স্কিন কেয়ারের আধুনিক প্রক্রিয়াগুলোর মধ্যে ডাবল ক্লেনজিং একটি অত্যন্ত কার্যকরী পদ্ধতি। এটি মেকআপ, ধুলা-ময়লা এবং অতিরিক্ত তেল অপসারণ করে ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে। ডাবল ক্লেনজিং বিশেষভাবে কার্যকর, কারণ এতে ত্বকের উপরিভাগ ও গভীর স্তর পরিষ্কার হয়, ফলে ত্বক থাকে সুস্থ, উজ্জ্বল এবং ব্রণ-মুক্ত।
চলুন জেনে নিই, ডাবল ক্লেনজিং কী, কেন তা প্রয়োজন এবং কীভাবে এটি করতে হয়। এছাড়াও, কোন বয়স থেকে এটি করা উচিত এবং একনে-প্রবণ ত্বকে ডাবল ক্লেনজিং প্রক্রিয়া প্রযোজ্য কিনা সে বিষয়েও জানব।
ডাবল ক্লেনজিং কী?
ডাবল ক্লেনজিং হলো দুটি ধাপের ক্লিনিং পদ্ধতি, যেখানে প্রথম ধাপে তেল-ভিত্তিক ক্লেনজার এবং দ্বিতীয় ধাপে ফোম-ভিত্তিক ক্লেনজার ব্যবহার করা হয়। তেল-ভিত্তিক ক্লেনজার ত্বকের উপরিভাগের মেকআপ, সানস্ক্রিন, এবং অতিরিক্ত তেল দূর করে, আর ফোম-ভিত্তিক ক্লেনজার ত্বকের গভীর স্তরে জমে থাকা ময়লা এবং অতিরিক্ত সেবাম পরিষ্কার করে।
উদাহরণ: আগে সাবান ব্যবহার করে মুখ ধুয়ে নিলে ত্বক অনেকটা ড্রাই ও রাফ হয়ে যেত। ডাবল ক্লেনজিং ত্বককে ময়েশ্চারাইজড ও কোমল রাখে, যা একক ক্লেনজারের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর।
কেন প্রয়োজন দুই ধাপে ত্বক পরিষ্কার করার?
আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন প্রকারের মেকআপ প্রোডাক্ট, সানস্ক্রিন, এবং অন্যান্য স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করি, যেগুলোতে অনেক সময় এমন উপাদান থাকে যা পানি দিয়ে সহজে দূর হয় না।
ডাবল ক্লেনজিং এর সুবিধাসমূহ:
- পোর ক্লগিং রোধ: এক্সেস সেবাম এবং মেকআপ উপাদান দূর করে পোরস খোলা রাখতে সাহায্য করে।
- গভীর থেকে পরিষ্কার: ফোম-ভিত্তিক ক্লেনজার ত্বকের গভীরে জমে থাকা ময়লা এবং মৃতকোষ দূর করে।
- ফ্রেশ ও উজ্জ্বল ত্বক: ত্বকের অমসৃণ ভাব দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল দেখায়।
ডাবল ক্লেনজিং করার নিয়ম
১) প্রথম ধাপ: তেল-ভিত্তিক ক্লেনজার দিয়ে ম্যাসাজ করুন। চোখের মেকআপ এবং লিপস্টিক ধীরে ধীরে মুছে ফেলুন। প্রয়োজনে মাইসেলার ওয়াটার বা ক্লেনজিং অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। কটন প্যাড ব্যবহার করে মেকআপ তুলতে পারেন।
২) দ্বিতীয় ধাপ: এরপর সামান্য ফেস ওয়াশ নিয়ে ফোম তৈরি করে মুখে ম্যাসাজ করুন এবং ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন।
বিকল্প উপকরণ: ত্বকের ধরন অনুযায়ী জেল, ক্রিম, বা ওয়াটার-ভিত্তিক ক্লেনজার ব্যবহার করুন।
কতবার ডাবল ক্লেনজিং করা উচিত?
দিনে একবার রাতে ডাবল ক্লেনজিং যথেষ্ট। এতে সারাদিনে জমে থাকা মেকআপ, সানস্ক্রিন এবং ধুলা-ময়লা দূর হবে। খুব বেশি মেকআপ করলে বা ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হলে দিনে দুবার ডাবল ক্লেনজিং করা যেতে পারে।
কোন বয়স থেকে ডাবল ক্লেনজিং করা উচিত?
টিনেজ বয়স থেকেই ত্বকের যত্নে সানস্ক্রিন এবং ডাবল ক্লেনজিং শুরু করা উচিত। ছেলে-মেয়ে উভয়েরই ত্বককে পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন, বিশেষ করে শহরের ধুলা-বালি ও দূষণ থেকে ত্বককে রক্ষা করতে।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করলে ডাবল ক্লেনজিং প্রয়োজন কেন?
সানস্ক্রিন সাধারণত ত্বকে সুরক্ষা লেয়ার তৈরি করে যা পানি দিয়ে পুরোপুরি পরিষ্কার হয় না। ফলে ত্বকে জমে থাকা সানস্ক্রিনের অতিরিক্ত অংশ পোর ক্লগিং সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য ডাবল ক্লেনজিং প্রয়োজন।
একনে-প্রবণ ত্বকে ডাবল ক্লেনজিং করা যাবে?
একনে প্রবণ ত্বকে ডাবল ক্লেনজিং বিশেষভাবে উপকারী। ত্বকের ময়লা ও তেল জমে একনে বাড়াতে পারে, তাই ডাবল ক্লেনজিং ত্বককে পরিষ্কার রাখতে এবং ব্রণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন