অটিজম হলো একটি স্নায়ুবিক বিকাশজনিত সমস্যা, যা শিশুর সামাজিক যোগাযোগ, আচরণ ও ভাষাগত দক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলে। একে অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (ASD) বলা হয়, কারণ এটি একেকজনের ক্ষেত্রে একেকভাবে প্রকাশ পায়। সাধারণত শিশুর জন্মের প্রথম তিন বছরের মধ্যেই এর লক্ষণ দেখা দেয়।
অটিজম নিয়ে সমাজে অনেক ভুল ধারণা আছে, তাই এই পোস্টে আমরা এর কারণ, লক্ষণ, প্রভাব ও করণীয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
অটিজমে শিশুর বিকাশ কীভাবে বাধাগ্রস্ত হয়?
অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশুদের বিকাশ তিনটি প্রধান ক্ষেত্রে বাধাগ্রস্ত হয়:
১. সামাজিক সম্পর্ক স্থাপনে সমস্যা
- অন্যদের সাথে যোগাযোগ বা সম্পর্ক গড়তে আগ্রহ দেখায় না।
- কেউ কী করছে তা নিয়ে কৌতূহল প্রকাশ করে না।
- অন্যের অনুভূতি বুঝতে পারে না বা বুঝলেও সঠিক প্রতিক্রিয়া দেখায় না।
- চোখে চোখ রেখে কথা বলতে চায় না।
২. যোগাযোগ স্থাপনে সমস্যা
- অনেক শিশু মুখের ভাষায় কথা বলতে দেরি করে বা একদমই শেখে না।
- কেউ কেউ কথা বলতে শিখলেও সংলাপ চালিয়ে যেতে পারে না।
- ইশারা বা শরীরী ভাষার মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করতে অক্ষম।
- কিছু শিশু নির্দিষ্ট কিছু শব্দ বা বাক্য বারবার বলে, তবে প্রসঙ্গ অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারে না।
৩. আচরণগত ভিন্নতা
- পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ করে, যেমন—একই কাজ বারবার করা, নির্দিষ্ট খেলনা বা বস্তুতে অতি আসক্তি থাকা।
- নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলতে চায় এবং পরিবর্তন হলে অস্থিরতা অনুভব করে।
- নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয় না।
- কোনো আনন্দদায়ক বস্তু বা খেলনার প্রতি আকৃষ্ট হয় না।
- হাত নাড়ানো, দোল খাওয়া বা একই রকম অঙ্গভঙ্গি বারবার করা।
- অতিরিক্ত আলো, শব্দ বা স্পর্শে সংবেদনশীলতা থাকতে পারে।
অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশুদের আচরণ ও বিকাশ একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে। কারও লক্ষণ হালকা মাত্রার, আবার কারও লক্ষণ গুরুতর হতে পারে।
অটিজমের কারণ কী?
এখন পর্যন্ত অটিজমের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নির্ণয় করা যায়নি, তবে গবেষকরা মনে করেন দুইটি প্রধান কারণ অটিজমের জন্য দায়ী:
১. জিনগত কারণ
- অনেক ক্ষেত্রে একই পরিবারের একাধিক সদস্যের মধ্যে অটিজম দেখা যায়, যা জেনেটিক যোগসূত্রের ইঙ্গিত দেয়।
- কিছু শিশু ডিএনএ কপি নম্বর ভ্যারিয়েন্ট (CNV) ত্রুটি বহন করে, যা অটিজমের জন্য দায়ী হতে পারে।
- মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষের বিকাশজনিত সমস্যা থাকলেও অটিজম হতে পারে।
২. পরিবেশগত কারণ
- গর্ভাবস্থায় বা শৈশবে বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদানের সংস্পর্শে আসা (যেমন—মার্কারি, লেড, কীটনাশক, খাদ্য সংরক্ষণে ব্যবহৃত রাসায়নিক দ্রব্য)।
- মায়ের গর্ভকালীন স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন—ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা সংক্রমণ।
- শিশুর জন্মপূর্ব বা জন্মপরবর্তী স্নায়ুবিক সংক্রমণ।
- মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক ক্রিয়া বা নিউরোকেমিক্যালের অসামঞ্জস্যতা।
তবে টিকা (ভ্যাকসিন) গ্রহণের কারণে অটিজম হয় না—এটি একটি ভিত্তিহীন ধারণা।
অটিজম শনাক্ত করার উপায়
অটিজম সাধারণত ১৮ মাস থেকে ৩ বছর বয়সের মধ্যে ধরা পড়ে। চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা শিশুর আচরণ পর্যবেক্ষণ করে এবং বিভিন্ন স্ক্রিনিং টেস্টের মাধ্যমে অটিজম নির্ণয় করেন।
প্রাথমিক লক্ষণ দেখে কীভাবে বুঝবেন?
✅ ৬ মাসে - অন্যদের দিকে তাকায় না, হাসে না বা মুখাবয়বের প্রতিক্রিয়া দেখায় না।
✅ ৯ মাসে - নাম ধরে ডাকলে সাড়া দেয় না, শব্দ বা মুখভঙ্গির অনুকরণ করে না।
✅ ১২ মাসে - কথা বলা শুরু করে না, ইশারায় কিছু বোঝানোর চেষ্টা করে না।
✅ ১৬ মাসে - একক শব্দ বলে না, অন্যদের প্রতি আগ্রহ দেখায় না।
✅ ২৪ মাসে - ছোট বাক্য ব্যবহার করে না বা একই শব্দ বারবার বলে।
যদি এসব লক্ষণ দেখা যায়, তবে দ্রুত শিশু বিশেষজ্ঞ বা বিকাশ বিশেষজ্ঞের (Developmental Pediatrician) পরামর্শ নেওয়া উচিত।
অটিজমের চিকিৎসা ও ব্যবস্থাপনা
অটিজম কোনো রোগ নয়, এটি একটি বিশেষ বিকাশগত অবস্থা। তবে কিছু থেরাপি ও সঠিক সহায়তা পেলে শিশুর জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব।
১. ভাষা ও যোগাযোগ থেরাপি
- যারা কথা বলতে শেখেনি, তাদের ভাষা শেখানোর জন্য স্পিচ থেরাপি কার্যকর।
- AAC (Augmentative and Alternative Communication) ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন—চিত্রভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা (PECS)।
2. আচরণগত থেরাপি (ABA - Applied Behavior Analysis)
- শিশুর সামাজিক দক্ষতা, যোগাযোগ এবং আচরণ উন্নত করতে সহায়তা করে।
- শিশুকে ধাপে ধাপে নতুন দক্ষতা শেখানো হয়।
3. সংবেদনশীল থেরাপি (Sensory Integration Therapy)
- অতিরিক্ত শব্দ, আলো বা স্পর্শের প্রতি সংবেদনশীলতা কমাতে সাহায্য করে।
4. বিশেষায়িত শিক্ষা
- শিশুর শেখার ক্ষমতা অনুযায়ী কাস্টমাইজড শিক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন।
- বাংলাদেশে কিছু বিশেষায়িত স্কুল রয়েছে, যেখানে বিশেষজ্ঞ শিক্ষকরা অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশুদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন।
অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশুদের জন্য অভিভাবকের করণীয়
✅ ধৈর্য ধরুন ও ইতিবাচক মনোভাব রাখুন – শিশু একদিনে সব শিখতে পারবে না, তাই ধৈর্য ধরতে হবে।
✅ শিশুর রুটিন তৈরি করুন – প্রতিদিন নির্দিষ্ট রুটিন অনুসরণ করলে শিশু নিরাপদ অনুভব করবে।
✅ সামাজিক যোগাযোগে উৎসাহ দিন – শিশুকে পরিবারের সদস্য ও অন্যান্য শিশুদের সাথে মিশতে সাহায্য করুন।
✅ অন্যদের বোঝান – পরিবার ও স্কুলের শিক্ষকদের বোঝান কীভাবে শিশুকে সহায়তা করা যায়।
✅ সঠিক থেরাপি করান – শিশুর জন্য কোন থেরাপি দরকার, তা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিশ্চিত করুন।
শিশুর কোন বয়সে কী কী আচরণ দেখলে অটিজম বিষয়ে সচেতন হতে হবে
অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার (ASD) হলো একটি স্নায়ুবিক বিকাশজনিত অবস্থা, যা শিশুর সামাজিক যোগাযোগ, ভাষাগত দক্ষতা এবং আচরণে প্রভাব ফেলে। শিশুর বয়স অনুযায়ী কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ দেখা গেলে অভিভাবকদের সতর্ক হওয়া উচিত এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
৬ মাসের মধ্যে লক্ষণ
- হাসি বা মুখাবয়ব পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া না দেওয়া
- চোখে চোখ রেখে তাকাতে অনাগ্রহ
- সাড়া না দেওয়া বা অন্যের সাথে সম্পর্ক গড়তে না চাওয়া
৯ মাসের মধ্যে লক্ষণ
- নাম ধরে ডাকলে সাড়া না দেওয়া
- শব্দ বা মুখভঙ্গির অনুকরণ না করা
- অন্যদের অনুভূতির প্রতি আগ্রহ না দেখানো
১২ মাসের মধ্যে লক্ষণ
- মা-বাবার সাথে সংযোগ তৈরিতে সমস্যা
- কথা বলার চেষ্টা না করা বা ইশারার মাধ্যমে যোগাযোগ না করা (যেমন—ইশারায় কিছু চাওয়া বা হাত নাড়ানো)
- অন্যান্য শিশুদের প্রতি আগ্রহ না থাকা
১৬-২৪ মাসের মধ্যে লক্ষণ
- একক শব্দ ব্যবহার না করা (১৬ মাসের মধ্যে)
- ছোট বাক্য গঠনে অক্ষমতা (২৪ মাসের মধ্যে)
- একই কাজ বা আচরণ বারবার করা
- একা থাকতে পছন্দ করা এবং সামাজিক পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা
যদি এসব লক্ষণ দেখা দেয়, তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অটিজম দ্রুত শনাক্ত করা গেলে শিশুর সঠিক থেরাপি ও সমর্থন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
শিশু সঠিক সময়ে কথা না বলা মানেই অটিজম নয়, যেসব কারণ দায়ী হতে পারে
অনেক অভিভাবক মনে করেন, শিশু কথা বলতে দেরি করলেই এটি অটিজমের লক্ষণ। তবে এর পেছনে অন্যান্য কারণও থাকতে পারে।
১. দেরিতে কথা বলা ও অটিজমের পার্থক্য
সব শিশু একসাথে কথা বলা শেখে না। কিছু শিশু স্বাভাবিকভাবেই দেরিতে কথা বলে, যা কোনো রোগের লক্ষণ নয়। তবে যদি ভাষাগত সমস্যার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ ও আচরণগত অসংগতি থাকে, তবে এটি অটিজমের ইঙ্গিত হতে পারে।
২. কথা বলতে দেরি হওয়ার অন্যান্য কারণ
- শ্রবণ সমস্যাঃ শিশু শুনতে না পেলে কথা বলার দক্ষতা বিকশিত হয় না।
- দ্বিভাষিক পরিবেশঃ একইসাথে একাধিক ভাষা শিখতে গেলে শিশুর কথা বলতে কিছুটা দেরি হতে পারে।
- স্নায়ুবিক বা বিকাশগত বিলম্বঃ কিছু শিশু প্রাকৃতিকভাবেই দেরিতে কথা বলে, কিন্তু পরবর্তীতে স্বাভাবিক হয়ে যায়।
- মানসিক বা আবেগগত কারণঃ শিশুর প্রতি পর্যাপ্ত মনোযোগ, কথা বলার সুযোগ ও পরিবেশ না থাকলে দেরি হতে পারে।
তাই যদি শিশু নির্দিষ্ট বয়সে কথা বলতে না শেখে, তবে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
অটিজম নিয়ে জাতীয় সচেতনতা তৈরি করা গেছে: সায়মা ওয়াজেদ
বাংলাদেশে অটিজম সচেতনতা তৈরিতে অন্যতম অগ্রদূত হলেন সায়মা ওয়াজেদ, যিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) মানসিক স্বাস্থ্য ও অটিজম বিষয়ক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সদস্য।
তার উদ্যোগে অটিজম নিয়ে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে—
- অটিজম বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন: সরকারিভাবে নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে।
- বিশেষায়িত শিক্ষা ও থেরাপি সেন্টার: দেশে বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত সেবা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।
- জনসচেতনতা বৃদ্ধি: বিভিন্ন কর্মশালা, সেমিনার ও গণমাধ্যমে প্রচারণার মাধ্যমে অভিভাবকদের সচেতন করা হচ্ছে।
- আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি: ২০১৭ সালে জাতিসংঘে অটিজম সচেতনতা নিয়ে তার কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছে।
অটিজম মোকাবিলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা আরও বাড়ানো জরুরি।
পরামর্শ: অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশুর বয়ঃসন্ধিকালের সমস্যাগুলো কীভাবে সামলাবেন
বয়ঃসন্ধিকালে (১৩-১৯ বছর) অটিজম বৈশিষ্ট্যের কিশোর-কিশোরীদের জন্য অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জ দেখা দিতে পারে। এ সময় মানসিক, শারীরিক ও সামাজিক পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়াতে তাদের বাড়তি সহায়তা প্রয়োজন।
১. শারীরিক পরিবর্তন বোঝাতে সাহায্য করুন
- তাদের শরীরের পরিবর্তন সম্পর্কে সহজ ভাষায় ব্যাখ্যা দিন।
- ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি শেখান।
২. আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক সমর্থন দিন
- হঠাৎ রাগ, হতাশা বা উদ্বেগ দেখা দিলে সংবেদনশীলভাবে প্রতিক্রিয়া জানান।
- কোনো বড় পরিবর্তন (স্কুল পরিবর্তন, নতুন বন্ধু তৈরি) নিয়ে তাদের প্রস্তুত করুন।
৩. সামাজিক দক্ষতা ও বন্ধুত্ব গঠনে সহায়তা করুন
- সামাজিক পরিস্থিতি অনুশীলনের সুযোগ দিন।
- সহপাঠীদের সাথে যোগাযোগে উৎসাহিত করুন।
৪. স্বাধীনতা ও দায়িত্ববোধ শেখান
- দৈনন্দিন রুটিন নির্ধারণ করুন এবং ধাপে ধাপে দায়িত্ব নিতে উৎসাহিত করুন।
- বাসার কাজে অংশগ্রহণ করতে বলুন, যেমন—নিজের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাখা।
এই পরামর্শগুলো অনুসরণ করলে বয়ঃসন্ধিকালে অটিজম বৈশিষ্ট্যের কিশোর-কিশোরীরা সুস্থ ও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে পারবে।
তাদের ঘরে অটিজম জয়ের আনন্দ
অটিজমকে জয় করা কোনো একদিনের বিষয় নয়, এটি দীর্ঘমেয়াদি ভালোবাসা, ধৈর্য ও সঠিক দিকনির্দেশনার ফল। অনেক পরিবার আছে, যারা অটিজম বৈশিষ্ট্যের সন্তানদের জন্য উপযুক্ত সহায়তা দিয়ে তাদের জীবন মানোন্নয়ন করতে পেরেছে।
সফলতার গল্প
শাহিন ও ফারহানা দম্পতির ছেলে রাফি ৩ বছর বয়সে অটিজম নির্ণয়ের পর তারা থেরাপি শুরু করেন। নিয়মিত ভাষা থেরাপি, বিশেষায়িত শিক্ষা ও পরিবারের সহায়তায় আজ রাফি স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছে।
পরিবারের করণীয়
- ধৈর্য ও ভালোবাসা: শিশুর বিকাশগত পার্থক্য মেনে নেওয়া এবং তাকে সময় দেওয়া।
- সঠিক থেরাপি ও প্রশিক্ষণ: প্রতিদিন নির্দিষ্ট থেরাপি করানো।
- সামাজিকীকরণ: শিশুকে পরিবারের সাথে এবং বাইরের জগতে যুক্ত রাখা।
অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশুরা একেকজন একেকভাবে বিকশিত হয়। সঠিক যত্ন ও সমর্থন পেলে তারাও স্বাভাবিক জীবনের আনন্দ উপভোগ করতে পারে।
এই ইনফোগুলো অটিজম বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে এবং অভিভাবকদের উপযুক্ত দিকনির্দেশনা দেবে।
শেষ কথা
অটিজম কোনো অভিশাপ বা রোগ নয়, এটি শিশুর একটি ভিন্ন বিকাশপ্রক্রিয়া। সময়মতো সঠিক সহায়তা পেলে অনেক অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশু সমাজে দক্ষ ও স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারে।
অটিজম নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো ও সহমর্মিতা প্রকাশ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। সমাজের সকল স্তরে যদি আমরা অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল হই, তাহলে তাদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব।
আপনার কি পরিচিত কেউ অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশু? আপনি কীভাবে তাদের সহায়তা করেন? কমেন্টে জানাতে পারেন! 😊💙
আরো জানুন
শুর বিকাশে পরিবার ও সমাজের প্রভাব: কীভাবে গড়ে ওঠে ভবিষ্যৎ?
শিশুর কৃমি: লক্ষণ, কারণ ও প্রতিরোধের উপায়
শিশুর দেরিতে কথা বলা নিয়ে দুশ্চিন্তা? জেনে নিন কারণ, করণীয় ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ
বিশেষ দ্রষ্টব্য
- অটিজম কোনো রোগ নয়, এটি শিশুর মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশের একটি ভিন্ন রূপ।
- প্রতিটি অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশু আলাদা, তাই একেকজনের ক্ষেত্রে লক্ষণ ও চাহিদা ভিন্ন হতে পারে।
- অটিজম নিয়ে সমাজে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে, তাই বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।
- অটিজমের নির্দিষ্ট কোনো ওষুধ নেই, তবে থেরাপি, বিশেষায়িত শিক্ষা ও পারিবারিক সহায়তা শিশুর বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- সময়মতো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে শিশুর জীবনযাত্রার মান উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করা সম্ভব।
- অটিজম বৈশিষ্ট্যের শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল হোন, তাদের বোঝার চেষ্টা করুন এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করুন।
🔹 এই লেখাটি শুধুমাত্র তথ্যগত উদ্দেশ্যে প্রকাশিত হয়েছে। কোনো নির্দিষ্ট সমস্যা বা লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন