eticket.railway.gov.bd: অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার নতুন নিয়ম : কিভাবে মোবাইলে ট্রেনের টিকেট কাটবেন? বাংলাদেশ রেলওয়ের
ই-টিকিট ওয়েব পোর্টালে রেজিস্টেশন করে সহজেই ঘরে বসে আপনার পছন্দমতো টিকিট কাটতে পারেন। কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করে পছন্দমতো টিকিট কাটবেন তার বিস্তারিত নিয়ে আজকের ইনফোটি সাজানো হলো।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী বর্তমানে ট্রেনের সকল টিকিট অনলাইনে ক্রয় করা যাবে। অনেকেই জানেন না অনলাইনে কিভাবে ট্রেনের টিকিট কাটতে হয়।
আপনি যদি এই শ্রেণি মানুষের মধ্যে পড়েন তাহলে আপনার জন্য রইলো “ কিভাবে অনলাইন থেকে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করবেন, বিস্তারিত ও ছবিসহ আলোচনা করা হলো বাংলাদেশ রেলওয়ে অনলাইন টিকেট ক্রয় করার নিয়ম।
এছাড়াও আপনি নিজেই আপনার মোবাইল থেকে বিকাশ অ্যাপের সাহায্যে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, বর্তমানে বাংলাদেশ রেলওয়ে টিকিট অনলাইনে বিক্রয়ের জন্য আগামী ৫ বছরেরর জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে Shohoz-Synesis-Vincen Joint Venture এর সাথে। তাই এখন থেকে সহজ ট্রেনের টিকিট বিক্রয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটার সময় কখন?
মনে করা হয় সবচেয়ে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পরিবহন হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে ভ্রমণ। অনেকে তাই দূরপাল্লার যে কোন ভ্রমণে জন্য ট্রেনকেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ট্রেনের পরিবহন খরচও বেশ কম। অর্থাৎ কম খরচে আরামদায়ক ভ্রমণ করা যায় ট্রেনে।
এজন্য ট্রেনের টিকিট পাওয়া অত্যান্ত দুঃসাধ্য। অনেক সময় লম্বা লাইনে দাড়িয়েও শেষ পর্যন্ত টিকিট সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। তাই আপনি ঘরে বসেই অগ্রিম টিকিট ক্রয় করতে পারেন।
রাত-দিন ২৪ ঘন্টাই অনলাইনে থেকে ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। তাই আপনার মোবাইল থেকেই ট্রেনের টিকিট বুকিং করতে পারেন যে কোন সময়। অগ্রীম ৪ দিন পর্যন্ত অগ্রীম টিকিট ক্রয় করতে অনলাইনে বুকিং দিয়ে টিকেট সংগ্রহ করতে হবে। তাই জানুন কিভাবে ট্রেনের টিকেট কাটবেন অনলাইনে।
কিভাবে অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটবেন?
অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার জন্য eticket.railway.gov.bd এই ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রথমে নিবন্ধন করতে হবে। নিবন্ধন সম্পূন্ন হলে লগইন করে প্রবেশ করে আপনার স্টেশন ও গন্তব্য অনুযায়ী নির্দিষ্ট তারিখ সিলেক্ট করে সার্চ করতে হবে।
সার্চ রেজাল্টে আপনার গন্তব্যে যাওয়া ট্রেনগুলোর লিস্ট দেখাবে। আপনার পছন্দের ট্রেনটি নির্বাচন করে আসন বাচাই করে টিকিট বুকিং কনফার্ম করতে হবে।
নিবন্ধন করার জন্য কি কি প্রয়োজন?
ই টিকিট রেলওয়ে নিবন্ধন করার জন্য নিম্ন তথ্যগুলো প্রয়োজন।যেমন-
** নাম
** ই-মেইল আইডি
** মোবাইল নাম্বার
** এনআইডি নাম্বার বা জন্ম সনদ নাম্বার
** ঠিকানা ইত্যাদি।
কিভাবে ই টিকেট একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করবেন?
প্রথমে যে কোন ইন্টারনেট ব্রাউজার ওপেন করে প্রবেশ করুন
Bangladesh Railway E-Ticketing Service ওয়েবসাইটে। সাইটের মেনু থেকে
Register বাটন ক্লিক করুন। নিচের মতো একটি ফরম ওপেন হবে। ফরমটি যথাযথ ভাবে পূরণ করে নিচে “SIGN UP” বাটন ক্লিক করুন।
এখানে উল্লেখ্য যে, ফরমে Identification Type এ NID কিংবা Birth Certificate নির্বাচন করে Identification Number ঘরে জন্ম সনদ নাম্বার বা ভোটার আইডি নাম্বার দিতে হবে। আপনার যদি ভোটার আইডি না থাকে তাহলে অনলাইন থেকে কিভাবে ডিজিটাল আইডি ডাউনলোড করবেন তা জানতে “
অনলাইনে ভোটার আইডি পাবেন কিভাবে?” ইনফোটি দেখুন।
আর বাংলাদেশ রেলওয়ের এই ই টিকেট সাইটটির এখনো বাংলা ভার্সন তৈরি হয় নাই। তাই তথ্য পূরণ করার সময় সকল তথ্য ইংরেজিতে পূরণ করে সাইন আপ করুন।
টিকেট সংগ্রহ করার নিয়ম
উপরের নিয়মে নিবন্ধন করার পর মোবাইল নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন। লগইন করার জন্য
এখানে ক্লিক করুন। নিচের মত লগইন পেজ ওপেন হলে লগইন করুন।
লগইন করার পর নিচের মত একটি ফরম পাবেন। এখানে চারটি ঘর দেখতে পাবেন। From ঘরে যে স্টেশন থেকে আপনি ট্রেনে উঠবেন সেই স্টেশনের নাম দিবেন, To এর ঘরে আপনার গন্তব্যের স্টেশন লিখবেন। Date of Journey ঘরে ভ্রমণের তারিখ দিয়ে Choose Class ঘরে সিটের ক্যাটাগরি নির্বাচন করবেন। এরপর নিচে FIND TICKET বাটনটি ক্লিক করবেন।
উপরের চিত্রের ন্যায় FIND TICKET বাটন ক্লিক করলে আপনার গন্তব্যে কোন কোন ট্রেন রয়েছে তার লিস্ট দেখাবে। এখানে ট্রেনের সিট পছন্দ করতে পারবেন। অর্থাৎ পছন্দ অনুযায়ী সিট ক্রয় করার সুযোগ পাবেন। জানালার পাশে সিট নিবেন নাকি সামনে কিংবা পিছনের সিট ক্রয় করবেন তা আপনার হাতেই নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
নিচের চিত্রটি দেখুন। প্রথমে ভিউ সিট অপশনে ক্লিক করে সিট বাছাই করতে হবে।
সিট বাচাই হয়ে গেলে নিচের দিকে CONTINUE PURCHASE বাটন ক্লিক করুন। পরবর্তী ধাপে চলে যাবেন। এখানে আপনার কিংবা যে ভ্রমণ করবেন তার তথ্য দিবেন। নিচের চিত্রটি দেখুন।
উপরের চিত্রটি লক্ষ করলে দেখবেন যতগুলো সিট বুকিং করেছেন তার লিস্ট দেখাচ্ছে। এখানে যাত্রীর নাম ও Passanger Type অর্থাৎ যাত্রী শিশু নাকি পূর্ণ বয়স্ক তা সিলেক্ট করে দিতে হবে।
মনে রাখবে, ভ্রমনকারী শিশু ৩ থেকে ১২ বছর বয়সী হলে Passanger Type Child সিলেক্ট করে দিবেন। Child সিলেক্ট করলে ভাড়া স্বয়ংক্রীয়ভাবে সমন্বয় অর্থাৎ কমে যাবে।
টিকেটের মূল্য পরিশোধ করবেন কিভাবে?
যত্রীর তথ্য দিয়ে পরবর্তী অপশনে আপনাকে পেমেন্ট পরিশোধ করতে হবে। পেমেন্ট পরিশোধ করার জন্য দুটি অপশন পাবেন।
Mobile Banking ও Debit/Credit Card পেমেন্ট অপশনের যেকোন একটি সিলেক্ট করে টিকেটের মূল্য পরিশোধ করতে পারেন।
পেমেন্ট অপশন Mobile Banking বেছে নিলে
বিকাশের মাধ্যমেই টিকেট মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। আর Debit/Credit Card বেছে নিলে যে কোন ব্যাংকের মাস্টার কার্ড কিংবা ভিসা কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট পরিশোধ করতে পারেন।
নিচের চিত্রটি লক্ষ করুন, এখানে মোবাইল ব্যাংকিং সিলেক্ট করে বিকাশের মাধ্যমে মূল্য পরিশোধ করা দেখানো হয়েছে।
এবার “Confirm Purchase” বাটন ক্লিক করুন।
অনলাইন থেকে ট্রেনের টিকেট ডাউনলোড করে প্রিন্ট করবেন কিভাবে?
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে অর্থাৎ সঠিকভাবে পেমেন্ট করার সাথে সাথেই Railway E Ticket System আপনার বাছাইকৃত টিকেট ইস্যু করবে এবং টিকিটটি ব্রাউজারে স্বয়ংক্রীয়ভাবে ডাউনলোড শুরু হবে।
আপনার বাংলাদেশ রেলওয়ে ই-টিকেট একাউন্টের প্রোফাইলের Purchase History থেকে আপনার ক্রয়কৃত সকল টিকেট দেখার পাশাপাশি ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
এছাড়াও টিকেট কনফার্ম করার সাথে সাথে টিকেটের একটি কপি আপনার মেইলে পাঠানো হয়। যদি এটি Inbox Folder না পান তাহলে, মেইলের SPAM Folder এ জমা হবে।
যে কোন পদ্ধতিটি ব্যবহার করে ট্রেনের টিকেট ডাউনলোড করে নিতে পারেন। ডাউনলোড করা টিকিটটি A4 সাইজের কাগজে প্রিন্ট করে নিয়ে ব্যবহার করুন।
মোবাইলে ট্রেনের
টিকেট কাটবেন কিভাবে?
উপরে অনলাইনে
যে আলোচনা করা হয়েছে তাতে কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপে কিভাবে ট্রেনের টিকেট কাটবেন তা
দেখানো হয়েছে। কিন্তু মোবাইলে কিভাবে ট্রেনের টিকেট কাটবেন তা জানা প্রয়োজন।
ট্রেনের টিকেট
কাটার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে ই-টিকেটিং সিস্টেম এখনো কোন মোবাইল অ্যাপ চালু করেনি। তাই
মোবাইলে টিকেট ক্রয় করতে হলে Google Chrome ব্রউজান ওপেন করে উপরের নিয়মে টিকেট সংগ্রহ
করতে হবে।
ক্রম ব্রাউজার
এজন্য ব্যবহার করবেন যে, মোবাইলে ক্রম ব্রাউজার খুব ভালভাবে কাজ করে। কম্পিউটার কিংবা
ল্যাপটপে যেভাবে ট্রেনের টিকেট কাটবেন ঠিক একইভাবে মোবাইলের ক্রম ব্রাউজার দিয়ে টিকিট
ক্রয় করতে পারবেন।
বিকাশ অ্যাপে
ট্রেনের টিকিট কাটবেন কিভাবে?
সরাসরি বিকাশ
অ্যাপ থেকে ট্রেনের টিকেট কাটার পদ্ধতি এখনো আপডেট হয়নি। তবে আশা করা হচ্ছে খুব শিগ্রই
বিকাশ অ্যাপ আপডেট করা হবে।
বিকাশে কিভাবে ট্রেনের টিকেট কাটবেন তা নিয়ে আমাদের সাইটে অন্য একটি ইনফো রয়েছে। সেটি দেখে নিতে পারেন।
বিকাশে ট্রেনের টিকেট ক্রয় করা হয় মূলত অনলাইন থেকে টিকেট ক্রয় করার মতোই। তাই উল্লেখিত নিয়মটি ভালভাবে জানা প্রয়োজন।
ট্রেনের টিকিট চেক করবেন কিভাবে?
আপনি যদি আপনার নিজের প্রোফাইল থেকে ট্রেনের টিকেট ক্রয় করেন তাহলে ক্রয়কৃত টিকেট ক্রয় করার প্রয়োজন নেই। তবে অন্যের দ্বার টিকেট ক্রয় করে নিলে ভ্রমনের আগে অবশ্যই টিকেটটি চেক করে নিবেন।
এছাড়াও চেক করে নিলে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন যে, টিকিট ক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন প্রকার প্রতারিত হননি।
ট্রেনের টিকেট চেক করার জন্য ই টিকিটিং সাইটে রেজিস্ট্রেশনের প্রয়োজন নেই। সরাসরি সাইটে ভিজিট করে মেনু থেকে "Verify Ticket" বাটন ক্লিক করে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে চেক করতে পারেন আপনার ক্রয়কৃত ট্রেনের টিকেট।
অনলাইনে টিকেট চেক করার জন্য ভিজিট করুন - eticket.railway.gov.bd এই সাইটে। এরপর সাইটের উপরের ডান পাশে থেকে "Verify Ticket" মেনু ক্রিক করুন। একটি ফরম ওপেন হবে, এখানে মোবাইল নাম্বার এবং টিকেটের উপরের অংশের PNR Number টি দিয়ে ভেরিফাই টিকেট বাটন ক্লিক করুন।
টিকেট সঠিক হলে টিকেট ভেরিফািইড টিক চিহ্ন দেখাবে এবং নিচে Thank you for your purchase মেসেজ দেখাবে। ভুল হলে ক্রস চিহ্ন দেখাবে। নিচের চিত্রটি দেখুন।
ট্রেনের টিকিট মূল্য কমবেশি কেন?
সাধারণত টেনের টিকিট ক্রয় করার সময় সিট বাছাইয়ের জন্য ভাড়ার মূল্য কমবেশি হয়ে থাকে। যেমন- চেয়ার সিটের মূল্য সাধারণ (শোভন) সিটের মূল্যের চেয়ে কিছুটা বেশি। আবার এসি সিটের জন্য আরো মূল্য বেশি দিতে হয়।
এছাড়াও যাত্রীর ধরণ অনুযায়ী সিটের মূল্য কমবেশি হতে পারে। যেমন- পূর্ণ বয়স্কদের জন্য সিটের মূল্য কিছুটা বেশি হয় শিশুদের সিটের মূল্য থেকে।
ক্রয়করা ট্রেনের টিকিট ফেরত দিবেন কিভাবে?
অনেকেই অনেক আগে ট্রেনের টিকেট ক্রয় করে থাকেন। কিন্তু ভ্রমনের দিন যে কোন অনাকাঙ্খিত করণে ভ্রমণ বাতিল করতে হয়। সেই ক্ষেত্রে ক্রয় করার টিকেট ফেরত দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। কিভাবে টিকিট ফেরত দিবেন বা ট্রেনের টিকেট ফেরত দেওয়ার নিয়ম কি জানুন।
টিকিট ফেরত দেওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই আপনাকে স্টেশন কাউন্টারে যেতে হবে। আর টিকেট ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্রে নিম্নহারে চার্জ কাটা হবে।
** আপনি যদি ৪৮ ঘন্টার আগে টিকিট ফেরত দেন, তাহলে এসি ক্লাসের জন্য ৪০ টাকা, প্রথম শ্রেণির জন্য ৩০ টাকা এবং অন্যান্য শ্রেণির জন্য ২৫ টাকা সার্ভিস চার্জ সহ কর্তন করা হবে।
** টিকিট ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্র যদি ৪৮ ঘন্টার কম এবং ২৪ ঘন্টার বেশি হয়, তাহলে ভাড়ার ২৫% কর্তন করা হবে।
** টিকিট ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্র যদি ২৪ ঘন্টার কম এবং ১২ ঘন্টার বেশি হয়, তাহলে ভাড়ার ৫০% কর্তন করা হবে।
** টিকিট ফেরত দেওয়ার ক্ষেত্র যদি ১২ ঘন্টার কম এবং ৬ ঘন্টার বেশি হয়, তাহলে ভাড়ার ৭৫% কর্তন করা হবে।
** ছয় ঘন্টার কম সময়ের কোন ফেরত নেই।
** অনলাইনে ক্রয়ের জন্য সার্ভিস চার্জ ফেতর দেওয়া হয় না। তাই সার্ভস চার্জ ও উল্লেখিত শর্ত অনুযায়ী ফেরত দেওয়া টিকিটের মূল্য কর্তন করে বাকী টাকা আপনাকে ফেরত দিবে।