্যাপটপ নির্মাতা। বাংলাদেশে লেনোভোর ল্যাপটপগুলো তাদের উন্নত কর্মক্ষমতা, দীর্ঘস্থায়ীতা এবং সাশ্রয়ী মূল্যের জন্য পরিচিত।
  • এইচপি (HP): এইচপি একটি আমেরিকান মাল্টিন্যাশনাল তথ্য প্রযুক্তি কোম্পানি। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ল্যাপটপ নির্মাতা। বাংলাদেশে এইচপির ল্যাপটপগুলো তাদের বৈচিত্র্যময় মডেল লাইনআপআধুনিক ডিজাইন এবং শক্তিশালী বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য পরিচিত।
  • ডেল (Dell): ডেল একটি আমেরিকান মাল্টিন্যাশনাল কম্পিউটার প্রযুক্তি কোম্পানি। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ল্যাপটপ নির্মাতা। বাংলাদেশে ডেল ল্যাপটপগুলো তাদের স্থায়িত্বনির্ভরযোগ্যতা এবং ব্যবসায়িক ব্যবহারের জন্য পরিচিত।
  • আসুস (Asus): আসুস একটি তাইওয়ানিজ মাল্টিন্যাশনাল প্রযুক্তি কোম্পানি। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ল্যাপটপ নির্মাতা। বাংলাদেশে আসুস ল্যাপটপগুলো তাদের শক্তিশালী গ্রাফিক্সমাল্টিমিডিয়া কার্যক্ষমতা এবং গেমিং ক্ষমতার জন্য পরিচিত।
  • এসার (Acer): এসার একটি তাইওয়ানিজ মাল্টিন্যাশনাল প্রযুক্তি কোম্পানি। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ল্যাপটপ নির্মাতা। বাংলাদেশে এসার ল্যাপটপগুলো তাদের সাশ্রয়ী মূল্যবহনযোগ্যতা এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারের জন্য পরিচিত।

এছাড়াও, বাংলাদেশে অন্যান্য জনপ্রিয় ল্যাপটপ ব্র্যান্ডের মধ্যে জনপ্রিয় ব্রান্ডগুলো হলো স্যামসাং, ট্যাবে, অ্যাপল এবং মাইক্রোসফট ইত্যাদি।

আপনি কোন ধরণের ল্যাপটপ ক্রয় করবেন?

আপনি কোন ধরণের ল্যাপটপ ব্যবহার করবেন তা নির্ভর করে আপনার প্রয়োজনীয়তা এবং বাজেটের উপর। কোন ধরণের ল্যাপটপ কাদের জন্য উপযুক্ত তা নিচে তুলে ধরা হলো।

  • স্ট্যান্ডার্ড ল্যাপটপএই ধরনের ল্যাপটপগুলি সাধারণ ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। এগুলোতে সাধারণত একটি ভালো প্রসেসরযথেষ্ট পরিমাণে ্যাম এবং স্টোরেজ থাকে। এই ধরনের ল্যাপটপগুলি স্কুলকলেজঅফিস বা ঘরে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।
  • গেমিং ল্যাপটপএই ধরনের ল্যাপটপগুলি গ্রাফিক্স-নিবিড় গেম খেলার জন্য উপযুক্ত। এগুলোতে শক্তিশালী প্রসেসরপ্রচুর পরিমাণে ্যাম এবং উচ্চ-মানের গ্রাফিক্স কার্ড থাকে। এই ধরনের ল্যাপটপগুলি সাধারণত বেশি ব্যয়বহুল হয়।
  • ক্রিয়েটিভ ল্যাপটপ: এই ধরনের ল্যাপটপগুলি গ্রাফিক্স ডিজাইনভিডিও সম্পাদনাঅডিও রেকর্ডিং এবং অন্যান্য সৃজনশীল কাজের জন্য উপযুক্ত। এগুলোতে শক্তিশালী প্রসেসরপ্রচুর পরিমাণে ্যাম এবং উচ্চ-মানের গ্রাফিক্স কার্ড থাকে। এই ধরনের ল্যাপটপগুলি সাধারণত বেশি ব্যয়বহুল হয়।
  • ইউনিবডি ল্যাপটপএই ধরনের ল্যাপটপগুলি পাতলা এবং হালকা হয়। এগুলো সাধারণত স্ট্যান্ডার্ড ল্যাপটপের মতোই ক্ষমতা সম্পন্ন হয়। এই ধরনের ল্যাপটপগুলি বহনযোগ্যতার জন্য উপযুক্ত।
  • ট্যাবলেট ল্যাপটপএই ধরনের ল্যাপটপগুলি ট্যাবলেট এবং ল্যাপটপের মিশ্রণ। এগুলোকে ট্যাবলেট হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে বা ল্যাপটপ হিসাবে ব্যবহারের জন্য ল্যাপটপ মোড চালু করা যেতে পারে। এই ধরনের ল্যাপটপগুলি বিভিন্ন কাজে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।

 ল্যাপটপ ব্যবহারের উদাহরণ

  • ছাত্র এবং শিক্ষার্থীদের জন্যস্ট্যান্ডার্ড ল্যাপটপ বা ইউনিবলডি ল্যাপটপ ভালো বিকল্প হতে পারে।
  • গেম খেলোয়াড়দের জন্যগেমিং ল্যাপটপ ভালো বিকল্প হতে পারে।
  • গ্রাফিক্স ডিজাইনার, ভিডিও এডিটর এবং অন্যান্য সৃজনশীল পেশাজীবীদের জন্যক্রিয়েটিভ ল্যাপটপ ভালো বিকল্প হতে পারে।
  • যারা বহনযোগ্যতার জন্য ল্যাপটপ খুঁজছেনইউনিবলডি ল্যাপটপ বা ট্যাবলেট ল্যাপটপ ভালো বিকল্প হতে পারে।

ল্যাপটপ কেনার সময় অবশ্যই আপনার প্রয়োজনীয়তা এবং বাজেট বিবেচনা করতে হবে।


একটি সেরা মানের ল্যাপটপের বৈশিষ্ট কি?

ভালো মানের ল্যাপটপ বিবেচনা করতে হলে অনেকগুলো বিষয় বিবেচনা করতে হবে। বিষেশ করে উপরে যে বিষয়গুলো সম্পর্কে বলা হয়ে সেই বিষয়ে ভালো জ্ঞান থাকতে হবে। তাহলে আপনি একটি ভালো মানের ল্যাপটপের বৈশিষ্ট এবং আপনার জন্য উপযুক্ত ল্যাপটপ পছন্দ করতে পারবেন।

সাধারণত, Processor/CPU (প্রসেসর/সিপিইউ), RAM র‌্যাম, ROM (hard disk) রোম বা হার্ড ডিস্ক, Display (ডিসপ্লে), motherboard (মাদারবোর্ড), Laptop size and weight (ল্যাপটপের সাইজ এবং ওজন), Laptop design (ল্যাপটপের ডিজাইন), Operating System (Software) (অপারেটিং সিস্টেম), Laptop brand (ল্যাপটপের ব্রান্ড) ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকলে আপনি সহজেই একটি সেরা মানের ল্যাপটপ বাচাই করতে পারেন।

ল্যাপটপের প্রসেসর (CPU) কি?

ল্যাপটপের প্রসেসর হল ল্যাপটপের মস্তিষ্ক। এটি ল্যাপটপের সমস্ত কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে। প্রসেসর হল একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা নির্দেশাবলী প্রক্রিয়া করে এবং গণনা করে। এটি ল্যাপটপের কর্মক্ষমতা নির্ধারণ করে।

প্রসেসরের প্রকারভেদঃ

ল্যাপটপের প্রসেসরগুলি সাধারণত দুটি প্রধান ধরণের হয়:

  • ইনটেলইনটেল হল ল্যাপটপের প্রসেসরগুলির সবচেয়ে জনপ্রিয় নির্মাতা। ইনটেলের প্রসেসরগুলি সাধারণত শক্তিশালী এবং নির্ভরযোগ্য হয়।
  • AMD: AMD হল ইনটেলের প্রধান প্রতিযোগী। AMD-এর প্রসেসরগুলি সাধারণত ইনটেলের প্রসেসরগুলির তুলনায় কম দামে পাওয়া যায়।

প্রসেসরের বৈশিষ্টঃ

ল্যাপটপের প্রসেসরগুলির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা কর্মক্ষমতা এবং দামকে প্রভাবিত করে। যেমন:

  • কোর সংখ্যা: কোর হল প্রসেসরটির একটি নির্দিষ্ট অংশ যা নির্দেশাবলী প্রক্রিয়া করে। বেশি কোর সংখ্যা মানে প্রসেসর একবারে আরও বেশি কাজ করতে পারে। উদাহরণস্বরুপ: cor-i5, cor-i7 ইত্যাদি।
  • ক্লক স্পিডক্লক স্পিড হল প্রসেসর যে গতিতে নির্দেশাবলী প্রক্রিয়া করে। বেশি ক্লক স্পিড মানে প্রসেসর দ্রুততর গতিবেগে কাজ করতে পারে।
  • ক্যাশে মেমরি: ক্যাশে মেমরি হল প্রসেসরটির একটি ছোট অংশ যা প্রায়শই ব্যবহৃত ডেটা সংরক্ষণ করে। বেশি ক্যাশে মেমরি মানে প্রসেসর দ্রুততর গতিবেগে কাজ করতে পারে।

প্রসেসরের প্রজন্ম কি?

প্রসেসরের প্রজন্ম হল কম্পিউটার প্রযুক্তির বিকাশের বিভিন্ন পর্যায় বা ধাপ। কম্পিউটারের প্রজন্মকে সাধারণত হার্ডওয়্যার প্রযুক্তির বিবর্তনের ভিত্তিতে ভাগ করা হয়।

প্রথম প্রজন্মের প্রসেসরস (1940-1956) ভ্যাকুয়াম টিউব ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। ভ্যাকুয়াম টিউবগুলি বড়, ভারী এবং বেশি শক্তি ব্যবহার করে। এগুলিতে কম ডেটা প্রসেসিং ক্ষমতা ছিল। প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারগুলি সাধারণত বড় বড় গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারী সংস্থাগুলি দ্বারা ব্যবহৃত হত।

দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রসেসরস (1956-1963) ট্রানজিস্টর ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। ট্রানজিস্টরগুলি ভ্যাকুয়াম টিউবগুলির তুলনায় ছোট, হালকা এবং কম শক্তি ব্যবহার করে। এগুলিতে বেশি ডেটা প্রসেসিং ক্ষমতা ছিল। দ্বিতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারগুলি প্রথম প্রজন্মের কম্পিউটারগুলির তুলনায় ছোট এবং কম ব্যয়বহুল ছিল। এগুলি সাধারণত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি দ্বারা ব্যবহৃত হত।

তৃতীয় প্রজন্মের প্রসেসরস (1964-1971) ইন্টিগ্রেটেড সার্কিট (IC) ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। ICগুলি একাধিক ট্রানজিস্টর এবং অন্যান্য উপাদানগুলিকে একক ছোট চিপে একত্রিত করে। এগুলিতে দ্বিতীয় প্রজন্মের প্রসেসরসগুলির তুলনায় আরও বেশি ডেটা প্রসেসিং ক্ষমতা ছিল। তৃতীয় প্রজন্মের কম্পিউটারগুলি ব্যক্তিগত কম্পিউটার এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্কের জন্মের দিকে পরিচালিত করেছিল।

চতুর্থ প্রজন্মের প্রসেসরস (1972-2010) মাইক্রোপ্রসেসর ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। মাইক্রোপ্রসেসরগুলি একক চিপে একটি সম্পূর্ণ কম্পিউটার সিস্টেমকে একত্রিত করে। এগুলিতে তৃতীয় প্রজন্মের প্রসেসরসগুলির তুলনায় আরও বেশি ডেটা প্রসেসিং ক্ষমতা ছিল। চতুর্থ প্রজন্মের কম্পিউটারগুলি ব্যক্তিগত কম্পিউটার, ওয়ার্কস্টেশন, এবং বড় কম্পিউটারের বিকাশের দিকে পরিচালিত করেছিল।

পঞ্চম প্রজন্মের প্রসেসরস (2010-বর্তমান) কোয়ান্টাম কম্পিউটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করা হচ্ছে। কোয়ান্টাম কম্পিউটারগুলি প্রচলিত কম্পিউটারগুলির চেয়ে অনেক বেশি দ্রুত ডেটা প্রক্রিয়া করতে সক্ষম। পঞ্চম প্রজন্মের কম্পিউটারগুলি এখনও উন্নয়নাধীন, তবে সেগুলি ভবিষ্যতে কম্পিউটার বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে বিপ্লব আনতে পারে।

প্রসেসরের প্রজন্মগুলি ডেটা প্রসেসিং ক্ষমতা, শক্তি দক্ষতা, এবং কম্পিউটারের আকার এবং খরচের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। প্রতিটি নতুন প্রজন্ম কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে।

RAM কী? RAM কীভাবে কাজ করে?

RAM হল Random Access Memory-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। এটি একটি কম্পিউটারের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা প্রসেসরকে চলমান প্রোগ্রাম এবং ডেটা অ্যাক্সেস করতে দেয়। RAM হল একটি অস্থায়ী মেমরি, যার অর্থ এটি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে সমস্ত তথ্য হারিয়ে যায়।

RAM কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে, প্রথমে আমাদের কম্পিউটারের কীভাবে কাজ করে তা বুঝতে হবে। কম্পিউটারের মূল কাজ হল নির্দেশাবলী অনুসরণ করা এবং গণনা করা। এই নির্দেশাবলীগুলিকে প্রোগ্রাম বলা হয়। প্রোগ্রামগুলি কম্পিউটারের হার্ড ড্রাইভে সংরক্ষণ করা হয়।

যখন আপনি একটি প্রোগ্রাম চালু করেন, তখন প্রসেসর হার্ড ড্রাইভ থেকে প্রোগ্রামের নির্দেশাবলীগুলিকে RAM- লোড করে। প্রসেসর তারপরে RAM থেকে নির্দেশাবলীগুলি পড়ে এবং অনুসরণ করে।

RAM প্রসেসরকে চলমান প্রোগ্রামগুলির জন্য তথ্য অ্যাক্সেস করতে দেয়। উদাহরণস্বরূপ, যখন আপনি একটি ওয়েব ব্রাউজার চালু করেন, তখন ব্রাউজারের প্রোগ্রামটি RAM- লোড হয়। ব্রাউজারের প্রোগ্রামটি তারপরে RAM থেকে ওয়েবসাইটের কোড এবং ডেটা অ্যাক্সেস করে।

RAM কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা বুঝতে, আমাদের কম্পিউটারের কর্মক্ষমতা কীভাবে নির্ধারিত হয় তা বুঝতে হবে। কম্পিউটারের কর্মক্ষমতা নির্ধারিত হয় প্রসেসরের গতি, RAM এর পরিমাণ এবং হার্ড ড্রাইভের গতির দ্বারা।

প্রসেসর যত দ্রুত হবে, প্রোগ্রামগুলি তত দ্রুত চালানো যাবে। RAM যত বেশি হবে, প্রসেসর তত বেশি তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারবে। হার্ড ড্রাইভ যত দ্রুত হবে, প্রোগ্রামগুলি এবং ডেটা লোড করতে তত কম সময় লাগবে।

RAM হল কম্পিউটারের কর্মক্ষমতা উন্নত করার একটি সহজ উপায়। আরও RAM থাকা মানে প্রসেসর আরও তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারে, যার ফলে প্রোগ্রামগুলি আরও দ্রুত চালানো যায়।

RAM আপগ্রেড করার জন্য, আপনাকে আপনার কম্পিউটারের স্পেসিফিকেশনগুলি পরীক্ষা করতে হবে। আপনার কম্পিউটারের জন্য কোন RAM প্রয়োজন তা জানতে, আপনি আপনার কম্পিউটারের ম্যানুয়াল বা নির্মাতার ওয়েবসাইটটি দেখতে পারেন।

RAM আপগ্রেড করা একটি সহজ কাজ। সাধারণত, আপনাকে শুধুমাত্র আপনার কম্পিউটারের পাশের কভারটি খুলে এবং পুরানো RAM চিপগুলি নতুন RAM চিপগুলি দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে হবে।

RAM এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য:

  • ক্যাপাসিটি: RAM এর ক্যাপাসিটি হল এটি যে পরিমাণ তথ্য ধারণ করতে পারে। RAM এর ক্যাপাসিটি পরিমাপ করা হয় মেগাবাইট (MB), গিগাবাইট (GB) বা টেরাবাইট (TB) এ।
  • টাইমিং: RAM এর টাইমিং হল এটি যে গতিতে তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারে। RAM এর টাইমিং পরিমাপ করা হয় নানোসেকেন্ডে (ns)
  • প্রযুক্তি: RAM বিভিন্ন প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয়যেমন DDR3, DDR4, DDR5 প্রতিটি প্রযুক্তি তার নিজস্ব সুবিধা এবং অসুবিধাগুলির সাথে আসে।

RAM নির্বাচন করার সময়, আপনার ল্যাপটপের প্রয়োজনীয়তাগুলি বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ল্যাপটপের জন্য কত RAM প্রয়োজন তা নির্ধারণ করতে, আপনি আপনার কম্পিউটারের নির্মাতার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।


অন্যান্য ইনফো জানুন:

ক্লাউড কিম্পউটিং কি? ব্যবহার করার সুবিধা ও অসুবিধা কি কি?

কম্পিউটারের আউটপুট ডিভাইস কি কি?

কম্পিউটারের ইনপুট ডিভাইসগুলো কি কি?

গুগল ম্যাপের সাহায্যে দুই স্থানের দূরত্ব কিভাবে জানবেন?

মোবাইলের ইন্টারনেট শেয়ার করবেন কিভাবে?

হোয়াটঅ্যাপের চ্যাট ডিলিট হলে ফিরে পাওয়ার উপায় কি?

হ্যাকিং কি? আপনি হ্যাকিং এর শিকার হলে কি করবেন?


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger]

Search This Blog

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget